পালালেন বাশার আল আসাদ
সিরিয়ায় ৫৪ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪
সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের স্বৈরশাসন শেষ হয়েছে। বিদ্রোহীরা সিরিয়াকে ‘মুক্ত’ ঘোষণা করে বলছে, ‘অত্যাচারী’ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়েছেন।
হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) টেলিগ্রামে বলেছে, একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হয়েছে এবং নতুন যুগের সূচনা হলো।
বিদ্রোহীরা বলেছে, আসাদ সরকারের অর্ধ শতাব্দীর শাসনামলে বাস্তুচ্যুত ও কারাগারে বন্দী লোকেরা এখন ঘরে ফিরতে পারবে। এটি হবে একটি ‘নতুন সিরিয়া’ যেখানে ‘সবাই শান্তিতে বসবাস করবে এবং ন্যায়বিচারের বিজয় হবে’।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাজধানী দামেস্ক ছেড়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স সিরিয়ার দুই সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, বাশার অজানা গন্তব্যে চলে গেছেন।
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা রোববার বলেছে, তারা কোনো বাধা ছাড়াই রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করেছে।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সিনিয়র ফেলো নাতাশা হল বিবিসি রেডিও-ফাইভ লাইভে বলেন, সত্যিই মনে হচ্ছে আমরা সিরিয়ায় ৫৪ বছরের অত্যাচারের শেষ দেখতে পাচ্ছি।
আসাদ পরিবারের শাসনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা ১৯৭০ সালে শুরু হয়েছিল।
তিনি বলেন, সিরিয়ায় যা ঘটেছে তা অন্যান্য ঘটনাগুলোর সাথে যুক্ত। এর মধ্যে রয়েছে ইরান ও রাশিয়াসহ আসাদের মিত্ররা বিভিন্ন যুদ্ধে ‘দুর্বল’ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, সিরিয়ার ৯০ ভাগ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে বাস করছে। অনেকে বাস্তুচ্যুত শিবিরে খুব খারাপ জীবনযাপন করছে। তারা সত্যিই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল।
প্রেসিডেন্ট আসাদের পলায়নের খবরে অনেকেই খুশি হবেন। কিন্তু এরপর কী হবে তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে।
হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নামে পরিচিত একটি ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা বছরের পর বছর ধরে আল-কায়েদার সাথে সংযুক্ত। যদিও তারা একটি জাতীয়তাবাদী শক্তি হিসাবে নিজেদেরকে নতুনভাবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।
কিন্তু অনেকেই বলছেন, তারা একটি অত্যন্ত সহিংস সংগঠন। পরবর্তীতে কী হতে পারে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউনাইটেড নেশন্স হিউম্যান রাইটসের তথ্য অনুযায়ী, সিরিয়ায় ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গৃহযুদ্ধে সিরিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ লাখ ৫ হাজারেরও বেশি সংখ্যক মানুষ।
ওএফ/এনআর/