ছবি : ভয়েস অব আমেরিকা
এবার আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করল দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মনানগাগওয়া এক আইনে স্বাক্ষর করার পর দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডে থাকা প্রায় ৬০ জন বন্দির সাজা পরিবর্তন হচ্ছে।
২০০৫ সালের পর থেকে জিম্বাবুয়ে আর কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেনি, তবে আদালত হত্যা, রাষ্ট্রদ্রোহ এবং সন্ত্রাসবাদের মতো অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড প্রদান অব্যাহত রেখেছিল। ২০২৩ সালের শেষের দিকে দেশটির ৬০ জনের মতো বন্দি মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, কোনো অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি প্রদান করা যাবে না এবং বিদ্যমান সকল মৃত্যুদণ্ডের সাজা এখন কারাবাসে রূপান্তরিত হবে।
এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলছে, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’। তবে, সংস্থাটি সতর্ক করে দিয়েছে যে, জরুরি অবস্থার সময়কালে মৃত্যুদণ্ড পুনরায় চালু করা হতে পারে।
লন্ডনভিত্তিক দ্য ডেথ পেনাল্টি প্রজেক্টের নির্বাহী পরিচালক পারভাইজ জাব্বার বলেন, ‘জিম্বাবুয়ে এখন বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ দেশগুলির মধ্যে স্থান করে নিল, যারা আর মৃত্যুদণ্ড ব্যবহার করে না। আফ্রিকার অনেক দেশ এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবাধিকার বিজয়।’
জিম্বাবুয়ের বিচারমন্ত্রী জিয়াম্বি নতুন এই আইন সম্পর্কে বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের বিলুপ্তি শুধুমাত্র একটি আইনি সংস্কার নয়, এটি ন্যায়বিচার ও মানবতার প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের একটি শক্তিশালী বার্তা।’
তবে, কিছু মানুষের মতামত ভিন্ন। তারা মনে করেন, মৃত্যুদণ্ডের প্রবর্তন ছিল অপরাধীদের জন্য এক ধরনের ভীতি, যা বর্তমানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তাদের ভাষ্য, ‘মৃত্যুদণ্ড ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধক ব্যবস্থা, এখন মানুষ খুন করতে ভয় পাবে না।’
উল্লেখ্য, এই আইনের মাধ্যমে জিম্বাবুয়ে আফ্রিকার ২৪টি দেশের তালিকায় যুক্ত হলো, যারা সম্পূর্ণভাবে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করেছে।
এটিআর/