Logo
Logo

আন্তর্জাতিক

‘অতিথি’ পরিচয়ে পাকিস্তান বিরোধী জঙ্গিদের সুরক্ষা দেওয়ার ইঙ্গিত তালেবানের

Icon

ভয়েস অব আমেরিকা

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:১১

‘অতিথি’ পরিচয়ে পাকিস্তান বিরোধী জঙ্গিদের সুরক্ষা দেওয়ার ইঙ্গিত তালেবানের

ছবি : সংগৃহীত

গত মঙ্গলবারের হামলায় আফগানিস্তানের পাকতিকায় প্রায় ৫০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। শরণার্থীদের বেশিরভাগই পাকিস্তান থেকে আসা বলে দাবি করেছেন তালেবানের তথ্যমন্ত্রী খায়রুল্লাহ খাইরখোয়া।

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত প্রদেশে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী অবস্থানে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর বিমান হামলা করার কিছুদিন পরই এ ধরনের মন্তব্য করলেন তিনি। 

অন্য সূত্র থেকে এই দাবির সত্যতা যাচাই করা না গেলেও জাতিসংঘ বলেছে, পাকিস্তানের বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ কয়েক ডজন বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার ব্যাপারে তারা প্রত্যন্ত আফগান প্রদেশ থেকে ‘বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ পেয়েছে।’

এদিকে ইসলামাবাদ প্রকাশ্যে যদিও এই আন্তঃসীমান্ত হামলার কথা স্বীকার করতে বিরত থেকেছে, তবে পাকিস্তানি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তারা সংবাদদাতাদের বলেন, সামরিক অভিযানটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী হামলায় জড়িত একটি নিষিদ্ধ গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এর বিরুদ্ধে ছিল। তারা তাদের বেশ কয়েকটি ‘সন্ত্রাসী আস্তানা’ ধ্বংস করেছে। এতে নিহত এক ডজনেরও বেশি জঙ্গির মধ্যে টিটিপির বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কমান্ডারও রয়েছেন বলে জানানো হয়। 

পাকিস্তানি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে ক্ষুব্ধ খাইরখোয়া বলেন, ‘এই অতিথি, বন্ধুদের রক্ষায় আফগান জাতির ঐতিহ্যকে অবশ্যই আমাদের সম্মান জানাতে হবে।’

শুক্রবার তালেবান নিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) প্রচারিত এই ভাষণটিতে তিনি বাহ্যত টিটিপি’র কথাই বলেছেন। 

এই তালেবান মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ১৯ শতক থেকে আফগানিস্তানে যথাক্রমে ব্রিটেন, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের পরিণতি থেকে শিক্ষা নিতে হবে পাকিস্তানকে।

খায়েরখোয়া বলেন, ‘আফগানিস্তানে হামলা চালাবে যাদের এই ইচ্ছা আছে, অতীতের তিনটি পরাশক্তির পরাজয় থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত তাদের।’ 

টিটিপিকর্মীদের আফগানিস্তানে উপস্থিতি সম্পর্কে কোনও জ্যেষ্ঠ তালিবান নেতার এটিই প্রথম প্রকাশ্য স্বীকারোক্তি। এর আগে, তালেবান কর্মকর্তারা জোরালোভাবে তাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিলেন। তারা দাবি করেছিলেন যে, কোনও বিদেশি জঙ্গিকে আফগানিস্তানের মাটিতে অন্য দেশের প্রতি হুমকি হিসেবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয় না । 

জাতিসংঘ টিটিপিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেছে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে তালেবান কাবুলের ক্ষমতা আবার গ্রহণের পর পাকিস্তানে তাদের আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এতে শত শত পাকিস্তানি বেসামরিক ও সামরিক লোকজন নিহত হয়েছে। 

শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আফগানিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে তার সরকারের ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেন। তবে টিটিপির নেতৃত্বাধীন আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের হুমকি সেই অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

শুক্রবার পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, যে তাদের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান এবং টিটিপির সাথে সংঘর্ষের ফলে এই বছর ৯০০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ২৭ জন আফগান আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী এবং যোদ্ধাও রয়েছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানিয়েছেন, সহিংসতায় পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৪০০ সদস্য ও কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

এসবি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর