Logo

ধর্ম

পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত। পারা-১৪

Icon

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১৬:০১

পবিত্র কোরআনের ১১৪টি সুরাকে ৩০ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। পরিভাষায় যেগুলোকে পারা বলা হয়। মাহে রমজানে বাংলাদেশের খবরের পাঠক-শ্রোতাদের দিনে এক পারা করে তিলাওয়াত উপহার দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ। তিলাওয়াত করেছেন রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত মাদরাসাতুল মারওয়াহর প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম হাফেজ মাওলানা কারী মাঈনুদ্দীন ওয়াদুদ। 

শনিবার (১৪ রমজান, ১৫ মার্চ) রইল ১৪তম পারার তিলাওয়াত। আজকের তিলাওয়াতে রয়েছে সুরা হিজর ও সুরা নাহল। 

সুরা নাহলের সারমর্ম
সুরা নাহল পবিত্র কোরআনের ১৬তম সুরা। এ সুরায় মোট ১২৮টি আয়াত ও ১৬টি রুকু রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ৪০ আয়াত মহানবী (সা.)-এর মক্কিজীবনের শেষ দিকে এবং বাকি ৮৮ আয়াত মদিনার জীবনে অবতীর্ণ হয়। এই সুরার ৬৮-৬৯ নম্বর আয়াতে মৌমাছি সম্পর্কে আলোচনা রয়েছে। রয়েছে মধুর উপকারিতার কথা।

তাই নাহল বা মৌমাছি নামে এর নামকরণ হয়েছে। আল্লামা কুরতুবি (রহ.) লিখেছেন, এ সুরার অন্য নাম ‘সুরাতুন নিআম’। ‘নিআম’ অর্থ নিয়ামতরাজি। এই নামে এ সুরার নামকরণের কারণ হলো, এ সুরায় মানুষের ওপর আল্লাহ প্রদত্ত অসংখ্য নিয়ামতের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

কোরআনের প্রতিটি আয়াত ও সুরার মধ্যে সামঞ্জস্য ও নিবিড় সম্পর্ক থাকে। এটা কোরআনের স্বাতন্ত্র্য রীতি। সে ধারাবাহিকতায় এ সুরার সঙ্গে আগের সুরারও নিবিড় সংযোগ আছে। আগের সুরার শেষ আয়াতে মৃত্যুর প্রসঙ্গ আছে। আলোচ্য সুরার প্রথম আয়াতে কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা আছে। উভয়ের মধ্যে রয়েছে সুসম্পর্ক। কেননা মৃত্যুর পর থেকেই কিয়ামতের জীবন বা পরকালের জীবন শুরু হয়ে যায়।

উভয় সুরার মধ্যে অন্য আরেকটি দিক থেকে সামঞ্জস্য আছে। আগের সুরার শেষের দিকে ৯২ নম্বর আয়াতে পরকালীন জবাবদিহির কথা বলা হয়েছে। আলোচ্য সুরার সূচনায়ও একই বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে।

এ সুরার কেন্দ্রীয় আলোচনা শিরক, তাওহিদ ও নবীদের দাওয়াত ঘিরে। এখানে শিরকের অসারতা তুলে ধরা হয়েছে। আল্লাহর একত্ববাদ সপ্রমাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি নবীদের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করার অশুভ পরিণতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আল্লামা ওহাবা জুহাইলি (রহ.) লিখেছেন, এ সুরায় ইসলামের মৌলিক আকিদা ও বিশ্বাস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে আল্লাহর উপাস্য হওয়া, তাঁর একক সত্তা ও পুনরুত্থান বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। শুরুতেই রয়েছে পরকাল প্রসঙ্গ। নবীর মুখে আজাবের কথা শুনে উপহাসচ্ছলে মক্কার কাফিররা দ্রুত আজাব কামনা করেছিল। এ বিষয়ে আলোচ্য আয়াত নাজিল হয়।

এরপর অহি বা আসমানি প্রত্যাদেশ বিষয়ে আলোচনা রয়েছে। তারপর আসমান ও জমিনে ছড়িয়ে থাকা আল্লাহর নিয়ামতরাজির কথা তুলে ধরে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। এ সুরার মাঝামাঝি কোরআনের সর্বাধিক অর্থপূর্ণ আয়াতগুলোর একটি আয়াত উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতি জুমার খুতবায় খতিবরা সে আয়াত পাঠ করেন। সে আয়াতে ন্যায়পরায়ণতা, পরোপকার ও আত্মীয়স্বজনের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হতে বলা হয়েছে। পাপ-পঙ্কিলতা ও অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওয়াদা ও অঙ্গীকার পূরণ করতে বলা হয়েছে এবং দায়িত্ব ও কর্তব্যপরায়ণ হতে বলা হয়েছে। এরপর কোরআন পাঠের কিছু রীতিনীতি তুলে ধরা হয়েছে। কোরআন পাঠের আগে ‘আউজু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম’ পাঠ করতে বলা হয়েছে। পরে কোরআন আল্লাহর পবিত্র কালাম হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এ সুরায় কিছু উদাহরণও টেনে আনা হয়েছে, যেগুলো আল্লাহর একত্ববাদ অনুধাবনে সহায়ক এবং শিরকের অসারতা নির্ণায়ক। সুরার শেষের দিকে বিভিন্ন জীবজন্তুর কথা তুলে ধরে সেগুলোর হালাল-হারামের বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। সুরাটির শেষ রুকুতে হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর প্রসঙ্গ টেনে আনা হয়েছে। কেননা তিনি ছিলেন বিশুদ্ধ একত্ববাদের অন্যতম প্রবক্তা। সুরার একেবারে শেষ কয়েকটি আয়াতে আল্লাহর পথে মানুষকে আহ্বান করার মূলনীতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ডিআর/বিএইচ

পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত

আরও পড়ুন
Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর