গাজায় পানি অবকাঠামো ধ্বংসের জন্য ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞার আহ্বান
বাসস
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৫
ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় পানির অবকাঠামো ধ্বংস ও বেসামরিক লোকদের সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে গণহত্যামূলক কার্যকলাপের জন্য ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায় তারা।
জেরুজালেম থেকে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষভাবে পানি সমস্যার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে নিউইয়র্কভিত্তিক এই মানবাধিকার সংস্থা তাদের নতুন প্রতিবেদনে বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে বলেছে যে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড গাজাবাসীকে পানি থেকে বঞ্চিত করার লক্ষ্যে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাকৃত একটি পদ্ধতিগত প্রচেষ্টা। যা সম্ভবত হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ এবং ভবিষ্যতেও আরো মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
এইচআরডব্লিউ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজা উপত্যকায় বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত পানি পেতে ফিলিস্তিনিদের ইচ্ছাকৃতভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে।’
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এছাড়া সোলার প্যানেল পাওয়ারিং ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, জলাধার ও খুচরা যন্ত্রাংশের গুদাম ও সেইসাথে জেনারেটর চালাতে ব্যবহার্য জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করাসহ পানি ও স্যানিটেশন অবকাঠামোর ইচ্ছাকৃত ক্ষতিসাধন করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েল বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ, মেরামত কর্মীদের ওপর হামলা এবং মেরামত সামগ্রী আমদানিও বাধাগ্রস্ত করেছে।
প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার অস্তিত্ব আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তবে ইসরায়েল গাজায় তাদের ইচ্ছাকৃত ধ্বংসযজ্ঞের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। অবরুদ্ধ অঞ্চলে সহায়তা পৌঁছানোর সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেছে।
প্রায় এক বছর ধরে তৈরি করা এইচআরডব্লিউ প্রতিবেদনটি কয়েক ডজন গাজাবাসী, পানি ও স্যানিটেশন কর্মী, চিকিৎসক এবং সাহায্য কর্মীদের সাথে সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি স্যাটেলাইট চিত্র, ছবি, ভিডিও এবং ডেটা বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। এটি বলেছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তথ্যের জন্য অনুরোধ জানালে তার জবাব দেয়নি।
এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, পানির অভাব ও পানিবাহিত রোগ গাজাবাসীর জনজীবনকে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। অধিকার গোষ্ঠীটি ইসরায়েলকে গাজায় পর্যাপ্ত পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অবিলম্বে নিশ্চিত করতে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গাজায় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম সৃষ্ট গণহত্যা প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়াসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এর মধ্যে সামরিক সহায়তা ও অস্ত্র বিক্রি বা স্থানান্তর বন্ধ, লক্ষ্যবস্তুভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও কূটনৈতিক সম্পর্ক পর্যালোচনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ডিআর/এসবি