বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
ধর্ষণ নিপীড়ন নারীবিদ্বেষ রুখো

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ১০:২৩

প্রতিবাদে উত্তাল সারা দেশ
বাংলাদেশের খবর প্রধান প্রতিবেদন করেছে, মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুর চিকিৎসা চলছে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)। তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে তীব্র প্রতিবাদ। এর মধ্যে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। ঢাকাসহ তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যরাতে শুরু হওয়া বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা। তারা ধর্ষণ এবং নারী নিপীড়নের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার মধ্যরাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। গঠিত হয় 'ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ'। ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে এ ঘটনায় জড়িতদের প্রকাশ্যে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত বিচার এবং শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসেন।
বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
প্রথম আলোর প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার হাতে লাঠি। ‘খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন/রুখে দাঁড়াও জনগণ’, ‘অবিলম্বে ধর্ষকদের/বিচার করো, করতে হবে’, ‘ধর্ষকেরা ধর্ষণ করে/প্রশাসন কী করে?’ সমস্বরে এমন স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। ধর্ষণ, নিপীড়ন, নির্যাতনসহ নারীর ওপর একের পর এক সহিংসতার প্রতিবাদে গতকাল রোববার এভাবেই লাঠি নিয়ে মিছিল করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণসহ নারী ও কন্যাশিশুদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদ এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রোববার (৯ মার্চ) বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সরকারি-বেসরকারি অন্তত ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব কর্মসূচিতে হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশ নেন।
ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন সমাবেশ থেকে ধর্ষণের প্রতিটি ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি (মৃত্যুদণ্ড) নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, ধর্ষণ, নিপীড়নসহ নারীর ওপর সহিংসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে; কিন্তু সরকার কার্যত নির্বিকার। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যান। এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। নারীদের জন্য নিরাপদ সমাজ গঠন করতে হবে।
মাগুরায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণে জড়িতদের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, নারীর ওপর একের পর সহিংসতা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে হবে।
সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন : ধর্ষণসহ নারীর ওপর সহিংসতার প্রতিবাদে গতকাল দিনভর বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধন, মশালমিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে অন্তত ৩৫টি বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে অংশ নেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণি-পেশার মানুষও এসব কর্মসূচিতে ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বিভাগ ও সংগঠনের ব্যানারে পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালিত হয়। ধর্ষকদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করে মুখে লাল কাপড় বেঁধে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্রীরা। তারা স্লোগান তোলেন ‘সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’।
প্রতিবাদ না করা পর্যন্ত ধর্ষকদের কেন বিচার শুরু হয় না—সে প্রশ্ন তোলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, ধর্ষকদের শাস্তির ব্যবস্থা কেন করতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার?
বিভিন্ন সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ধর্ষণ ও সহিংসতার শিকার সবার পাশে তারা আছেন। ন্যায়বিচারের জন্য তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন। বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ চলবে।
বেলা তিনটার দিকে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’–এর ব্যানারে রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে লাঠিমিছিল শুরু হয়। এই মিছিল ভিসি চত্বর, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শাহবাগ মোড় ঘুরে আবার রাজু ভাস্কর্যে ফিরে আসে। মিছিলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মীরা অংশ নেন। পরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা। এই সমাবেশ থেকে ধর্ষণসহ নারী নিপীড়ন প্রতিরোধে ‘ব্যর্থ’ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ এবং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সব ধর্ষণের ঘটনার বিচারসহ ৯ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া লেখক নিগার সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, প্রতীকী প্রতিবাদ জানাতে লাঠি নিয়ে এসেছেন। শিশু, নারীসহ প্রত্যেকের নিরাপত্তা চান তারা।
আত্মগোপনে আওয়ামী সুবিধাভোগী আলেমরা
আমার দেশ পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের বিপক্ষে সর্বদা অবস্থান নিয়ে ইসলামবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল পতিত আওয়ামী সরকার। আর তাদের এই কাজে প্রকাশ্য সহযোগী ছিলেন একশ্রেণির নামধারী আলেম।
সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পাওয়াসহ নানা মহলের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে মূল ধারার শীর্ষ আলেম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেন তারা। সরকারের অন্যায় কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদকারী ধর্মপ্রাণ মানুষের দমনপীড়নেও এসব সুবিধাভোগী আলেম তৎপর ছিলেন।
কথিত এসব আলেমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব আলেমের অনেককে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পুরোটা সময় সরব দেখা গেছে। কিন্তু গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সুবিধাভোগী এসব আলেমের তৎপরতা থেমে গেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বেশ বিপাকে পড়েছেন তারা। সরকারি বিভিন্ন দায়িত্ব এবং রাজনৈতিক পদ থেকে বাদ পড়েছেন অনেকে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও হয়েছে। জনরোষের ভয়ে অনেকটা আত্মগোপনে দিন কাটাচ্ছেন আওয়ামী সুবিধাভোগী আলেমের অনেকে।
তবে কেউ কেউ আবার অতীত কর্মকাণ্ড আড়াল করে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগসাজশ করে মূলধারায় ফেরার বা প্রাতিষ্ঠানিক পদ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। এতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিসহ সংশ্লিষ্ট মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। পতিত আওয়ামী সরকারের সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ আলেমদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
আওয়ামী সরকারের চরম নিপীড়নের শিকার ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী এ প্রসঙ্গে আমার দেশকে বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ে নামধারী কিছু মৌলবি নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। তাদের কারণে মাঠপর্যায়ে প্রকৃত আলেমরা একদিকে জুলুমের শিকার হয়েছেন, অন্যদিকে আলেম-ওলামা ও ইসলামি নেতৃত্বের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা-বিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলন-সংগ্রামের সুন্দর ভবিষ্যৎ বাধাগ্রস্ত করেছেন তারা।
দেখে নেওয়া যাক নামধারী আলেম হিসেবে পরিচিত ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ, মাওলানা রুহুল আমিন, মাওলানা মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, মুফতি ফয়জুল্লাহ, আনাস মাদানী, আবুল হাসনাত আমিনী, মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, মাওলানা রহুল আমিন খান উজানবি, ড. আবুল কালাম আজাদ ও খেলাফত আন্দোলনের বিতর্কিত আলেমদের কে কী করেছেন, কী অবস্থায় আছেন :
মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ : আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে আস্থাভাজন ও কওমি অঙ্গনের বিতর্কিত আলেম ছিলেন মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্কের সুবাদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর এবং ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম নিযুক্ত হন তিনি। কওমি সংশ্লিষ্ট জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশ ও ধর্মীয় দল বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার সভাপতি এবং ইকরা বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের পদও পান।
আওয়ামী আস্থাভাজনের জেরে বেশ দাপুটে ছিলেন তিনি। শাহবাগের বিতর্কিত গণজাগরণ মঞ্চে উপস্থিত হওয়ায় শাহবাগী আলেম হিসেবেও পরিচিতি পান ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিতর্কিত কাজ হলো- এক লাখ (কথিত) মুফতির স্বাক্ষর সংবলিত জঙ্গিবাদবিরোধী ফতোয়া। এই ফতোয়া ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনসহ আওয়ামী সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা পেয়েছিলেন তিনি।
এ ছাড়া পোপের সঙ্গে সম্মেলনে অংশ নিয়ে মোনাজাত করা, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জিহাদবিষয়ক কিছু বক্তব্যের সঙ্গে তিনি জোরালো দ্বিমত করে বিভিন্ন সময় কথা বলেছেন। দেশের মূলধারার আলেমদের বিরুদ্ধে অবস্থান করতেন তিনি। বিশেষ করে জামায়াতের বিরুদ্ধে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন।
উত্তাল সারা দেশ
বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণে জড়িত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে দেশ। ক্ষোভ-প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সচেতন নাগরিক সমাজ। এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন।
কন্যাশিশু ও নারী নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের ২০৬টি সদস্য সংগঠনের পক্ষে সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার ও সহসভাপতি শাহীন আক্তার ডলি এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন। শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে সংস্থাটি।
নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।
গতকাল সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান এক বিবৃতিতে এ কথা জানান। মাগুরা প্রতিনিধি জানান, শিশু ধর্ষণের আসামিদের ফাঁসির দাবিতে গতকাল বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত আদালত চত্বরে অবস্থান নেয় মাগুরার ছাত্র-জনতা। ধর্ষকের ফাঁসির আদেশ না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে সকালে শহরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে তারা মাগুরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। পরে তারা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। সমাবেশে মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শায়েদ হাসান টগর বলেন, ‘আমরা কথা দিচ্ছি ধর্ষকদের পক্ষে মাগুরার কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াবে না।’
আন্দোলনকারীরা রাস্তার ওপর জোহরের নামাজ আদায় করেন। এ সময় সেনাসদস্যরা সেখানে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। সেনাসদস্যদের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা ওই স্থান থেকে সরে গিয়ে শহরের ভায়না মোড়ে মাগুরা-ঢাকা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে রাস্তার দুই পাশে দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটি এক জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াবে না। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় বিক্ষোভ, মিছিল, সমাবেশে উত্তাল ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ধর্ষণ প্রতিরোধ ও ধর্ষকের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সমাবেশ করেছেন শিক্ষকরাও। গতকাল প্রথম প্রহর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
মন্দায় মুমূর্ষু আবাসন খাত
কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে দেশের আবাসন খাত। তবে এ খাতটি এখন ক্রান্তিকাল পার করছে। প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি বিক্রিতে মন্দার কারণে এ খাতজুড়ে চরম স্থবিরতা। নতুন বিনিয়োগ না হওয়া ও পুরোনো প্রজেক্ট প্রায় অচল হয়ে থাকায় উদ্যোক্তারাও পরিচালন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, খাতটি এখন কঠিন সংকটে। উদ্যোক্তারা জানান, অন্তত ৬০ শতাংশ ব্যবসা মন্দার কবলে। এর ধাক্কা এসে লেগেছে আবাসন খাতের সঙ্গে জড়িত রড-সিমেন্টসহ অন্তত আড়াইশ উপখাতেও। বিপুল কর্মসংস্থানের এ খাতের শ্রমিকের জীবন যাপনও হুমকিতে পড়েছে।
আবাসন খাতকে চাঙ্গা করতে অবিলম্বে ড্যাপ সংশোধনসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
আবাস খাতের সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা ও শিল্পের সঙ্গে জড়িত উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এ খাতটিতে এখন নীরব মন্দা চলছে। সরকারের নীতিনির্ধারকদের মনোযোগের বাইরে চলে যাওয়া বড় বিনিয়োগের এ খাতটি ২০২৩ অর্থবছরেও বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রায় ৮ শতাংশের মতো অবদান রেখেছিল। এ খাতে বিনিয়োগ দেড় লাখ কোটি টাকারও বেশি। সরাসরি কমবেশি ৩৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এ খাতে।
জানা যায়, বর্তমানে সারা দেশে বছরে অন্তত এক লাখ নতুন অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা রয়েছে। আবাসন খাতেরও সক্ষমতা রয়েছে এ চাহিদা পূরণের। তবে এখন ব্যবসা মন্দার কারণে উদ্যোক্তারা মাত্র ৮ শতাংশ অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহে একটি বড় ধরনের ঘাটতি রয়ে গেছে।
এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে—ক্রেতাদের সক্ষমতা নেই। উচ্চ সুদের কারণে বেশির ভাগ ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে নতুন অ্যাপার্টমেন্ট কেনার সক্ষমতা। মানসম্পন্ন অ্যাপার্টমেন্ট বলতে গেলে মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভালো জায়গায় বাসযোগ্য একটি ফ্ল্যাটের দামও এখন ন্যূনতম দেড় কোটি টাকা। এ রকম একটি ফ্ল্যাটের জন্য কেউ ব্যাংক ঋণ নিলেও তাঁকে অন্তত ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। এ জন্য মাসে ন্যূনতম একলাখ টাকার বেশি আয় থাকতে হবে। এটিও ফ্ল্যাট বিক্রিতে সংকট তৈরি করেছে বলে উদ্যোক্তারা জানান।
ধর্ষণ নিপীড়ন নারীবিদ্বেষ রুখো
সমকাল পত্রিকার প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, নারীর প্রতি বিদ্বেষ, ধর্ষণ, নির্যাতন বন্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। নানা স্থানে শিশু ধর্ষণসহ নারী নিপীড়ন বেড়ে যাওয়ার পটভূমিতে দল-মত নির্বিশেষে প্রতিবাদী কর্মসূচি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। গতকাল রোববার সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নানা প্রান্তে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন ও মিছিল করতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও সড়ক-মহাসড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন মানুষ। তাদের স্লোগানে অভিন্ন দাবি– ধর্ষক-নিপীড়ককে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ করে আসছে। তবে দু’দিন ধরে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ প্রশ্নে মানুষ যেভাবে মাঠে নেমেছেন, এমন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ গত সাত মাসে দেখা যায়নি। এমনকি নিকট অতীতেও এই ইস্যুতে সর্বস্তরের মানুষের মধ্য থেকে উঠে আসা এত বড় বিক্ষোভ কমই দেখা গেছে।
এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিনির্ধারকরা ধর্ষক ও নারী নির্যাতকের কঠোর শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন। গতকাল আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স। দেশে ধর্ষকের স্থান হবে না। একই দিন আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলায় জামিন পাওয়ার অধিকার আমরা রাখব না।
এ বিষয়ে মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল সমকালকে বলেন, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই নারী নির্যাতনের খবর আসছে। তাতে উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, নারী নির্যাতনের হার এবং নারীর মর্যাদা খাটো করে দেখার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। শুধু তাই নয়, এর ধরন ও মাত্রা ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে।
নারী নির্যাতন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে উদাসীনতায় হতাশা প্রকাশ করে সুলতানা কামাল বলেন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী নির্যাতনকে শাসন বা নিয়ন্ত্রণে আনার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না; বরং এসব ঘটনাকে আগেও এমন ঘটেছে বলে প্রশ্রয়ই দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলার ফলাফলেও তেমন কোনো দৃষ্টান্ত আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি, যা থেকে আশাবাদী হওয়া যায় যে নারী শুধু নারী পরিচয়ে এ সমাজে সমঅধিকার ও সমমর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে বাঁচার পথ খুঁজে পাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফা মনে করেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো না থাকলে অন্য ঘটনার সঙ্গে নারীর ওপর অভিঘাত বেশি হয়। আদতে গণঅভ্যুত্থানের পর সমাজে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এর মানে এটা না, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের আমলের চেয়েও পরিস্থিতি অনেক খারাপ হয়ে গেছে। তবে কয়েকদিনের ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে নির্যাতকের পক্ষে সাফাই গাওয়ায় অনেক বেশি প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। নারীরা বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফুঁসেছেন শিক্ষার্থীরা : অব্যাহত নারী নিপীড়নের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা ফুঁসে উঠেছেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে রোববার দিনভর বিক্ষোভ ছাড়াও রাতে মশাল মিছিল করেন। ঢাবি ক্যাম্পাসে লাঠি মিছিলও হয়েছে। সেখান থেকে ধর্ষণের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবি তোলা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের আলাদা বিবৃতিতে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গতকাল সকালে ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। সেখানে বক্তব্য দেন অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক তাসনীম মাহবুব, অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক সেলিম রায়হান, শিক্ষক সামিনা লুৎফা, শিক্ষক ফাহমিদুল হক, কবি-লেখক ফেরদৌস আরা রুমি, সংস্কৃতিকর্মী সুস্মিতা রায় প্রমুখ।
খুন, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন
প্রতিবাদে উত্তাল দেশ
যুগান্তর পত্রিকার প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সারা দেশ। প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে শনিবার মধ্যরাত থেকেই শুরু হয় শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন।
সড়কে নেমে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রোববার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশেই বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নারী অধিকার কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি ও বেসরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
এসব সমাবেশ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। নারীদের নিরাপত্তায় ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ঢাবিতে নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ঢাবির বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ সমাবেশের পাশাপাশি লাঠি মিছিল করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ওদিকে ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে মাগুরায় আদালত চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্র-জনতা ও আইনজীবীরা। আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী না দাঁড়ানোরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে তীব্র প্রতিবাদ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। উদ্যোগ নিয়েছে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসংক্রান্ত আইন সংশোধনের। ধর্ষণ মামলার বিচার ১৮০ দিনের পরিবর্তে ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা। মামলার তদন্ত ৩০ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা যাবে না।
এদিকে মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশ যখন উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেও ঢাকায় ঘটেছে গণধর্ষণের লোমহর্ষক ঘটনা। এর আগে শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক কলেজছাত্রী। ওই ঘটনায় জড়িতরা গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকায় চরম ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। একইদিন নরসিংদী থানায় দায়ের করা হয়েছে আরেকটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা। সদর উপজেলার পাঁচদোনায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে একটি বাসায় দুদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়।
৬ মার্চ (বৃহস্পতিবার) মাগুরা শহরে বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে আট বছরের শিশুকন্যা ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে আসামি করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যারও চেষ্টা করে আসামিরা। শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে মাগুরা থেকে ফরিদপুর প্রথমে মেডিকেল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার বিকালে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়।
সেখানে শিশুটি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। রোববার সকালে গুরুতর অসুস্থ শিশুটিকে সিএমএইচে দেখতে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পরে তিনি বলেন, আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নারী হয়রানি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এ যাবত নারীর প্রতি যত সহিংসতা হয়েছে সেগুলোর তালিকা করে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশনা দিয়েছি।
এমআই