মিসরে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু, কার্যকারিতা নিয়ে শঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:৫৬
-67c1885c6a8df.jpg)
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে প্রতিবেশী দেশ মিসরে আলোচনা শুরু হয়েছে।
শনিবারে (১ মার্চ) শেষ হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহের মেয়াদ। তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) মিসরের রাজধানী কায়রোতে শুরু হয়েছে এই আলোচনা। দেশটির সরকারি তথ্য সেবা দপ্তর এক বিবৃতির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রথম দিন চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে ইসরায়েল, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে।
মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো গাজাবাসীর জন্য মানবিক সহায়তা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা করেছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
চুক্তির প্রথম ধাপে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভোরে ৪ ইসরায়েলি জিম্মির লাশ হস্তান্তর করেছে হামাস। বিনিময়ে গত শনিবারের স্থগিত হওয়া বন্দিসহ ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির নিয়ম অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তির কথা রয়েছে। এ ছাড়াও গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে সেনা প্রত্যাহার করার শর্তও রয়েছে। এরপর তৃতীয় ধাপে হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় মৃত জিম্মিদের লাশ ফেরত আনার কথা।
ইসরায়েলের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে হামসের হাতে ৫৯ ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতার পঞ্চম পর্যায়ে তিন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির পর হামাসকে নির্মূল করার ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। পরবর্তীকে তাকে সমর্থন করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
অন্যদিকে, প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েলের বর্বর হামলা সত্ত্বেও নতজানু হয়নি হামাস। যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছের হামাসের। এ ছাড়া নিজেদের অনেক সেনা প্রাণ হারালেও অস্ত্র ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল হামাস যোদ্ধারা। এ পরিস্থিতিতে আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে আশঙ্কা রয়েই যায়।
অবশ্য চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলতে থাকবে।
এদিকে, আলোচনা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানান, যুদ্ধবিরতির শর্তানুযায়ী গাজার ফিলাডেলফি করিডোর থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে না।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎস জানান, সম্প্রতি করিডোরটি পরিদর্শনকালে তিনি সেখানে একটি সুড়ঙ্গ দেখতে পেয়েছেন। তবে নিজের বক্তব্যের সপক্ষে কোনো প্রমাণ উত্থাপন করেননি।
অবশ্য মিসর ওই সুড়ঙ্গ ধ্বংস করছে বলে জানিয়েছে। পরে দেশটি সেখানে সামরিক বাফার জোন স্থাপন করেছে বলে নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলের এই ঘোষণাকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে বিবৃতি দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি জানিয়েছে, চুক্তি মেনে না চললে বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।
হামাস ও ইসরায়েলের এই কঠোর অবস্থান যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিএইচ/