বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে গরিবের সুরক্ষায় ভাটা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৩
-67a2de6385d63.png)
ছবি : সংগৃহীত
প্রিয় পাঠক, বিশ্ব ইজতেমার মহিমায় পবিত্র হোক আপনার দিন। সব ক্লান্তি মুছে প্রভাতরাঙা সূর্যের মতো হেসে উঠুক জীবন। নয়া সকালে নতুন পরিচয়ে হাতের মুঠোয় আসুক সাফল্যসোপান— এই প্রত্যাশায় চলুন জেনে নিই আজকের দিনের বাংলাদেশকে। চোখ বুলাই দেশের প্রথম সারির দৈনিকগুলোর প্রধান প্রতিবেদনে—
পরীক্ষা ছাড়া পদোন্নতি নয়
বাংলাদেশের খবরে লিড করা হয়েছে, নেতিবাচক শব্দ হওয়ায় ক্যাডার শব্দের পরিবর্তন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ ভেরিফিকেশন না থাকা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডার আলাদা করা, ফরিদপুর ও কুমিল্লাকে নতুন বিভাগ ঘোষণাসহ শতাধিক সুপারিশ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কারবিষয়ক প্রতিবেদন। আজ (বুধবার) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে শতাধিক সুপারিশ থাকছে এবং সেগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব।
কমিশন প্রধান আরও বলেন, আমাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল গত মাসে, কিন্তু আমরা আমাদের কাজের কারণে পারিনি। কারণ, আমরা মাঠে গিয়েছি, লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গিয়ে কথা বলেছি, অনলাইনে আমরা মতামত নিয়েছি। এগুলোর ভিত্তিতে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে তিনি সুপারিশ সম্পর্কে প্রতিবেদনে ১০০টির বেশি সুপারিশ থাকছে বলে উল্লেখ করলেও সুপারিশ সম্পর্কে কিছু জানাতে রাজি হননি।
সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান জানিয়েছিলেন, কমিশনের মেজর সুপারিশগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, ফরিদপুর ও কুমিল্লাকে বিভাগ করা হোক। ওই এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দুটি বিভাগ করার পরামর্শ দিচ্ছি। জনগণের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও অনেক এমন সুপারিশ করেছি। আমরা গুগলে ক্লাস্টার করেছি, একই বিষয় কত হাজার মানুষ সাপোর্ট করেছে, কত হাজার লোক চাহিদা দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘ক্যাডার’ শব্দের সঙ্গে অনেকের মনে একটা নেগেটিভিটি (নেতিবাচকতা) থাকে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অনেকগুলো সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে একটা থাকবে এই ক্যাডার শব্দটি বাদ দেওয়া। এর পরিবর্তে যার যে সার্ভিস যেমন, সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন), সিভিল সার্ভিস (হেলথ), সিভিল সার্ভিস (এগ্রিকালচার) বিবিধ লেখা হবে।
‘জেলা প্রশাসক’ নাম পরিবর্তন করে জনসেবা বলা যায় কি না, সে বিষয়েও সুপারিশ রয়েছে। জেলা প্রশাসক ব্রিটিশ আমলের সৃষ্টি এবং এই শব্দের অনেকগুলো প্রতিশব্দ আছে। কালেক্টর, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট। নামেও থাকবে কিছু সাজেশন। জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের মতো স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে ক্যাডার সার্ভিস থেকে আলাদা করার জন্য সরকারকে সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে অন্য ক্যাডারগুলোকে নিয়ে পাঁচটি গুচ্ছ করারও সুপারিশ করা হচ্ছে। এ দুই ক্যাডারকে আলাদা করে বিশেষায়িত বিভাগ করা হবে। এই দুই ডিপার্টমেন্ট ছাড়া বাকি সবাই ক্যাডার থাকতে পারবে।
পদোন্নতির ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, পরীক্ষা ছাড়া উপসচিব ও যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতি নয়। পরীক্ষা ছাড়া সিভিল সার্ভিসের উপসচিব এবং যুগ্ম-সচিব পর্যায়ে কেউ পদোন্নতি পাবেন না বলে সরকারকে সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষা নেবে এবং ৭০ মার্ক না পেলে পদোন্নতি পাবেন না। প্রতিটি ক্ষেত্রে (উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে) এটি নাও হতে পারে, উপসচিব এবং যুগ্মসচিব এই দুই পর্যায়ে (পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি) হবে।
এরপরের পর্যায়ে সরকার পদোন্নতি দিতে পারবে। আর যে পরীক্ষা হবে, সেখানে যদি একজন কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তা সবচেয়ে বেশি নম্বর পান, সে তালিকায় এক নম্বরে চলে আসবে। উপসচিবের তালিকায় সে এক নম্বরে আসবে। উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাদের নেওয়ার সুপারিশ থাকছে।
গণহত্যার ঘটনায় তদন্ত চলছে হাসিনাসহ ১০৮ জনের বিরুদ্ধে
প্রথম আলো লিড করেছে, গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০৮ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা গেছে ৩৪ জনকে।
ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত মামলা (মিস কেস) হয়েছে ১৬টি। এই মামলাগুলোতে আসামির সংখ্যা ১০৮। তবে একটি মামলারও তদন্ত প্রতিবেদন এখনো ট্রাইব্যুনালে জমা হয়নি। এই ১৬ মামলা এখন প্রাক্-বিচার পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল তা গ্রহণ করলে এসব মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হবে।
গণ-অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রায় আড়াই মাস পর ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গণ-অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ শাসনামলে সংঘটিত গুম, খুন, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হচ্ছে এই ট্রাইব্যুনালে। যদিও এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য।
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয় সূত্র বলছে, গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যা ও গণহত্যা এবং আওয়ামী লীগের বিগত সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এ পর্যন্ত ৩০০টির মতো অভিযোগ এসেছে। এসব অভিযোগ যাচাই–বাছাই করে ট্রাইব্যুনালে ১৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলা হয়েছে গুমের ঘটনায়। বাকি ১৩টি মামলা হয়েছে গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়।
১৬ মামলার মধ্যে ২টিতে আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। তাঁর বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ (একটি মামলায়) আনা হয়েছে। এ মামলায় ১৮ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য রয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরেকটি মামলা হয়েছে গুমের অভিযোগে। সেই মামলার শুনানি ১২ ফেব্রুয়ারি।
এখন পর্যন্ত একটি মামলাতেও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ার বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত বিস্তৃত ও জটিল বিষয়। এই অপরাধ দেশজুড়ে সংঘটিত হয়েছে। ফলে মামলার সাক্ষী ও তথ্য-উপাত্ত বিপুল। আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে তদন্ত শেষ করতে যুক্তিসংগত সময় প্রয়োজন। বেশি তাড়াহুড়া করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে ত্রুটি থাকতে পারে, এতে অপরাধীদের পার পেয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দেশবাসীর উচিত হতাশ না হয়ে যুক্তিসংগত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করা। চলতি মাসের শেষ দিকে কিংবা মার্চের শুরুর দিকে দু-তিনটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি।
গেম চেঞ্জার তরুণ ভোটার
বাংলাদেশ প্রতিদিন লিড করেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা হিসাবনিকাশ চলছে। রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়ার চাবি এখন তরুণ ভোটারদের হাতে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ নির্বাচনে গেম চেঞ্জারের ভূমিকায় থাকবেন প্রায় ৩ কোটি তরুণ ভোটার। যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। দলগুলোর ফোকাসও থাকবে বিপুলসংখ্যক এই তরুণের দিকে।
গত ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ইসির হিসাব অনুযায়ী দেশে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সের ভোটার রয়েছেন ২ কোটি ৯৯ লাখ ৪১ হাজার ৯৭৩ জন। এর মধ্যে নারী রয়েছেন ১ কোটি ৩৪ লাখ ৬৮ হাজার ১৪১ জন; পুরুষ রয়েছেন ১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৩ হাজার ২৫২ জন ও হিজড়া ৫৮০ জন। এ ছাড়া বাদ পড়া ও ১ জানুয়ারি ২০০৮ সালে যাদের জন্ম হয়েছে তাদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করতে গত সোমবার পর্যন্ত ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪৫ জনের তথ্য সংগ্রহ করেছে ইসি। এ ছাড়া ২ জানুয়ারি গত বছরের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি। তাতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫২ জনের নাম। তাতে ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২। আগামী ২ মার্চ তাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ইসি।
ইসির হিসাবমতে, ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সি ভোটার ৭১,৯৯,৭০৭ জন। ২২ থেকে ২৫ বছর বয়সি ভোটার ১,১১,৫৩,১৮৩ জন। ২৬ থেকে ২৯ বছর বয়সি ভোটার ১,১৫,৮৯,০৮৩ জন। এ ছাড়া ৩০ থেকে ৩৩ বছর বয়সি ভোটার ১,০৬,৪৭,৪৪১ জন। ৩৪ থেকে ৩৭ বছর বয়সি ভোটার ১৪০২২২৯৪ জন। ৩৮ থেকে ৪১ বছর বয়সি ভোটার ১২০৪৩২৯২ জন। ৪২ থেকে ৪৫ বছর বয়সি ভোটার ১২১৬৭৯৪৯ জন। ৪৬ থেকে ৪৯ বছর বয়সি ভোটার ৯১৬২৫৫৬ জন। ৫০ থেকে ৫৩ বছর বয়সি ভোটার ৭৭৯৪৪৪০ জন। ৫৪ থেকে ৫৭ বছর বয়সি ভোটার ৮০৯৮২৮৬ জন। ৫৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি ভোটার ৩২৯০৬৫৬ জন এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সি ভোটারের সংখ্যা ২৫১১১০৫৪ জন। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচনের সময় দেশে ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ ৮৭ হাজার ৩ জন।
ভোটার হালনাগাদে অর্ধ কোটি নাগরিকের তথ্য : এবার ভোটার তালিকা হালনাগাদে ১৭ বছর বয়সি এবং ভোটারযোগ্য বাদ পড়া মিলিয়ে প্রায় অর্ধ কোটি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করেছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি বিদ্যমান তালিকা থেকে বাদ যাবেন- এমন ১৫ লাখের বেশি মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
গতকাল নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ইসি সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘সোমবার পর্যন্ত বাদ পড়াদের (অতীতে যারা ভোটার হতে পারেননি) মধ্যে ভোটার বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ ও নতুন ভোটার (যারা আগামী বছর ১ জানুয়ারি আঠারো বছর বা ভোটারযোগ্য হবেন) বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ। মোট ভোটার বৃদ্ধির হার ৪ শতাংশ।’ ইসির তথ্য অনুযায়ী, চলমান ভোটার হালনাগাদ কর্মসূচিতে ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪৫ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, যদিও লক্ষ্য ছিল ৬১ লাখের ৮৯ হাজার ৩৭৫ জন।
ফিরবে পাচারের অর্থ
যুগান্তর লিড করেছে, গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আমলে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকার এবার তিনটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও সুইজারল্যান্ডের পৃথক এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিগগির এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় অফিশিয়াল প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে। এ সংক্রান্ত নথি বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। চুক্তি সম্পন্ন হলে উদ্ধারকৃত অর্থের ১০ ভাগ কমিশন হিসাবে পাবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক সফলতার নজির রয়েছে। বিশ্বজুড়ে রয়েছে তাদের শাখা অফিসের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক।
অর্থনীতিবিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার করে পাচার হয়েছে। এ হিসাবে দেশ থেকে ১৫ বছরে পাচার হয়েছে ২৮ লাখ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, যেসব প্রতিষ্ঠান বা এজেন্সি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাদের পাচার করা অর্থ উদ্ধারে তথ্যের অনুসন্ধান, অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া, সংশ্লিষ্ট দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং প্রয়োজনে আইনি লড়াই করার মতো সব ধরনের সামর্থ্য রয়েছে। এছাড়া একই সময়ে একাধিক দেশে কাজ করার যথেষ্ট সক্ষমতাও আছে। ফলে পাচার করা টাকা ফেরাতে এসব এজেন্সি নিয়োগ দেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত মনে করছে সরকার। এজন্য চুক্তি হওয়ার পর এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সরকারের বিদেশে অবস্থিত দূতাবাস বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সর্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ রাখবেন।
মূলত বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর সহায়তা নিয়েই বেশ কয়েকটি এজেন্সিকে বাছাই করেছে সরকারের এ সংক্রান্ত টাস্কফোর্স। এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে উল্লিখিত তিনটি এজেন্সিকে বাছাই করা হয়। তবে গোপনীয়তা রক্ষার প্রশ্নে এজেন্সিগুলোর নাম প্রকাশ হচ্ছে না।
নানা সংকট থাকলেও তৈরি হয়েছে আশাবাদ
আমার দেশ লিড করেছে, দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হওয়ার ছয় মাস আজ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়। পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ওইদিন ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। এখনো তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। এদিকে সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের তিন দিনের মাথায় ৮ আগস্ট নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। ওই সরকারের মেয়াদ ৬ মাস হতে চলেছে। ব্যাপক প্রত্যাশার এ সরকারের ছয় মাসে প্রাপ্তির হিসাব পুরোটা না মিললেও এখনো আশাহত নয় জনগণ। নানা সংকট থাকলেও রাষ্ট্র মেরামত, দুর্নীতি দমনসহ সুশাসন ইস্যুতে জনগণের মধ্যে আশাবাদ তৈরি হয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে আত্মগোপনে চলে যান তার সরকারের সব মন্ত্রী-এমপি ও দলের নেতাকর্মীরা। ওইদিনই ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবন, তার কার্যালয় ও জাতীয় সংসদ ভবনে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ধানমন্ডির শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়, মরহুম স্বামীর বাসভবন সুধাসদন এবং ৩২ ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয় সাধারণ জনতা। দলের এমপি-মন্ত্রীসহ প্রভাবশালীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মুখে পড়ে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের পর নামফলক ভেঙে ফেলে ‘ছাত্র-জনতার কার্যালয়’ উল্লেখ করে নতুন নামফলক টানানো হয়।
এ সময় আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের কেউ কেউ স্থলপথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে চলে গেছেন। কেউ কেউ আকাশপথেও বিদেশ যেতে সক্ষম হয়েছেন। বাকিদের একটি অংশ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। কেউ কেউ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় কিংবা বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার সময় আটক হন। এখনো দলটির অনেক নেতা আত্মগোপনে আছেন। তাদের কেউ কেউ নতুন করে আটক হচ্ছে। কেউ আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে বিদেশেও চলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
এদিকে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ প্রভাবশালী নেতাদের গ্রেপ্তার করে আইনের মুখোমুখি করা হচ্ছে। ১৪ আগস্ট শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হয়। ইতোমধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় মামলার সংখ্যা আড়াইশ ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা দুই শতাধিক। এখনো নতুন নতুন মামলায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হচ্ছে। এসব মামলায় পতিত সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতাদেরও আসামি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে একাধিক মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
দেশে আত্মগোপনে থাকাদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বিমানমন্ত্রী ফারুক খান, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, কাজী জাফরউল্লাহ, রাশেদ খান মেনন ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ বেশ কয়েকজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছেন। এছাড়া সাবেক সরকারের ‘সুবিধাভোগী’ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান আমলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে একাধিক মামলায় হুলিয়ার মুখে থাকা শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারত সরকারকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে ওই চিঠিতে সাড়া দেয়নি ভারত সরকার। উলটো শেখ হাসিনাকে দীর্ঘ মেয়াদে ট্রাভেল পাস দিয়েছে দেশটি। যদিও আমার দেশ-এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, ভারত শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে। অবশ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করার অনুরোধ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশসহ বিশ্বের দেশে অবস্থানরত নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন দেশে দলের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন। ওই বক্তব্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরাসহ ইউনূস সরকারের কঠোর সমালোচনা করছেন। দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে গরিবের সুরক্ষায় ভাটা
সমকাল লিড করেছে, দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে ভর্তুকি মূল্যে খাদ্য বিতরণ বাড়ানোর পরিকল্পনা থাকলেও অর্থের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণ, সরকারের রাজস্ব আয় কমে গেছে। সামগ্রিক আয় ও ব্যয়ের মধ্যে বড় ঘাটতি রয়েছে। ঋণ পরিশোধে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমান আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন। এ জন্যই খাদ্য মন্ত্রণালয় এই খাতে ভর্তুকি বাবদ বাড়তি অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সরকারের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ঘাটতি অন্য যে কোনো বছরের তুলনায় বেশি। এসব ক্ষেত্রে বাড়তি অর্থের তেমন সংস্থান করা যাচ্ছে না। খাদ্য সহায়তার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় রেখেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ কারণে বেশ কিছুদিন বন্ধ বা আংশিক চালু থাকার পর সামাজিক সুরক্ষার আওতায় কয়েকটি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগীর তালিকা হালনাগাদ করে ফের চালু করা হচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাব অনুসারে, গত জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে সংস্থাটির মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় করেছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ৫৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আদায় কম হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে গত আড়াই বছরের বেশি সময় দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। গত ডিসেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। গত জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে উঠেছিল। অর্থনীতিবিদরা বলে থাকেন, গরিব মানুষের জন্য মূল্যস্ফীতির হার আরও বেশি। কেননা, তারা কিছু মৌলিক খাদ্যপণ্যের পেছনে তাদের আয়ের বেশির ভাগই ব্যয় করতে বাধ্য হন।
সাবেক অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ সমকালকে বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে গরিব মানুষকে স্বস্তি দিতে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানো উচিত। অনিয়ম রোধে তালিকা হালনাগাদ করার জন্য যেসব কর্মসূচি বন্ধ বা আংশিক চালু রয়েছে, সেগুলো দ্রুত পুরোপুরি চালু করা প্রয়োজন। সরকারের রাজস্ব বাড়াতে প্রত্যক্ষ করের ওপর জোর দিতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
নাহিদ-আসিফরা পদত্যাগ করলেও সরকারে থাকতে পারেন ছাত্র প্রতিনিধি
মানবজমিন লিড করেছে, ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের পর থেকে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বিষয়টি সামনে এসেছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন দল গঠন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছেন। জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে শিক্ষার্থীরা সংগঠিত হলেও রাজনৈতিক দল হবে ভিন্ন। যেখানে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারা নেতৃত্বে থাকবেন। এ ছাড়া সরকারে থাকা ছাত্রদের প্রতিনিধিরাও থাকতে পারেন। দলের নেতৃত্বে আসার আগেই সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন ছাত্র প্রতিনিধিরা। তাদের একজন ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসতে পারেন।
বর্তমানে সরকারে রয়েছেন ছাত্রদের তিন উপদেষ্টা । তারা হলেন- তথ্য ও সম্প্রচার এবং আইসিটি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এ তিনজন ধাপে ধাপে সরকার থেকে পদত্যাগ করে দলে যোগ দিলে সরকারে ছাত্রদের অংশীদারিত্ব কীভাবে থাকবে সে বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। ছাত্ররাও বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। এক্ষেত্রে তিন উপদেষ্টা পদত্যাগ করলেও সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধি নিশ্চিত করতে চান তারা। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভ্যন্তরে আলোচনা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে। ছাত্ররা চাইছেন সরকারে তাদের অংশীদারিত্ব একেবারে শেষ না হোক। সে ক্ষেত্রে কীভাবে সরকারের সঙ্গে ছাত্ররা কাজ করতে পারে সে বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে সংগঠন দু’টির অভ্যন্তরে। যেটি নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে সরকারের উচ্চমহলেও।
জানতে চাইলে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব মানবজমিনকে বলেন, ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক উদ্যোগে যুক্ত হতে সরকারে থাকা ছাত্রদের প্রতিনিধিদের মধ্যে এক-দুই জন উপদেষ্টা পদত্যাগও করতে পারেন। এক সঙ্গে দুই জন না তিন জন পদত্যাগ করবেন- সেটি চূড়ান্ত হয়নি। হলে বলা যাবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। একজন নতুন করে উপদেষ্টা পরিষদে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আশা করি একজন উপদেষ্টা পরিষদে আসবেন। তবে এখনো পর্যন্ত তারা (সরকারে থাকা বর্তমান তিন উপদেষ্টা) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি। জানালে বলা যাবে।
সূত্র মতে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদে রদবদল আসছে। নতুন কয়েকটি মুখ যোগ হতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় নাগরিক কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, তিন উপদেষ্টা ধাপে ধাপে পদত্যাগের করলে সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব কীভাবে থাকবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি আমাদের কোনো প্রতিনিধি সেখানে থাকুক। যিনি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ ছিলেন না বা হবেন না। যাই করা হোক সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সেটি নির্ধারণ করা হবে। অভ্যুত্থানের কোনো অংশীজনের সঙ্গে বিরোধ যেন সৃষ্টি না হয় সে বিষয়েও সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে।
জানা গেছে, দল ঘোষণার আগ মুহূর্তে পদত্যাগ করতে পারেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। যিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসবেন। এরপর দ্বিতীয় ধাপে পদত্যাগ করবেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আর উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সবার শেষে পদত্যাগ করতে পারেন।
এজেন্সির লোভে টিকিট দুর্মূল্য
কালের কণ্ঠ লিড করেছে, অতিমুনাফালোভী কিছু ট্রাভেল এজেন্টের লোভের মাশুল গুনছে প্রবাসীসহ সাধারণ বিমান যাত্রীরা। এই চক্রের সিন্ডিকেটের কবজায় বিমানের টিকিট বাণিজ্য। তারা এয়ারলাইনসগুলোর টিকিট আগাম ব্লক করে নিজেদের জিম্মায় রেখে পরে ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে। ফলে বিদেশগামী বিমানের যাত্রীদের স্বাভাবিক ভাড়ার তিন গুণ পর্যন্ত বেশি টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হচ্ছে। যাত্রী, কর্মী ও ট্রাভেল এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার টিকিট তাদের সিন্ডিকেটের কারণে কিনতে হচ্ছে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত।বিভিন্ন সূত্র বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইনস ব্যবসায়ী ও দেশীয় কিছু ট্রাভেল এজেন্সির মধ্যে প্রভাবশালী এক সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। তারা বিভিন্ন এজেন্সির চাহিদা না থাকা সত্ত্বেও যাত্রীদের কোনো প্রকার পাসপোর্ট, ভিসা ও ভ্রমণ নথিপত্র ছাড়াই শুধু ই-মেইলের মাধ্যমে কিছু এয়ারলাইনসের বিভিন্ন রুটের গ্রুপ সিট বুকিং করে থাকে।
এই সিন্ডিকেট দু-তিন মাস আগে অগ্রিম তারিখের পিএনআর তৈরি করে সিট ব্লক করে রাখে। কিন্তু এই পিএনআরে কোনো যাত্রীর নাম উল্লেখ থাকে না। এজেন্সি বা যাত্রীর ওই ফ্লাইটের টিকিট খালি আছে কি না তা জানার কোনো সুযোগ থাকে না। টিকিট খুঁজতে গেলে সেখানে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে—এমন বার্তা আসে। টিকিটের কৃত্রিম সংকটকে কাজে লাগিয়ে তখন এর দাম বাড়িয়ে পকেটে পোরে ওই চক্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মূলত বিদেশি মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইনসগুলো ফ্লাইটের তারিখের অনেক আগেই আসন বিক্রি নিশ্চিত করা এবং অধিক মুনাফার জন্যই এই পদ্ধতি অবলম্বন করে রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা, ওমান, দোহা, কুয়ালালামপুরসহ বিভিন্ন রুটের সিট ব্লক করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইনসগুলো এ ধরনের নাম ছাড়া গ্রুপ বুকিং করে তাদের পছন্দের গুটিকয়েক এজেন্সির মাধ্যমে বাজারে টিকিট বিক্রি করে।
চলতি বছরের গত ২৬ জানুয়ারি উড়োজাহাজের ৬০ হাজার টিকিট সিন্ডিকেট ব্লক করেছে বলে অভিযোগ করে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)। এ সময় আটাব বলে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে চলমান অন্যতম বড় সমস্যা এয়ার টিকিটের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি।
এটিআর/