বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
হাসিনার ‘আলাদিনের চেরাগ’

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২৫, ১০:২৪

সমকাল প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘শেখ হাসিনাকে দিয়েই শুরু গণহত্যার বিচার’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আগামী মাসেই এ-সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন শাখায় দাখিল করার কথা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের আওতায় গঠিত তদন্তকারী সংস্থা ও প্রসিকিউশনের সমন্বয়ে বৈঠকে গত সপ্তাহে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় চিফ প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী সংস্থার প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় চলতি মাসের মধ্যে তদন্ত সংস্থাকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন তৈরিতে এক-তৃতীয়াংশ কাজ বাকি।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে থেকে নানা ধরনের অপরাধের প্রধান হিসেবে বিচারের প্রথম ধাপে শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার সরাসরি নির্দেশদাতা হিসেবেও থাকছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার পৃথক দুটি প্রতিবেদন শিগগিরই প্রসিকিউশন বিভাগে দাখিল করবে তদন্তকারী সংস্থা।
প্রথম আলো প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘বায়ুদূষণে বিশ্বে ২য় বাংলাদেশ, নগর হিসেবে তৃতীয় ঢাকা’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণে ২০২৪ সালে দেশ হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। আর নগর হিসেবে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ দূষিত নগর ছিল ঢাকা। ২০২৩ সালে বায়ুদূষণে বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল। নগর হিসেবে ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়।
গত বছর বায়ুদূষণে শীর্ষ দেশ ছিল আফ্রিকার চাদ। আর নগর হিসেবে শীর্ষে ছিল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের ‘বৈশ্বিক বায়ুমান প্রতিবেদন ২০২৪’-এ এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
সার্বিকভাবে বায়ুদূষণে আগের বছরের তুলনায় গত বছর বাংলাদেশের অবস্থানের সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। শীর্ষ অবস্থান থেকে বাংলাদেশের স্থান হয়েছে দ্বিতীয়। আর নগরীগুলোর মধ্যে ঢাকা দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় হয়েছে। তবে এই পরিবর্তনকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন না পরিবেশবাদী ও গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, দূষণ আরও বিস্তৃত হচ্ছে, এবারের প্রতিবেদন সেই বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। কারণ, আগে দেখা গেছে যে রাজধানীর তুলনায় দেশের সার্বিক গড় বায়ুমান কিছুটা ভালো থাকত। কিন্তু এবারের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ এবং দেশের সবচেয়ে দূষিত নগরী ঢাকার বায়ুর মান প্রায় একই।
কালের কণ্ঠ প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘পুলিশে শৈথিল্য, বাড়ছে বিশৃঙ্খলা’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে দেশে ক্রমে বাড়ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেও এর রাশ টানা যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই অবনতির নেপথ্যে ইন্ধন জোগাচ্ছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা।
সূত্র বলছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীতে কর্মরতদের বেশির ভাগই আওয়ামী শাসনামলে নিয়োগপ্রাপ্ত। ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে দেশে পটপরিবর্তন হলেও তারা ঘাপটি মেরে থেকে নেপথ্যে ইন্ধন জোগাচ্ছে কিভাবে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা যায়। সম্প্রতি দেশে অপরাধপ্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। তবে আশার কথা হলো, পুলিশে সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার যে ‘পুলিশ সংস্কার কমিশন’ গঠন করেছে এরই মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
কমিশনের প্রস্তাব কার্যকর হলে পুলিশ বাহিনী অনেকটাই সংশোধন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
মানবজমিন প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘৬ মাস সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর হার অব্যাহত’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ায় নিজের সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আবার আয়ও বাড়ছে না। অনেকেই ধারকর্যনির্ভর হয়ে পড়ছেন। ফলে সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে নগদায়ন (ভাঙানো) হয়েছে বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) সঞ্চয়পত্রে ঋণাত্মক নিট বিনিয়োগ হয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে যা বিক্রি হয়েছে তারচেয়ে বেশি পরিশোধ করেছে। ফলে এ সময় সঞ্চয়পত্র থেকে নতুন কোনো ঋণ নেয়নি সরকার। বরং আগের নেয়া ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সামপ্রতিক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্য বলছে, সাধারণত অধিক মুনাফার আশায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেন দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু সুদ বেশি হওয়ার পরও সঞ্চয়পত্র কেনা কমিয়ে দিয়েছেন মানুষ। অপরদিকে সঞ্চয়পত্র ভাঙিয়ে ফেলার প্রবণতা বেড়েছে। গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ২৫ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র ভেঙেছেন গ্রাহকরা। অন্যদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে সঞ্চয়পত্র কেনার হার ২৭ শতাংশ কমেছে।
নায়া দিগন্ত প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘মালয়েশিয়ায় লোক পাঠিয়ে ১১২৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত অর্থের অতিরিক্ত এক হাজার ১২৮ কোটি ৬১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আদায় ও বিদেশে পাচারের অভিযোগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও তার পরিবার, সাবেক সংসদসদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব:) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের প্রতিষ্ঠানসহ ১২টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় মোট ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন মামলা দায়েরের বিষয় জানিয়ে বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ও অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাবেক মন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর হিসেবে, বায়রার বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকালে সিন্ডিকেট করে বিএমইটি ও বায়রার রেজিস্ট্রেশনের শর্ত ভঙ্গ করে সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার চেয়ে ৫ গুণ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, অভিযুক্তরা চুক্তিবদ্ধ আইনসঙ্গত পারিশ্রমিক ব্যতীত এবং চুক্তির শর্ত মোতাবেক কাজ না করে পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে অবৈধ পারিতোষিক গ্রহণ করে মালয়েশিয়ায় প্রেরিত কর্মীর কাছ থেকে পাসপোর্ট, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রতি কর্মীর কাছ থেকে নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছেন। তারা অবৈধভাবে গৃহীত অর্থ অবৈধ পন্থায় হস্তান্তর, স্থানান্তর, রূপান্তরের মাধ্যমে অর্থ পাচার করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
যুগান্তর প্রধান শিরোনাম করেছে, দুর্নীতির শিখরে ‘শেখ পরিবার’
হাসিনার ‘আলাদিনের চেরাগ’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নিজেকে প্রাণবন্ত করে সাবলীলভাবে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের সামনে বিশ্বাসযোগ্যভাবে কিছু কথা বলতেন। তিনি প্রায়ই কবিতার ছন্দে বলতেন-‘নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি দেবার কিছু নেই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’ পরিবারের সদস্যদের পাশে রেখে প্রায়ই বলতেন-‘সন্তানদের জন্য আমি কোনো সম্পদ করিনি, তাদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করেছি।’ দলের এবং দলের বাইরের মানুষদেরও তিনি সবক দিতেন দুর্নীতি না করার। সত্যিকার অর্থে শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যখন দেশে ফিরে আসেন, তখন এক রকম শূন্যহাতেই ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সামনে আসতে থাকে হতবাক করার মতো তথ্য।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার দোসরদের বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি ও লুটপাটের তথ্য সামনে আসতে থাকে। একে একে শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলের সব পর্যায়ের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের দুর্নীতির সম্পদও প্রকাশ্যে আসে। অনেকে গ্রেফতার হন। আত্মগোপনে ও দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন অনেকে। তবে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের এবং আশপাশের অতি ঘনিষ্ঠজনদের সম্পদ সবে চাউর হতে শুরু করেছে। প্রথমবারের মতো সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে হাসিনা পরিবারের অবিশ্বাস্য সম্পদের ফিরিস্তি শুনে সবাই বিস্মিত হন।
জনকণ্ঠ প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করার উদ্যোগ’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঈদযাত্রায় এবার যাত্রীদের যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হবে ঢাকা থেকে বের হওয়ার পথে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হবে রাজধানীর ঢাকার প্রবেশমুখে। এর মধ্যে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ধোলাইপাড়, গুলিস্তান ও বাবুবাজার ব্রিজে ঈদের আগেই দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষদের।
তাই ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে ১৫৫টি যানজটের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করেছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। ঈদের আগে ও পরে সব স্থানে মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ঈদের তিন দিন আগে ও পরে মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখা এবং ঈদের আগে ৭ দিন ও পরে ৫ দিন সার্বক্ষণিক সিএনজি ও ফিলিং স্টেশন খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে গার্মেন্টসসহ সব শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমের ছুটির ব্যবস্থাসহ একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়।
ডিআর/এমবি