বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
জল্লাদের ভূমিকায় ‘অ্যাকশন গ্রুপ’

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৯:০৫

শাপলাচত্বর গণহত্যা
হাসিনাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা
বাংলাদেশের খবর প্রধান প্রতিবেদন করেছে, প্রায় এক যুগ আগে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরসহ সারা দেশে হেফাজতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের হত্যা-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। ৯ আসামির মধ্যে চারজন বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। তাদের হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১২ মে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল গতকাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
যে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ।
বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার থাকা চার আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান ও পুলিশের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোল্যা নজরুল ইসলাম। তাঁদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসিকিউশনের পক্ষে গতকাল শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ প্রমুখ।
শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের অভিযানের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের সম্পৃক্ততা ছিল বলে দাবি করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সাংবাদিকদের তিনি জানান, তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গণজাগরণ মঞ্চ শুধু অভিযানের পটভূমি তৈরিতেই নয়, বরং সরাসরি সহিংসতায়ও জড়িত ছিল। তদুপরি, ইমরান এইচ সরকার সে সময় সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে অভিযানের পরিকল্পনায় অংশ নেন। এসব কারণেই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয়েছে এবং আদালতে তা উপস্থাপন করা হয়েছে।
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, শাপলা চত্বরে হামলাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। নিহতের সঠিক সংখ্যা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি, তবে তদন্ত শেষে তা প্রকাশ করা হবে। এ ঘটনায় দায়ী শীর্ষ পরিকল্পনাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করাই প্রধান লক্ষ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সড়কটি যেন ‘সোনা দিয়ে মোড়ানো’ হবে
প্রথম আলোর প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য ২৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়ক নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। ফলে সড়কটির প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪৭৬ কোটি টাকা।
দেশে এটাই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে ব্যয়বহুল সড়ক। এর আগে কোনো সড়ক নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি এত ব্যয় হয়নি।
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দরকে মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত করতে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সড়কটি ২৬ কিলোমিটার দুই লেন নির্মাণ করা হচ্ছে। বন্দরের কাছাকাছি বাকি অংশটুকু হবে চার লেন। সঙ্গে ছোট-বড় কয়েকটি সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। করতে হবে জমি অধিগ্রহণ।
তারপরও সড়কটি নির্মাণে বিপুল ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এক সেমিনারে সড়ক পরিবহন, রেলপথ ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বাংলাদেশে অবকাঠামো নির্মাণে বিপুল ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিদেশি অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্প তাঁকে অনুমোদন করতে হয়েছে। এর প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ৪৩৭ কোটি টাকা। এই সড়ক সোনা নাকি হীরা দিয়ে বাঁধানো হবে-এ প্রশ্ন রাখেন উপদেষ্টা। পাশাপাশি এ বিষয়ে তিনি প্রকৌশলীদের আত্মোপলব্ধির অনুরোধ জানান।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর সংযোগ সড়কের কথাই বলেছেন। এই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ খরচ না ধরলে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় দাঁড়ায় ৪৩৭ কোটি টাকা।
দেশে এত দিন সবচেয়ে ব্যয়বহুল মহাসড়ক ছিল ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে। সওজের অধীনে ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই মহাসড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় ১১ হাজার ৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় প্রায় ২০১ কোটি টাকা। এই ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১৬ সালে। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ২৫২ কোটি টাকা। পরে তা বেড়ে হয় ৬ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। পরে প্রকল্পটিতে নতুন কিছু কাজ যুক্ত করা হয়। তা শেষ করার জন্য ২০১৮ সালে নেওয়া হয় দ্বিতীয় প্রকল্প। এটির ব্যয় ধরা হয় ৪ হাজার ১১২ কোটি টাকা।
ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে মহাসড়কটি চার লেনের। দুই পাশে স্বল্প দূরত্বের স্থানীয় যানবাহন চলাচলের জন্য আলাদা সড়কও রয়েছে। সেখানে তিনটি বড় সেতু, কয়েকটি ছোট সেতুসহ বেশ কিছু আন্ডারপাস (পাতালপথ) নির্মাণ করা হয়েছে। করতে হয়েছে জমি অধিগ্রহণও।
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর সংযোগ সড়ক প্রকল্পে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের ২৩৬ শতাংশ, অর্থাৎ দ্বিগুণের বেশি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নির্মাণ উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি ও ডলারের দামের কারণে ব্যয় বাড়তে পারে। তবে এতটা বেশি হওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
জাপানের আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকার অর্থায়নে মাতারবাড়ী বন্দর এবং সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মাতারবাড়ী সড়ক নির্মাণ হচ্ছে তিন ভাগে (প্যাকেজ)। এর মধ্যে দুটি ভাগের ঠিকাদার হিসেবে জাপানি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ভাগের ঠিকাদার নিয়োগপ্রক্রিয়া চলমান আছে।
চাঁদাবাজির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নেতাদের
আমার দেশ পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও চাঁদাবাজি থেমে নেই। ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্পট, প্রতিষ্ঠান, ফুটপাত, টার্মিনাল, মহাসড়কসহ যেসব স্থান থেকে চাঁদা তোলা হতো-সেখানে শুধু হাতবদল হয়েছে। আগে যারা চাঁদা তুলতো, তারা আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে পালিয়ে গেছে।
এখন সেখানে যুক্ত হয়েছে নতুন মুখ। আবার কোনো কোনো স্থানে ভুক্তভোগীরা আগে যে হারে চাঁদা দিতেন, সেখানে এখন ডাবল হারে চাঁদা দিচ্ছেন। চাঁদা না দিলে হত্যার হুমকি, ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া এবং অপহরণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে মারধরের ঘটনাও ঘটছে।
চাঁদা আদায়কারী ও হামলাকারীরা এমন প্রভাবশালী যে, তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলার সাহস পাচ্ছেন না। থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে আরো বিপদ হতে পারে এজন্য অনেকেই থানায় অভিযোগ দিতে যাচ্ছেন না।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীই শুধু নয়, যেসব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমন্বয়ক ভূমিকা রেখেছিলেন, সেই সমন্বয়কদের বিরুদ্ধেও উঠছে চাঁদার অভিযোগ। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেছেন, জামায়াত টেম্পো স্ট্যান্ড দখল করে চাঁদা আদায় করছে। আবার জামায়াতের পক্ষ থেকে অভিযোগ চাঁদা দিতে না চাইলে তাকে দুদকের মামলার ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেকেই আইনি ঝামেলা এড়াতে এবং সামাজিক মানসম্মান বাঁচাতে দুর্বৃত্তদের টাকা দিচ্ছেন।
জানা গেছে, সরকার পতনের পর পুলিশ এখনো খুব বেশি সক্রিয় না হওয়ার কারণে দুর্বৃত্তরা সক্রিয় রয়েছে।
হামলার আশঙ্কায় অনেক স্থানে পুলিশ টহল দিতে যাচ্ছে না। এতে অপরাধীরা সক্রিয় রয়েছে। আবার রাজধানীর কিছু ফুটপাত থেকে থানা পুলিশের সদস্যদের চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে। ওই স্থানগুলোর ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের ওপর বিক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছেন। রোষানলে পড়ার ভয়ে ওই স্পটগুলোতে পুলিশ এখন কম যাচ্ছে। এতে দুর্বৃত্তরা আরো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তবে পুলিশ দাবি করছে, টহল বাড়ানো হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেনের চাঁদা চাওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। শ্রীপুর উপজেলায় প্রকাশ্যে রামদা নিয়ে মহড়া দিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে একটি বাজার দখল করে চাঁদা তুলছে কিছু যুবক। জাহাঙ্গীর হোসেন মাইক নিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করবেন বলে প্রকাশ্যে ঘোষণাও দেন।
আন্দোলন থামাতে হিমশিম
বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ-আন্দোলন থামছে না। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নানা পক্ষের দাবিদাওয়ার কর্মসূচিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। কিছুদিন শান্ত থাকার পর এখন আবার প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন পক্ষের বিক্ষোভ হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম অবস্থা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
শিক্ষকদের কর্মসূচিতে ফের জলকামান : অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিভিন্ন পেশাজীবীর মতো দাবি আদায়ের আন্দোলনে সোচ্চার রয়েছেন শিক্ষক-কর্মচারীরাও। প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন জাতীয় প্রেস ক্লাবসহ নানা স্থানে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, অবস্থান কর্মসূচি করছে। শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণসহ শতভাগ উৎসবভাতার দাবিতে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)।
কয়েক দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্কুল সরকারিকরণের দাবিতে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যেতে চাইলে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছে।
এতে তিন শিক্ষকের পা ভেঙে গেছে। এ ছাড়া গতকাল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পদযাত্রা করলে সে পদযাত্রাও হাই কোর্ট মোড়ে আটকে দিয়েছে পুলিশ। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ ঈদের আগেই শতভাগ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা প্রদানসহ ১০ দফা দাবিতে বিটিএর মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, দেশের সিংহভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী দ্বারা। পরিতাপের বিষয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ২৫% উৎসব ভাতা এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। অথচ একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে রয়েছে পাহাড়সম বৈষম্য।
এ বৈষম্য দূর করতে হবে সরকারকে। বক্তব্যে তিনি বলেন, শিক্ষকদের দাবিপূরণে সুনির্দিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ঈদুল ফিতরের পর সারা দেশে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন শিক্ষকরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিটিএ সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আল মামুন জুয়েল।
প্রতিবন্ধী স্কুল এমপিওভুক্তির দাবিতে দুপুর ১২টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকরা। তবে পদযাত্রাটি হাই কোর্ট মোড়ে পৌঁছালে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। পরে সেখানে রাস্তায় শুয়ে, বসে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষকরা। অনেকে সাদা কাপড় পরে এ আন্দোলনে অংশ নেন।
এ সময় প্রেস ক্লাব, পল্টন, শাহবাগমুখী সব যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বেশ কিছুক্ষণ রাস্তায় অবস্থান করে ফের প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে ফিরে যান এই শিক্ষকরা।
জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনরত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেলা ১টার সময় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যেতে চাইলে কদম ফোয়ারা মোড়ে তারা পুলিশি বাধার মুখে পড়েন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন এবং একটি প্রতিনিধিদলকে স্মারকলিপি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু আন্দোলনরত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাতে রাজি হননি। বাধা উপেক্ষা করে সামনে যেতে চাইলে পুলিশ তাঁদের ওপর জলকামান নিক্ষেপ করে। তাতেও ফেরানো যায়নি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের। পুলিশ বাধ্য হয়ে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে।
এবারও গ্রীষ্মে ভোগাবে লোডশেডিং
কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাহিদার অতিরিক্ত সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকলেও প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে এবারও গরমের সময় বিদ্যুৎসংকটে লোডশেডিং বাড়বে। জ্বালানি আমদানির অনিশ্চয়তা ও বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে গ্রীষ্মে সারা দেশে ব্যাপক লোডশেডিংয়ের শঙ্কা রয়েছে বলে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। সংকটের মূলে রয়েছে জ্বালানিসংকট, বিপুল পরিমাণ দেনার বোঝা এবং ডলার সংকট। পরিস্থিতি যতটা সম্ভব সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, এবার গরমে তিন হাজার মেগাওয়াটের বেশি ঘাটতি থাকতে পারে। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, লোডশেডিং হবে দেড় হাজার মেগাওয়াট। জ্বালানি সমস্যার কারণে বিদ্যুতের ঘাটতির শঙ্কা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, মার্চে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার এবং এপ্রিলে ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ধরা হয়েছে।
গত বছর একই সময় ১২ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এবার এটি ১৩ থেকে ১৫ হাজার মেগাওয়াট হতে পারে। ঘাটতি পূরণে আগের মতো এবারের গ্রীষ্মেও লোডশেডিং করতে হতে পারে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সম্প্রতি বিদ্যুৎ ভবনে গ্রীষ্মের প্রস্তুতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে।
বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে এসি ব্যবহারে সতর্ক করেছেন তিনি। তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
সম্প্রতি জেলা প্রশাসক সম্মেলনের একটি অধিবেশনে অংশ নেওয়ার পর জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, শীত মৌসুমে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে ৯ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু দুটি কারণে গ্রীষ্মে চাহিদা বেড়ে ১৭ হাজার থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াট হয়ে যায়। সেচে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে।
ডায়ালাইসিস যন্ত্রের দরপত্রে 'ষড়যন্ত্র'
সমকাল পত্রিকার প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি যেন চড়ে বসেছে কচ্ছপের পিঠে। পাঁচ বছর পার হলেও নানা ফিকির আর ষড়যন্ত্রে এক আনা কাজও এগোয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ শুধু বাড়ছেই। এ পর্যন্ত প্রকল্পের টাকা খরচ হয়েছে মাত্র দুই লাখ। পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দিতে গোঁজামিল দিয়ে তিন দফা দরপত্র আহ্বান করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শর্ত পূরণ করতে না পারায় প্রতিবারই দরপত্র বাতিল করতে হয়। প্রকল্প গতিশীল না হওয়ায় কেনা যায়নি যন্ত্রপাতি। ফলে ৪৪ জেলার কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস সেবা এখনও অধরা থেকে গেছে।
কিডনি প্রতিস্থাপনে রয়েছে আইনি নানা জটিলতা। এ কারণে রোগীর বেঁচে থাকার 'অন্ধের যষ্টি' ডায়ালাইসিস। তথ্য বলছে, দেশে বছরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল হয়। এ রোগের চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। এ ছাড়া অধিকাংশ সেবাকেন্দ্র ঢাকাকেন্দ্রিক হওয়ায় চিকিৎসা নিয়ে অতল সাগরে পড়েন জেলা পর্যায়ের রোগীরা। এ বাস্তবতায় কিডনি। কিডনি চিকিৎসার বিকেন্দ্রীকরণ ও রোগীর ভোগান্তি কমাতে ২০২০ সালে প্রায় ২৫৫ কোটি ২২ লাখ টাকার '১৫টি মেডিকেল কলেজে ও ৪৪টি জেলায় ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপন' নামে প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল সরকার।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু কমিশন ভাগবাটোয়ারা নিয়ে জটিলতার কারণে প্রকল্প আটকে যায়। এর জন্য দায়ী রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা। এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে এখনই শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে স্বাস্থ্যসেবাকে জনমুখী করা সম্ভব হবে না। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কেনাকাটায় জটিলতা তো আছেই। তবে জনবল নিয়োগ না হওয়া ও স্থান সংকটের কারণে এখনও শুরু করা যায়নি প্রকল্পের কাজ।
এ পটভূমিতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব কিডনি দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য 'আপনার সুস্থ কিডনি কি সুস্থ? দ্রুত শনাক্তকরণ ও কিডনির স্বাস্থ্য সুরক্ষা করুন'। কিডনি রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে আজ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এবং সংগঠন শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা করবে।
বগুড়া পুলিশ লাইনে আয়নাঘর
জল্লাদের ভূমিকায় 'অ্যাকশন গ্রুপ'
যুগান্তর পত্রিকার প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, শুরুতে সাদা পোশাকে তুলে নিতেন। পরে গুম করে রেখে দিতেন পুলিশ লাইনের গোপন বন্দিশালায় (আয়নাঘর)। তিন থেকে এক বছরের বেশি সময় অনেককে গুম করে রাখা হতো। এ তালিকায় বাদ যায়নি পুলিশ কর্মকর্তার ছেলেও। এ সময় চালানো হতো শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। নির্যাতনের একপর্যায়ে আয়নাঘরে রাখা ব্যক্তিদের জড়ানো হতো ভুয়া জঙ্গি মামলায়। যাদের কারও কারও হদিস মিলত না। নির্মম নির্যাতনের পর কাউকে সড়ক দুর্ঘটনা দেখিয়ে মেরে ফেলা হতো। পেট কেটে কারও লাশ ফেলে দেওয়া হতো নদীতে। চাঞ্চল্যকর এমন সব ঘটনায় এরই মধ্যে গুম কমিশন অব ইনকোয়ারিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী। এছাড়া ওই সময় বগুড়া ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্কের নাম ছিল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল। এলাকার মানুষ আরিফ মণ্ডলের আয়নাঘরের ভয়াবহতার কথা জানলেও ভয়ে মুখ খুলতেন না।
তারা যুগান্তরকে জানান, গুম করে জঙ্গি মামলায় ফাঁসানোর নেতৃত্বে ছিলেন বগুড়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল ও মো. আব্দুল জলিল। এছাড়া গুম করা ব্যক্তিদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে জল্লাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন বগুড়া ডিবির তৎকালীন ইন্সপেক্টর আমিরুল, ইমরান মাহমুদ তুহিন, এসআই জুলহাস, মুজিবর, আলমগীর, এএসআই রাশেদ ও কনস্টেবল গোবিন্দসহ এই গ্রুপের অনেকে। ডিবিতে যারা ওই সময় আয়নাঘরের ‘অ্যাকশন গ্রুপ’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন।
জানা গেছে, গুম হওয়া অনেককেই চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলোচিত জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’র মামলায় আসামি করা হয়। যারা ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন। ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল জঙ্গিবিরোধী অপারেশন ঈগল হান্ট অভিযান চালানো হয়। কিন্তু এ মামলায় যাদের আসামি করা হয় তাদের অনেককে তুলে নেওয়া হয় ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে। পরে ফাঁসানো হয় জঙ্গি মামলায়। এছাড়া গুমের শিকার অনেকের কোনো সন্ধান পায়নি পরিবার।
বগুড়া পুলিশ লাইনে দায়িত্ব পালন করা একজন পুলিশ কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি ওখানে যোগদানের পরই বন্দিদের দেখতে পাই। চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল তারা নিরপরাধ মানুষ। ২০১৭ সালে অন্তত ৩০ জন মানুষকে নেওয়া হয় সেখানে। তাদের ধরে নিয়ে আসার নেতৃত্বে ছিলেন এসপি আসাদুজ্জামান। সঙ্গে মূল দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফ মণ্ডলের সঙ্গে কাজ করতেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল। তারা আটককৃতদের ওপর অমানবিক অত্যাচার চালাতেন। এছাড়া মাঝেমধ্যে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের নির্যাতনে হত্যার পর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বলে চালিয়ে দিতেন। মূলত রাতের অন্ধকারে রোড এক্সিডেন্ট দেখিয়ে মেরে ফেলা হতো। এমনকি হত্যার পর পেট কেটে নদীতে লাশ ফেলে দেওয়া হতো বলেও শুনেছি।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা মানুষ হত্যা করে এখন কীভাবে এসপির দায়িত্বে রয়েছেন? তাদের ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হোক।’
এ বিষয়ে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন বলেন, বগুড়া পুলিশ লাইনের গোপন বন্দিশালার বিষয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। তবে তদন্তাধীন বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হতো। এখানে অনেকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে। গুমের শিকার একজন হাফিজুর রহমান হাফিজ। বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটের পার্বতীপুরে। ঢাকায় একটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন হাফিজুর। ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল কর্মস্থলে যাওয়ার পথে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য তাকে তুলে নিয়ে যান।
সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করে হাফিজুর যুগান্তরকে বলেন, ওইদিন রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকা থেকে বগুড়া জেলা পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফ মণ্ডলের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য তুলে নিয়ে যায়। পরে একটি মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে ফেলে, কয়েক ঘণ্টা পর রাখা হয় একটি গোপন কক্ষে। কয়েকদিন পর সেখানে খাবারের প্যাকেটের গায়ে লেখা দেখে বুঝতে পারি আমাকে বগুড়া পুলিশ লাইনে আনা হয়েছে। বগুড়া পুলিশ লাইনে গুম থাকা অবস্থায় কোনো কথা বলতে গেলেই চালানো হতো নির্যাতন। পরে ডিউটিরত পুলিশ সদস্যদের মারফতে গুমের অবস্থানের বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হই। সেখানে আরিফ মণ্ডল আমাকে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। আমাকে গুম করার সময় যে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ছিলেন, তাদের মধ্যে আরিফ মণ্ডলকেও চিনতে পারি। বগুড়া ডিবির ওসি (ডিবি) আমিরুল, ডিবির ওসি তদন্ত ইমরান আহমেদ তুহিন এবং এসআই জুলহাসসহ গুম করার সময় উপস্থিত কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে বগুড়া পুলিশ লাইনের আয়নাঘরে দেখেও চিনতে পারি। পরে ডিউটিরত পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে আরিফ মণ্ডলসহ বাকিদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হই।
হাফিজুর বলেন, আমার সংশ্লিষ্টতা না পেয়ে বগুড়ার পুলিশ সদস্যরা বলেন, ‘তোকে ছেড়ে দিলে তো সব ফাঁস করে দিবি, এজন্য একটা ছোট মামলা দিয়ে ছেড়ে দিব।’ প্রায় ৮২ দিন গুম রাখার পর বগুড়া থেকে আমাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আনা হয়। পরে মধ্যরাতে একটি আমবাগানে জঙ্গি গ্রেফতারের নাটক সাজায় বগুড়ার টিম। পরে বুঝতে পারি ঈগল হান্টের মামলায় আমাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এমআই