প্রতিদিন বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার রোজাদার বিমানে সফর করেন। আকাশপথে সফরকালে তারা বিশেষত, সেহরি-ইফতারের সময় নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। যে দেশ থেকেই সফর শুরু হয়, এক সময় দেখা যায়, সে দেশের সময় অনুযায়ী সূর্যাস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বিমান ভূপৃষ্ঠ থেকে কয়েক হাজার ফিট উপরে থাকায় স্পষ্টভাবেই সূর্য দেখা যায়।
বিশেষ করে বিমান যখন পূর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে যেতে থাকে। যেমন- কেউ বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বিমানে উঠল। এক্ষেত্রে বিমান যেহেতু পশ্চিম দিকে যাচ্ছে, তাই দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা সূর্য চোখের সামনে থাকে। অথচ বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী সূর্যাস্ত হয়ে গেছে অনেক আগেই।
এক্ষেত্রে বিমানের যাত্রীদের যদি সূর্যাস্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়, তাহলে দেখা যায়- কখনো কখনো রোজার সময় প্রলম্বিত হয়ে ২০-২২ ঘণ্টাও হয়ে যায়। এক্ষেত্রে করণীয় কী; বিমানযাত্রী কি ২০-২২ ঘণ্টা না খেয়ে রোজা রাখবে নাকি অন্য কোনো সুযোগ আছে?
এক্ষেত্রে প্রথম উত্তর হলো- ‘হ্যাঁ’, বিমানের যাত্রীরা নিজেরা যখন সূর্যাস্ত হতে দেখবেন, তখনই ইফতার করবেন। বিদেশের আকাশে থেকে বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী ইফতার করা যাবে না এবং যে এলাকার আকাশের উপর বিমান আছে সেখানের স্থলভাগের হিসেবেও নয়। এক্ষেত্রে যদি রোজা ২০-২২ ঘণ্টারও হয়ে যায়, তবুও সূর্যাস্ত না দেখে ইফতার করা যাবে না।
তবে হ্যাঁ, কোনো ব্যক্তির যদি ওই অবস্থায় রোজা পূর্ণ করতে গেলে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে, তাহলে তিনি রোজা ভেঙে ফেলতে পারবেন এবং পরে এ রোজার কাযা আদায় করে নেবেন।
আর যে বিষয়টি এখানে উল্লেখযোগ্য, তা হলো- ইসলাম মুসাফিরের জন্য রোজা না রাখার সুযোগ রেখেছে। সেক্ষেত্রে কারো সফর অবস্থায় যদি সুবহে সাদিক শুরু হয়; মানে রাতের শেষ ভাগে যদি কেউ সফরে থাকে, তাহলে শুরু থেকেই তার জন্য রোজা না রাখার সুযোগ রয়েছে। পরবর্তী সময়ে তিনি এর কাযা আদায় করে নেবেন।
তথ্যসূত্র : বাদায়েউস সানায়ে ২/২২৫, রদ্দুল মুহতার ২/৪২০, আল-মাবসূত, সারাখসী ৩/৯১ ও অন্যান্য
বিএইচ/