নিজেদের বিমানে গুলি, যা ঘটল দুই মার্কিন সেনার সাথে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:২৩
ছবি : সংগৃহীত
লোহিত সাগরের আকাশসীমায় একটি মার্কিন যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এ ঘটনায় বিধ্বস্ত বিমানের দুই পাইলটকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সামান্য আহত হয়েছেন। এই ঘটনাকে গত এক বছরের মধ্যে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর আক্রমণের সবচেয়ে গুরুতর ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোহিত সাগরের আকাশসীমায় ভুল করে আমেরিকান একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে। সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধবিমান এফ/এ-১৮ হর্নেটের উভয় পাইলটই নিরাপদে বিমান থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে একজন সামান্য আহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে লোহিত সাগরে ভুলক্রমে ছোঁড়া নিজেদের গুলিতে যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার তথ্য নিশ্চিত করেছে সেন্ট্রাল কমান্ড। এছাড়া লোহিত সাগরের আকাশে হুতিদের একাধিক ড্রোন ও জাহাজ-বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টকম।
বিবৃতিতে মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ওই সময় তারা ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করছিল। তবে তারা তাদের মিশন সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমানটি ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরী থেকে উড্ডয়ন করেছিল। পেন্টাগনের সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, বিমানটি ভুলক্রমে ইউএসএস গেটিসবার্গ থেকে আক্রমণের শিকার হয়েছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনী আরও জানায়, রণতরী এবং বিমানগুলোর মধ্যে রাডার এবং রেডিও যোগাযোগের মাধ্যমে একে অপরকে শনাক্ত করার ব্যবস্থা থাকে, কিন্তু তারপরও গেটিসবার্গ কীভাবে বিমানটিকে শত্রু বিমান বা মিসাইল হিসেবে ভুল বুঝে গুলি করেছে, তা পরিষ্কার হয়নি।
এর আগে শনিবার ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র গুদাম এবং কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টার লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা চালানোর দাবি করার পরপরই লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ভূপাতিত যুদ্ধবিমানটি ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে চালানো সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছিল কি না, তা পরিষ্কার নয়। এর আগে, সেন্ট্রাল কমান্ড বলেছিল, হুতিদের কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত এবং হামলার সক্ষমতা ধ্বংস করার লক্ষ্যে শনিবার ভোরের দিকে সানায় হামলা করা হয়েছে। দক্ষিণ লোহিত সাগর, বাব আল-মান্দেব এবং এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ ও মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের বিরুদ্ধে হুতিদের হামলার সক্ষমতা হ্রাস করাই ছিল এই হামলার লক্ষ্য।
গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার জবাবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে হুথি বিদ্রোহীরা। প্রথম দিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোতে হামলা চালালেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক জাহাজেও হামলা চালাচ্ছে এই গোষ্ঠীটি।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে গত বছরের ১৯ নভেম্বর থেকে এডেন উপসাগর ও লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে হুথি বিদ্রোহীরা। ইয়েমেনের সর্বাধিক জনবহুল এলাকার নিয়ন্ত্রণকারী এই গোষ্ঠীর অনবরত হামলায় বৈশ্বিক পণ্য পরিবহনের অন্যতম প্রধান এই জলপথে ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে।
এসবি