Logo

নির্বাচিত

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

বিএনপি-জামায়াত দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্যে

Icon

বাংলাদেশের খবর

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪২

বিএনপি-জামায়াত দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্যে

প্রিয় পাঠক, শুভ সকাল। আজ পবিত্র শবে বরাত। একই সাথে দেশে পালিত হচ্ছে বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা দিবস। পাশাপাশি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবেও পালন করা হয় দিনটিকে। চলুন দেখে নেই আজকে দেশের প্রথম সারির দৈনিকগুলোর প্রধান প্রধান শিরোনাম—

নিরাপত্তা সংস্থা সংস্কারই চ্যালেঞ্জ 
বাংলাদেশের খবরে লিড করা হয়েছে, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন রিপোর্ট প্রকাশের পর বাংলাদেশের রাজনীতি, সংস্কার কার্যক্রম এবং সরকার পরিচালনায় বড় ধরনের পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনে শেখ হাসিনাসহ তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের নেতারা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের, সরাসরি সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পেয়েছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। রিপোর্টে এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্য, তারা অনেক সুপারিশ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন কারণে এই রিপোর্টে দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে, বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা এর পরবর্তী সরকারকে। 

এদিকে গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রিপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, পৃথিবীতে সম্পূর্ণ মানবাধিকার মেনে চলে এমন দেশ নেই। গরিব দেশগুলোতে এই রেকর্ড আরও খারাপ। তাই সজাগ থাকতে হবে, আমাদের নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট যেন না হয়। 

আরেক কূটনীতিক বলেন, সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হলে রাষ্ট্র পরিচালনায় যে কূটকৌশল, সেটির ধার কমে যাবে। এখানে গুম বা আইন-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ বা অন্যান্য অপরাধ বন্ধ 

করা বা কমানো সহজ। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা- তিনি জানান। ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্টে ডিজিএফআই, এনএসআই, র‍্যাবসহ অন্যান্য সংস্থা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল উল্লেখ করা হয়েছে। ওইসব সংস্থায় কিছু কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সেখানে সংস্কার হবে কি-না বা হলে কি হবে এ বিষয়ে এখনো কিছু বলা হয়নি। এ বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, এই রিপোর্ট গ্রহণ করার মাধ্যমে সরকার স্বীকার করে নিয়েছে, তাদের যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেখানে তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে। 

ডিসেম্বরের শেষে জাতীয় নির্বাচনের চিন্তা
প্রথম আলো লিড করেছে,এ বছরের ডিসেম্বরের শেষার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার চিন্তা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

তবে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি চলতি বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চাইলেও জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে নয়। তারা চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন হোক। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন নয়, গণপরিষদ নির্বাচন চায়।

এ অবস্থায় আগামীকাল শনিবার থেকে ছয়টি কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই আলোচনা কত দিন চলবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এ আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি পথনকশা আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের অন্যতম লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ জন্য ১১টি সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন ইতিমধ্যে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এসব প্রস্তাব নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের’ সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে আগামীকাল থেকে।

পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘন
বাংলাদেশ প্রতিদিন লিড করেছে, ক্ষমতা ধরে রাখতে পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। আন্দোলন দমাতে অতিরিক্ত শক্তিপ্রয়োগ, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গণগ্রেপ্তার, চিকিৎসাসেবায় বাধা, ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ, সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের ওপর আক্রমণ, নারী ও শিশুদের লক্ষ্যবস্তু করাসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে স্বৈরাচার সরকার। এসব কাজে পুলিশ ও দলীয় বাহিনীর পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থা ব্যবহার করা হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)-এর তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্দোলনের শুরুর দিকে ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রদের ওপর ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে আক্রমণ চালান। এ সময় নারী শিক্ষার্থীদের যৌন সহিংসতার হুমকি দেওয়া এবং মারধর করা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন আহত শিক্ষার্থীদের ওপর পুনরায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এর পর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ছাত্র-জনতার ওপর অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে। রাইফেল ও শটগান ব্যবহার করে নির্বিচার গুলি চালানো হয়। অনেককে সরাসরি কাছ থেকে  গুলি করে হত্যা করার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ। ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়, যার ১২-১৩% শিশু। বলপ্রয়োগের পাশাপাশি ১১ হাজার ৭০০-এর বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী  বাহিনী। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা বিক্ষোভকারীদের অপহরণ ও গোপনে আটকে রাখে। আটকদের অনেককে বৈদ্যুতিক শক, মারধর ও মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়। অনেক শিশুও আটক ও নির্যাতনের শিকার হয়। কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদর দপ্তর শিশুসহ নির্বিচার আটকদের বন্দিস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।

জুলাই বিপ্লবের খুনিরা কোথায়
যুগান্তর লিড করেছে, জুলাই বিপ্লবে নির্বিচার হত্যার পরিকল্পনাকারীদের বেশির ভাগই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। রহস্যজনক কারণে তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি বা গ্রেফতারে আগ্রহ দেখায়নি পুলিশ ও গোয়েন্দারা। ছাত্র-জনতার তীব্র প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে ভারতে পালিয়ে যান।

তখনো আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ মন্ত্রী-এমপি এবং তাদের দোসর হিসাবে পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তারা দেশ ছাড়তে পারেননি। জনরোষের ভয়ে প্রাণ বাঁচাতে তারা কয়েক দিন সেনা হেফাজতে ছিলেন। সেখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাদের বেশির ভাগ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। তবে তারা কীভাবে বৈধ পথে দেশ ছেড়ে পালাতে পেরেছেন, তা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ আর প্রশ্নের শেষ নেই।

এদিকে মাঠ পর্যায়ে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলির ঘটনায় সরাসরি জড়িত অনেক পুলিশ কর্মকর্তা এখনো চাকরিতে বহাল। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে তাদের সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে। কেউ কেউ ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া কঠোর হস্তে আন্দোলন দমাতে শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রতিদিন দমন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হতো সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায়। পুলিশের আইজি, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান, এনটিএমসির মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনার, র‌্যাবের ডিজিসহ সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকতেন। কিন্তু এই কোর গ্রুপের প্রায় সবাই এখন দেশের বাইরে। অর্থাৎ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। একাধিক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সীমান্তে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে ভারত
আমার দেশ লিড করেছে, সীমান্তে দিনের পর দিন মানুষ হত্যা করেই চলেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এর মধ্যেই সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তে নানা ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে বাহিনীটি। বিএসএফের বাড়াবাড়ির কারণে সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে।

বিশেষ করে সীমান্তের শূন্যরেখায় ভারতীয় বাহিনীর কাঁটাতারের বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা আরও বাড়ছে। তবে ভারতের সীমান্ত আগ্রাসন রুখে দিতে তৎপর বাংলাদেশ। এরই মধ্যে কুড়িগ্রামে বিজিবির কড়া প্রতিবাদের মুখে সীমান্তের শূন্যরেখায় লাগানো সিসি ক্যামেরা সরিয়ে নিয়েছে বিএসএফ।

সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সাংবাদিকদের দেওয়া বক্তব্যে সেটিই স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘রক্ত ঝরলেও সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে।’

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দেওয়া তথ্যমতে, ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ৬১৭ জন বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। এ সময়ে তাদের হামলায় আহত হন অন্তত ১ হাজার ১০০ জন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের বিতর্কিত শ্যুট অন সাইট (দেখামাত্র গুলি) নীতি এবং ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের কার্যত ভারত নিয়ন্ত্রিত পররাষ্ট্রনীতির কারণে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা করে আসছে ভারতীয় বাহিনী। আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বশেষ তিন মেয়াদসহ গত ১৬ বছরে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সের মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনের লাশ সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলে থাকার সেই ছবি বিশ্বব্যাপী ভারতীয় বাহিনীর বর্বরতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হলেও নির্বিকার ছিল তৎকালীন হাসিনা সরকার। উল্টো সে সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা ভারতীয় বাহিনীর পক্ষ নিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার বাংলাদেশিদের দায়ী করে বক্তব্য দিতেন।

বিএনপিকে উপেক্ষা করে স্থানীয় নির্বাচনে এগোচ্ছে সরকার
সমকাল লিড করেছে, বিএনপির ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনে এগোচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতৃত্বের পাশাপাশি সমর্থন দিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে– এ আশঙ্কায় বিএনপি বিরোধী হলেও দলটির সূত্রের খবর, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ছাত্রদের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে স্থানীয় নির্বাচনে জোর দেওয়া হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ থাকবে কিনা– যাচাইয়ে জামায়াত আগে স্থানীয় নির্বাচনের কথা বললেও দলটির নেতাদের ভাষ্য, নির্দলীয় পদ্ধতির স্থানীয় নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের ঐক্য ভেঙে গেলে বিএনপি দুর্বল হয়ে পড়বে। এর পর সংসদ নির্বাচনে সুবিধা হবে আওয়ামী লীগশূন্য মাঠে জামায়াতের।

রাজনৈতিক সূত্রগুলো সমকালকে জানিয়েছে, সংসদ নির্বাচনের আগে দলের জনভিত্তি তৈরিতে ছাত্র নেতৃত্ব প্রথমে স্থানীয় নির্বাচন চায়। এ জন্য তারা দাবি ও চাপ অব্যাহত রাখবে। বিএনপির কারণে নির্বাচন সম্ভব না হলে, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে রাজনৈতিক প্রশাসক বসানো হবে। এ লক্ষ্যেই বিএনপি ও আমলাতন্ত্রের ‘বাধা’ উপেক্ষা করে ছাত্র নেতৃত্বের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) সদ্য সাবেক নেতাকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। ঢাকা দক্ষিণে বিএনপির কোনো নেতাকে প্রশাসক পদে বসানোর প্রস্তাবে দলটি সাড়া না দেওয়ায় সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সম্প্রতি তিনটি পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত সচিব হওয়া শাহজাহান মিয়াকে। অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা তিনি।

নির্বাচন ইস্যু
বিএনপি-জামায়াত দ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্যে
মানবজমিন লিড করেছে, নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে এক সময়ের রাজনৈতিক দুই মিত্র বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব আরও প্রকাশ্যে এসেছে। বিএনপি দ্রুত নির্বাচন আয়োজনে সরকারকে চাপ দিয়ে আসলেও জামায়াত এগোচ্ছে ভিন্ন কৌশলে। দলটি প্রয়োজনীয় ও অতি জরুরি সংস্কার প্রক্রিয়া শেষে নির্বাচন চায়। এজন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে চায় সরকারকে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়েও জামায়াত বিএনপি’র বিপরীত অবস্থানে। জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচন চায় না। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হলে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে জামায়াত। এ ছাড়া সংখ্যানুপাতের ভিত্তিতে আসন নির্ধারণের পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে দলটি। বিএনপি এই ব্যবস্থার বিপক্ষে।

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে গত রোববার বৈঠক করে বিএনপি। বৈঠকে ইসির নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান বিএনপি নেতারা। ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে ইসি কাজ করছে বলে বিএনপি নেতাদের জানানো হয়। বৈঠকের চারদিন পর জামায়াতের একটি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।  বৈঠকে প্রয়োজনীয় জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে তারা নির্বাচন চান। এ ছাড়া জনগণের আকাঙ্ক্ষা হলো  জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আগে স্থানীয় নির্বাচন। জামায়াত এই আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে। 

ওদিকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, যত দ্রুত নির্বাচন ততই রাজনীতি সহজ হবে। বাংলাদেশ স্থিতিশীল হয়ে আসবে। ইসি’র সঙ্গে সাক্ষাতে জামায়াত সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চেয়েছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফখরুল বলেন, এটা (সংখ্যানুপাতিক ভোট) আমরা পুরোপুরি বিরোধী, একেবারে জোরালোভাবে বিরোধী। আনুপাতিকভাবে নির্বাচনের কোনো ব্যবস্থাকে আমরা সমর্থন করবো না। কারণ এখানকার মানুষ এটাতে অভ্যস্ত না। এরকম ভোটের প্রশ্নই উঠতে পারে না। 

মতপার্থক্য থাকলেও ভোটের প্রস্তুতি সবার
কালের কণ্ঠ লিড করেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য তৈরি হলেও জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে সবাই তৎপর। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো আশা করছে, ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশনও সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটে যোগ দিয়ে এক অধিবেশনে আবারও বলেছেন, তাঁর সরকার যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করবে।


এটা এ বছরের ডিসেম্বরেও হতে পারে।তবে জামায়াতে ইসলামী ডিসেম্বরকে সেভাবে গুরুত্ব দিতে রাজি নয়। দলটি বলেছে, ‘সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যদি ডিসেম্বরে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে তাতে আমাদের আপত্তি নেই। মাস আমাদের কাছে ফ্যাক্টর না।

নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে মাস লাগে সেই মাসের জন্য আমরা প্রস্তুত।’ এ ছাড়া দলটি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, ‘আমরা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মানব না।’ বাম দলগুলোও আশা করছে, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন হবে।

এটিআর/এমএইচএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর