বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
দরিদ্র মানুষ ও দুস্থ নারীদের চাল-গমের সহায়তা কমেছে

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ১০:২৮

মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যা
এনসিপি-জামায়াত চায় বিচার, বিএনপি চায় আগে নির্বাচন
বাংলাদেশের খবর প্রধান প্রতিবেদন করেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জুলাই গণ হত্যার বিচার চলছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ৭ মাস পরও ধরা পড়েনি জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যা-নির্যাতনে জড়িত বেশির ভাগ আসামি। এরমধ্যে নির্বাচন ইস্যুতে চাপ বাড়ছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনের আগেই বিচার কাজ শেষ করার দাবি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামীর। তবে বিএনপির দাবি আগে জাতীয় নির্বাচন।
কারণ, দীর্ঘমেয়াদি বিচার প্রক্রিয়ার জন্য নির্বাচনে দেরি করা যুক্তিসঙ্গত নয়। এদিকে এত দিনেও বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় হতাশ হতাহতদের পরিবার। জুলাই অভ্যুত্থানে মোহাম্মদপুরে নিহত মাহমুদুর রহমান সৈকতের মা ছেলের স্মৃতি হাতড়ে বলেন, আমার মন চায় যখন, ছবি-টবি দেখি। মনে হয় ছেলেটাকে ধরে নিয়ে আসি। মনে হয় ও এখানেই কোথাও আছে।
কেন দেরি হচ্ছে- প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন; কেন দেরি হচ্ছে, এটা নিয়ে আমারও প্রশ্ন। দেরি হবেই বা কেন?
গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রায় আড়াই মাস পর, ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গণঅভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ শাসনামলে সংঘটিত গুম, খুন, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে এই ট্রাইব্যুনালে। যদিও এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয় সূত্র বলছে, গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যা ও গণহত্যা এবং আওয়ামী লীগের বিগত সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এ পর্যন্ত ৩০০টির মতো অভিযোগ এসেছে। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে ট্রাইব্যুনালে ১৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলা হয়েছে গুমের ঘটনায়। বাকি ১৩টি মামলা হয়েছে গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়। ১৬ মামলার মধ্যে ২টিতে আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা একটি কঠিন প্রক্রিয়া। তাই এ বিষয়ে কাউকে চাপ না দিতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার ট্রাইব্যুনালে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
দরিদ্র মানুষ ও দুস্থ নারীদের চাল-গমের সহায়তা কমেছে
প্রথম আলো প্রধান প্রতিবেদন করেছে, বাজারে চালের দাম চড়া। ভালো মানের এক কেজি মোটা চাল কিনতে লাগছে ৫৫ টাকা। সরু চালের দাম অনেক বেশি। এ চড়া দামের মধ্যেই সরকারিভাবে চাল বিতরণ কমেছে। কমেছে গমের বিতরণও।
বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা ও গরিব মানুষকে সহায়তার ক্ষেত্রে সরকারি খাদ্যশস্য বিতরণকে গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারিভাবে চাল ও গম বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ১৭ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ২০ শতাংশ কম।
পরিমাণের দিক দিয়ে চাল ও গমের বিতরণ কমেছে প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার টন। চালের বিতরণ কমেছে প্রায় ১ লাখ ৮৫ হাজার টন। অন্যদিকে গম ও আটার বিতরণ কমেছে প্রায় ৩৮ হাজার টন।
বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, দরিদ্র মানুষ, খাদ্যসংকটের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠী ও দুস্থ নারীদের সহায়তা এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টির মতো খাতগুলোতে খাদ্য বিতরণ কমে গেছে।
জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সরকারি দপ্তরগুলো খাদ্য অধিদপ্তরের কাছ থেকে চাল নিয়ে বিতরণ করা কমিয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের বেশির ভাগ পলাতক। ফলে তাদের মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমে গেছে। সব মিলিয়ে খাদ্য বিতরণ কমেছে। তিনি আরও বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী মাস থেকে দেড় লাখ টন চাল বিতরণ শুরু হবে। তখন বিতরণের পরিমাণ বাড়বে।
অবশ্য খাদ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সূত্র বলছে, বিতরণ কমে যাওয়ার কারণ শুধু রাজনৈতিক পটপরিবর্তন নয়। সরকারিভাবে চালের মজুতও কম। এ কারণে খোলাবাজারে বিক্রি বা ওএমএস কর্মসূচির আওতায় চাল ও আটার বিতরণ বাড়ানো সম্ভব হয়নি। ওএমএস কর্মসূচি খাদ্য অধিদপ্তর পরিচালনা করে। যেসব জায়গায় ওএমএসের ট্রাক বা দোকান থাকে, সেখানে দীর্ঘ লাইন ধরে মানুষ চাল ও আটা কেনেন।
দিল্লির কোথায় আছেন হাসিনা
আমার দেশ প্রধান প্রতিবেদন করেছে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা দিল্লির কোথায় থাকছেন, তা জানতে আমার দেশ-এর নয়াদিল্লি প্রতিনিধি বিশেষ অনুসন্ধান চালিয়েছেন। এতে জানা গেছে, নয়াদিল্লির অভিজাত লুটিয়েন্স বাংলো জোনের একটি সুরক্ষিত বাড়িতে তাকে রাখা হয়েছে।
তথ্য-প্রমাণে জানা গেছে, ওই বাংলোর ঠিকানা ১১ রাজাজি মার্গ। শেখ হাসিনার এই বাংলোর ঠিকানা ভারত সরকার গোপন রেখেছে। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, শেখ হাসিনার এখানে থাকার বিষয়টি দেখভাল করছেন ভারতের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল।
হাসিনা এখন যেখানে থাকছেন বলে মনে করা হচ্ছে, তার পাশেই ১০ রাজাজি মার্গকে অবসরকালীন বাংলো হিসেবে ব্যবহার করতেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি। এই বাংলোতে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম ২০১৫ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিলেন। এখন সেখানে থাকেন কংগ্রেস সভাপতি ও সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে। সন্দেহজনক বিষয় হচ্ছে, এই বাংলোর আশপাশে অসংখ্য নারী পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষী দেখা যাচ্ছে। দিল্লির লুটিয়েন্স এলাকায় এমপি, মন্ত্রী, বিচারপতিরাই থাকেন। খুবই পশ এলাকা। মনে করা হচ্ছে, সেখানেই শেখ হাসিনা রয়েছেন ‘র’-এর তত্ত্বাবধানে।
লুটিয়েন্স দিল্লি হলো নয়াদিল্লির একটি অভিজাত এলাকা। ব্রিটিশ স্থপতি এডউইন লুটিয়েন্সের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান নিউজ পেপার সোসাইটির সিনিয়র এক সাংবাদিক (যিনি বাংলাদেশ কাভার করেন) নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, রাজাজি মার্গে ব্যাপক নিরাপত্তা। আগের চেয়ে কড়াকড়ি বেড়েছে। তবে কেউই নিশ্চিত নয় যে হাসিনাকে কোথায় রেখেছে ভারত সরকার।
বিষয়টি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল দেখভাল করছেন বলে জানা যাচ্ছে। ১০ ও ১১ রাজাজি মার্গের কোনো একটি বাংলোয় হাসিনাকে রাখা হয়েছে, এমন অনুমান উড়িয়ে দেওয়ার নয়। কারণ এর উল্টোদিকে আর্মির ‘কাশ্মীর হাউস’, দুই পাশে আর্মির বিভাগীয় হেডকোয়ার্টার্স। জবরদস্ত নিরাপত্তা। কোনো মাছিও এই নিরাপত্তা বলয় ভেঙে শেখ হাসিনার কাছে যেতে পারবে না। ছবি তোলাও নিষেধ।
এখন সন্দেহ ১০ ও ১১ রাজাজি মার্গের বাড়ি নিয়ে। এই রাস্তায় যে কটি বাংলো রয়েছে, তাতে ব্রিটিশ হাইকমিশনার, দু’জন বিচারপতি এবং মল্লিকার্জুন খাড়গে থাকেন। আর রয়েছে আর্মির কয়েকটি বিভাগীয় হেডকোয়ার্টার্স। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, ১০ রাজাজি মার্গের বাইরে খাড়গের নেমপ্লেট থাকলেও ১১ রাজাজি মার্গের বাড়িটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই প্রতিবেদক তন্নতন্ন করে খোঁজ করেন রাস্তার দুই ধারে। কিন্তু ১১ রাজাজি মার্গের বাংলোর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ১২ রাজাজি মার্গে রয়েছে আর্মির দপ্তর। মাঝে ১১ নম্বর বাড়িটি থাকার কথা। কিন্তু সেটি উধাও!
সেনাবাহিনী ও খাড়গের বাড়ির সিকিউরিটিদের ১১ নম্বর রাজাজি মার্গের বাংলোটি কোথায় জিজ্ঞাসা করলে কেউই জবাব দিতে চাননি। তারা সরাসরি এড়িয়ে যান। বলেন. ১১ নম্বর রাজাজি মার্গের বাড়িটি কোথায় আমরা জানি না।
একটি বিখ্যাত রাস্তার আস্ত একটি ঠিকানা লাপাত্তা কেন? প্রশ্ন উঠতেই পারে। ১১ নম্বর রাজাজি মার্গ গুগল ম্যাপে সার্চ দিলে কিন্তু দেখাচ্ছে খাড়গের ১০ নম্বর বাড়িটির পেছনেই। পেছনে গিয়ে সেটি আর দেখা যাচ্ছে না। তাহলে কি আর্মি দপ্তর ও খাড়গের বাড়ির মাঝখানেই ক্যামোফ্লেজ করে রাখা হয়েছে ১১ নম্বর রাজাজি মার্গের বাড়িটি? নতুন করে ফেন্সিং করে আর্মি দপ্তর ও ১১ রাজাজি মার্গের বাড়িটিকে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে! কেননা গুগল ম্যাপে ঠিকই দেখাচ্ছে ১০ ও ১২ রাজাজি মার্গের মাঝে ১১ রাজাজি মার্গ রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে উধাও।
যেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে অর্থনীতি
বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রধান প্রতিবেদন করেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি গতিশীল করার জন্য বেসরকারি খাতে আর্থিক সহায়তা ও বিশেষ প্রণোদনা প্রয়োজন। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামষ্টিক অর্থনীতির অস্থিতিশীলতা মোকাবিলা করার জন্য বেসরকারি খাতকে সহায়তা করার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তারা বলেন, তিনভাবে বেসরকারি খাতকে সহায়তা করা যেতে পারে। সেগুলো হলো- আর্থিক সহায়তা, আর্থিক প্রণোদনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, আর্থিক সহায়তার আওতায় বেসরকারি খাতকে স্বল্প সুদে ঋণ অথবা গ্যারান্টি প্রদান করা হলে বাজারে নগদ টাকার সরবরাহ বাড়বে এবং বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি হবে। ঋণ পরিশোধেও সুবিধাজনক সময় দেওয়ার পাশাপাশি ডাউন পেমেন্ট ছাড়া অথবা সর্বনিম্ন ডাউন পেমেন্টে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠনের ব্যবস্থা করা হলে বেসরকারি কোম্পানিগুলো ঘুরে দাঁড়াবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত হবে।
দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক মানের উদারনীতির প্রবর্তন করতে হবে। আন্তর্জাতিক মানের ব্যাংকিং চর্চায় কম জামানতের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা, আমদানিতে কম বিধিনিষেধ আরোপ, ঋণের মধ্যম বাজার ইত্যাদি চালু করা গেলে বেসরকারি খাত এবং ব্যাংক খাত উভয় ক্ষেত্রেই উপকৃত হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি করতে উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। এজন্য অপরিহার্য পণ্য, কাঁচামাল এবং জ্বালানি আমদানিতে ভর্তুকি প্রদান করতে হবে।
অনেক প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনুদান দেওয়া হলে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারে এবং এ প্রক্রিয়ায় আমদানিনির্ভরতা, মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদি হ্রাস করতে পারে। আর্থিক প্রণোদনার আওতায় সহায়তার বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের জন্য সাময়িকভাবে করছাড় ও অব্যাহতি প্রদান করা হলে ব্যবসার ওপর আর্থিক বোঝা কমবে এবং বিনিয়োগ উৎসাহিত হবে। উৎপাদন এবং প্রযুক্তি খাতের মতো নির্দিষ্ট খাতকে সর্বনিম্ন করপোরেট ট্যাক্স সুবিধা দেওয়া হলে প্রবৃদ্ধি এবং বিদেশি বিনিয়োগ বাড়তে পারে। প্রধান শিল্প খাতের জন্য সাময়িক করছাড় বা কর অব্যাহতি সুবিধা ব্যবসার ওপর আর্থিক বোঝা কমাতে এবং বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে। উৎপাদন এবং প্রযুক্তির মতো নির্দিষ্ট খাতের জন্য করপোরেট করহার কমানো প্রবৃদ্ধিকে উজ্জীবিত এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারে।
মূলধন বিনিয়োগ এবং গবেষণা এবং উন্নয়নের জন্য ট্যাক্স ক্রেডিট প্রদান উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণকে উৎসাহিত করতে পারে। অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করতে এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারে। এ বিষয়ে পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাশরুর রিয়াজ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উল্লিখিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশের মুদ্রানীতি আরও কঠোরভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ধীরে ধীরে রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ ধরে রেখে রিজার্ভকে শক্তিশালী করতে হবে।
সম্পদ বেচে দিচ্ছে ওসমান পরিবার
কালের কণ্ঠ প্রধান প্রতিবেদন করেছে, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবার। মুদ্রার মতো এর এক পিঠে সমৃদ্ধ রাজনৈতিক ইতিহাস-ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের নানা গল্পগাথা। অন্য পিঠে প্রভাব-প্রতিপত্তি, সন্ত্রাস, পেশিশক্তি, গডফাদার তকমাসহ নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ গড়ার দুর্নামও। ভালো-মন্দের এই মেলবন্ধন ঘটানো আলোচিত এই পরিবারের প্রভাবে তাদের বিরুদ্ধে একসময় কেউ ‘রা’ পর্যন্ত করার সাহস পেত না।
অথচ গত ৫ আগস্টের ক্ষমতার পালাবদলের পর ওই পরিবারটির দর্প প্রায় চূর্ণ। পরিবারের সদস্য সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান ও প্রয়াত নাসিম ওসমানের নাম শুনলে একদা যে শহরে ‘কাঁপন’ ধরত, সেখানে এখন রাজ্যের নীরবতা। দুই ভাই ও তাদের পরিবারের সদস্যরা সব লাপাত্তা। তাঁদের বাপ-দাদার রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও স্মৃতিময় ঐতিহাসিক বাড়িগুলো এখন সুনসান, জীর্ণ।
তার চেয়েও বড় খবর একে একে ওসমান পরিবারের বাড়িঘর-সহায়সম্পদ সব বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সেলিম ওসমানের প্রায় অর্ধ কোটি টাকার দুটি বহুতলবিশিষ্ট বাড়ি বিক্রি হয়ে গেছে। আরো বিক্রির গুঞ্জন এখন শহরজুড়ে। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুরো নারায়ণগঞ্জে ওসমান পরিবার ঘিরে ভিন্ন এক বার্তা পাওয়া যায়। সবার মধ্যেই ফিসফাস, কানাকানি। সবারই কথা—ওসমান পরিবারের দৌরাত্ম্য শেষ হয়েছে। তাঁদের কারো টিকিটিও এখন আর দেখা যাচ্ছে না। শুধু তা-ই নয়, তারা এখন সহায়সম্পদ সব গোটাচ্ছেন।
পরে খোঁজখবর নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য কানে আসে। ওসমান পরিবার বাড়িঘর বিক্রি করে চলে যাচ্ছে!
নারায়ণগঞ্জের ‘ধনকুবের’ হিসেবে পরিচিত ফকির অ্যাপারেলসের মালিক ফকির মনিরুজ্জামান এরই মধ্যে ওসমান পরিবারের সদস্য ও সাবেক এমপি সেলিম ওসমানের দুটি বাড়ি কিনে নিয়েছেন বলে জানা যায়। ফকির গ্রুপ বাড়িগুলোর দাম কত তা জানাতে অপারগতা জানালেও স্থানীয়রা জানায়, বাড়ি দুটির দাম অর্ধ কোটি টাকার কম হবে না।
গত সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের উত্তর চাষাঢ়ায় রামবাবুর পুকুরপারে সরেজমিনে গিয়ে সেলিম ওসমানের মালিকানাধীন পাশাপাশি দুটি আলিশান বহুতল ভবনের প্রধান ফটকে মালিকানা পরিবর্তনের দুটি নামফলক দেখা যায়। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘ক্রয়সূত্রে এই বাড়ির মালিক ফকির অ্যাপারেলস লিমিটেড, বিসিক।’
উপস্থিত স্থানীয় লোকজন জানায়, দুটি বাড়িতে এখন ভাড়াটিয়ারা বসবাস করছেন। গেটে প্রহরারত একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, গত ৫ আগস্টের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই দুটি বাড়ি ভাঙচুর করতে এলেও বাড়ির মূল গেটে মালিকানা পরিবর্তনের নামফলক দেখে হামলা ও ভাঙচুর না করে ফিরে যায়। তবে বাড়ি দুটি ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পরে কিনেছেন বলে প্রচার থাকলেও ফকির গ্রুপ তার আগেই কেনা হয়েছে বলে স্বীকার করেছে।
রাজনৈতিক দলের কোর্টে এখন ‘সংস্কারের বল’
সমকাল প্রধান প্রতিবেদন করেছে, ছয় সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে মতামত জানাতে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে ‘একমত’, ‘আংশিক একমত’ এবং ‘ভিন্নমত’– এই তিনটি প্রশ্ন রয়েছে। সংস্কার বাস্তবায়নে পাঁচ বিকল্প দিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। বিকল্পগুলো হলো– নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে, নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে, নির্বাচনের সময়ে গণভোটের মাধ্যমে, গণপরিষদের মাধ্যমে এবং নির্বাচনের পর সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে। ঐকমত্য কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্র সমকালকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে গত কয়েক দিনে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুদক, জনপ্রশাসন এবং পুলিশ সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদন একীভূত করে দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার কমিশনের যেসব সুপারিশে একমত হবে, সেগুলোর ভিত্তিতে হবে জুলাই চার্টার বা সনদ। দলগুলো একমত হলে পুলিশ, দুদক, জনপ্রশাসনসহ যেসব বিষয়ে সাংবিধানিক প্রশ্ন নেই, সেগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংস্কার করবে সরকার। সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচন ব্যবস্থাসহ যেসব বিষয়ে সাংবিধানিক প্রশ্ন রয়েছে, সেগুলো গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার করা যায় কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে। আগামী সংসদ নির্বাচনের সঙ্গেই গণভোট করা যায় কিনা, এ বিকল্পও রাখা হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে। দলগুলো একমত হলে নির্বাচনের পর আগামী সংসদেও সংস্কার হতে পারে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের নেতারা গণভোট ও গণপরিষদের কথা বললেও বিএনপি এর ঘোর বিরোধী। একে নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। তারা দ্রুত সংসদ নির্বাচন চায়। তবে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দলের নেতারা তাড়াহুড়া নয়, টেকসই সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার সমকালকে বলেন, বুধবার মতামত চেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি বিকল্প দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, কোন প্রক্রিয়ায় সংস্কার চায় তারা। আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
যদিও কয়েকটি দলের অভিযোগ, তারা ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পুরোটা পায়নি। কোনো কোনো দল আংশিক পেয়েছে। একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, ২৫৪টি প্রস্তাব রয়েছে প্রতিবেদনগুলোতে। প্রতি প্রস্তাবের সঙ্গে তিনটি করে প্রশ্ন করেছে। একমত এবং আংশিক একমত হলে ‘টিক’ দিতে বলা হয়েছে। ভিন্নমত থাকলে তা বিস্তারিত লিখে সরকারকে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে গত ১২ ফেব্রুয়ারি ছয় মাসমেয়াদি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ কমিশনের সহসভাপতি। নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুদক, জনপ্রশাসন এবং পুলিশ সংস্কারবিষয়ক কমিশনের প্রধানরা ঐকমত্য কমিশনের সদস্য।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ কমিশন ২৭টি রাজনৈতিক দল এবং জোটের ১০০ প্রতিনিধির সঙ্গে প্রথম বৈঠক করে।
এতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামত চাওয়া হবে। এরপর দলগুলোর সঙ্গে আলাদা বৈঠকে বসবে কমিশন। পরে আবার সব দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে বৈঠক হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির বৈঠকে সরকারপ্রধান বলেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। কোনো দল যদি একটি সংস্কার প্রস্তাবেও একমত না হয়, তাতেও অসুবিধা নেই। কোন দল কতটি প্রস্তাবে একমত হয়েছে, তা জানিয়ে দেওয়া হবে। ভিন্নমত থাকলে তা জানাতে পারবে কমিশনকে। কমিশন তা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করবে।
১৫ ফেব্রুয়ারির বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটি (জানাক) এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া দুই সংগঠনের নেতারা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে দল গঠন করেছেন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি।
এ দলও সংস্কারের সুপারিশমালায় মতামত জানাতে চিঠি পেয়েছে। দলটি সংসদের আগে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি তুলেছে। গণপরিষদে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বলছে। এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শামরিন সমকালকে বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের প্রস্তাব করা হবে।
কোন দল কী মতামত জানাবে– এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল জানিয়েছে, নির্বাচন ব্যাহত বা বিলম্বিত হতে পারে– এমন সংস্কার প্রস্তাবকে সমর্থন করা হবে না। আগামী ডিসেম্বরেই নির্বাচন হতে হবে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনের জন্য অত্যাবশকীয় সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। যেসব সুপারিশ নির্বাচনের পরে বাস্তবায়ন সম্ভব, সেগুলো আলাদা করা হবে। রাজনৈতিক নেতারা জানিয়েছেন, সংস্কারের সুপারিশ পর্যালোচনা করে মতামত তৈরি করা হবে। দলীয় নেতার বাইরে বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বিএনপি নেতারা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের রাষ্ট্র সংস্কারে ছয় সংস্কার কমিশন গঠনের আদলে দলীয়ভাবে ছয়টি কমিটি গঠন করে। এই কমিটিগুলো অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার পর কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে মতামত তৈরি করা হচ্ছে। বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
সর্বত্র এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি
নতুন আতঙ্কের নাম 'মব জাস্টিস'
যুগান্তর প্রধান প্রতিবেদন করেছে, ‘মব জাস্টিস’ এখন নতুন এক আতঙ্কের নাম। সংঘবদ্ধ কিছু মানুষের নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার প্রবণতাকে অপরাধ বিজ্ঞানের ভাষায় ‘মব জাস্টিস’ বলা হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে এই মব জাস্টিসের নামে কাউকে গণপিটুনি দেওয়া হচ্ছে। যখন-তখন কারও বাড়িতে ঢুকে লুটপাট করা হচ্ছে। কাউকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে। কোথাও আবার কাউকে পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনিক কাউকে জুতার মালা পরিয়ে কান ধরে উঠবস করানো হচ্ছে। বেড়েছে দলবদ্ধ হয়ে বিচারবহির্ভূতভাবে কাউকে হত্যা করার ঘটনাও। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। মব জাস্টিসের শিকার হচ্ছেন রাজনীতিবিদ, পুলিশ, শিক্ষক, আইনজীবী, চিকিৎসক থেকে শুরু করে চোর-ডাকাত-ছিনতাইকারীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সর্বত্র এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় তাৎক্ষণিক এবং দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক পাড়ায়-মহল্লায় টহল বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর বিগত কয়েক মাসে মব জাস্টিসের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। বিভিন্ন স্থানে ঘটা এ ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা প্রতিরোধে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ক্রমাগত হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের কারণে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম না হলে রাষ্ট্র ও সরকারের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা আছে। এভাবে মব জাস্টিস বেড়ে যাওয়ার পিছনে বিগত সরকারের কর্তৃত্ববাদী শাসন বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। গত দেড় দশকে জনমানসে যে ব্যাপক মাত্রার ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, বর্তমানের ঘটনাগুলো এরই বহিঃপ্রকাশ।
তাদের আরও অভিমত-তবে বাংলাদেশে এভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা আগেও দেখা গেছে। তবে সেটা কথিত চোর-ডাকাতকে পিটুনি দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এবার পুলিশ, শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা কর্মকর্তাদের জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা, মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া, আদালত এলাকায় আসামিদের ওপর হামলা, আবার কোথাও কোথাও পিটিয়ে, কুপিয়ে হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়াও হামলা এবং ভাঙচুর হয়েছে ভাস্কর্য, মাজার, স্থাপনা ও শিল্প-কারখানায়। এ ধরনের ঘটনা ছাত্র-জনতার গোটা গণ-অভ্যুত্থানকেই ব্যর্থ করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং বেড়েই চলছে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার লাগামহীন সংস্কৃতি। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে গুলশানের একটি বাসায় তল্লাশির নামে তছনছ, ভাঙচুর এবং লুটপাট চালানো হয়। ওই বাসায় বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ, অস্ত্র ও আওয়ামী লীগের দোসররা লুকিয়ে আছে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে দরজা ভেঙে বেশ কয়েকজন লোক ঢুকে পড়ে। তল্লাশির অজুহাতে বাসাটিতে তছনছ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় তারা। প্রথমে বলা হয়, বাসাটি ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের ছেলে তানভীর ইমামের।
- এমআই