বিচিত্র খবর
হাড় কাঁপানো শীতে শুধু অন্তর্বাস পরেই লন্ডনের মেট্রোতে বহু মানুষ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:১৬
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা সহ্য করেই ঘুরছেন বহু মানুষ। রোববার সকালে শূন্য ডিগ্রির কম তাপমাত্রার মধ্যেই মেট্রোরেলে জুড়ে প্যান্টবিহীন নারী-পুরুষদের দেখা গেছে। নো ট্রাউজার্স টিউব রাইড বা ‘প্যান্টবিহীন মেট্রো ভ্রমণ’ করতেই অভিনব এ আয়োজন করা হয় লন্ডনের মেট্রো রেল নেটওয়ার্কে।
২০০২ সালের জানুয়ারিতে নিউইয়র্কে মাত্র সাতজন লোক নিয়ে চালু হয়েছিল। লন্ডনে এ বছরে অনেকে অংশ নেয়। এটি দিন দিন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
লন্ডনের সাউথ কেনসিংটন ও ওয়েস্টমিনস্টারের মতো প্রধান মেট্রো স্টেশনগুলোতে অন্তর্বাস ও জাঙ্গিয়া পরিহিত নারী-পুরুষ দেখে চমকে উঠেন সাধারণ যাত্রীরা। রোববার বিকেলে লন্ডনের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠেছিল।
এরই মধ্যে পিকাডিলি লাইন ও সার্কেল লাইনে অর্ধউলঙ্গ যাত্রীদের দেখা মেলে। তাদের নানা কর্মকাণ্ডে পথচারীরাও লজ্জায় পড়ে যান। আর চায়নাটাউনের নিউপোর্ট থেকে একটি দলকে পছন্দের অন্তর্বাস পরে খালি পায়ে মেট্রোর দিকে যেতে দেখা গেছে।
ওয়াটারলু স্টেশনেও নারীদের নানা রঙের অন্তর্বাস পরে পায়ে পা মিলিয়ে নাচতে দেখা গেছে। অন্যদের এস্কেলেটরে নেমে কিংবা প্ল্যাটফর্মে সেলফি তুলতে দেখা গেছে।
অনেকে মেট্রোর বগির ভেতরে বিভিন্ন ধরনের অন্তর্বাস পরে ছবি তুলেছেন। এসব দেখে বেশিরভাগ মানুষদের হাসছিলেন।
এই বছর নো ট্রাউজার্স রাইডার সংগঠকদের এবারের বিষয়বস্তু ছিল, ‘প্যান্ট যতটা সম্ভব নিচে বা কোনো রকমে ঝুলিয়ে রাখা। যাতে দেখে যেন মনে হয় প্যান্ট পরতে ভুলে গেছে।’ অংশগ্রহণকারীদের সম্পূর্ণ স্বাভাবিক আচরণ করতে বলা হয়। পাশাপাশি প্যান্টবিহীন অবস্থায় পড়া বা গান শোনার মাধ্যমে কাটানোর জন্য উৎসাহিত করা হয়।
এর উদ্ভাবক চার্লি টড বিবিসিকে বলেছেন, ‘পুরো বিষয়টি খুশি, আনন্দ আর বিভ্রান্তির মাধ্যমে অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত সৃষ্টি করা। এই আয়োজন টিকে থাকতে দেখে আমি খুব খুশি। এটি শুধু মজা করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘এটি কাউকে উত্তেজিত বা বিরক্ত করার জন্য নয়। আমি আশা করছি এই চেতনা অব্যাহত থাকবে।’
নো ট্রাউজার্স টিউব রাইড ২০০৯ সালে শুরু হয়েছিল। এটি ২০০২ সালে নিউইয়র্কে ‘নো প্যান্ট সাবওয়ে রাইড’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শুরু হয়। এটা শুধু আনন্দের জন্য। এর সাথে কোনো রাজনৈতিক বা দাতব্য কোনো প্রতিষ্ঠান জড়িত নয়।
নিউইয়র্ক সিটির প্রথম ওই আয়োজনে সাতজন প্যান্টবিহীন পুরুষ পাতাল রেলে চড়েছিলেন। প্রতিটি স্টপেজে একজন করে পরপর সাতটি স্টপেজ থেকে সাতজন উঠেছিলেন। পরে ট্রেন থামিয়ে মোট আটজনকে আটক করা হয়। তাদেরকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বাতিল করে মুক্তি দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পরের বছর শত শত মানুষ এই আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে ৯টি শহরে এ আয়োজন শুরু হলে তা আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠে।
২০১০ সাল থেকে নিউইয়র্কের হাজারো বাসিন্দা এই আয়োজনে অংশ নেন। বার্লিন, লিসবন, টোকিও ও টরন্টোসহ বিশ্বের ৬০টিরও বেশি শহরে এই আয়োজন বছরে একদিনের জন্য আয়োজন করা হয়।
ওএফ