Logo

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মার্কিন-ভারত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪০

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মার্কিন-ভারত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনা

ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শংকর। তবে সেই কথাবার্তার বিস্তারিত বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলেননি তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (২২ জানুয়ারি) ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে জয়শংকর জানান, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

পৃথক প্রতিবেদনে ভারতীয় বার্তাসংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, নতুন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ওয়াল্টজ এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সময় বাংলাদেশের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। 

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তাদের সাথে তার আলোচনার বিষয়ে ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত কথা বলা ঠিক হবে না।’

গত সোমবার ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর। এদিকে ভারতীয় ও মার্কিন কূটনীতিকরা আগামী মাসে (ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাঝে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। চীনকে মোকাবিলা করার প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি ও নিজ নাগরিকদের সহজে দক্ষ কর্মী ভিসা প্রাপ্তিতে আগ্রহী মার্কিন কৌশলগত অংশীদার ভারত। দুই দেশের সরকার প্রধান বৈঠকে মিলিত হলে তাদের এজেন্ডায় এ দুটি বিষয় থাকবে।

এদিকে পদে আসীন হয়েই মার্শা বার্নিকাটকে বাংলাদেশ নীতির প্রধান পরিকল্পনাকারীর পদ থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনিতেই আমেরিকায় একটি সরকারের বদল ঘটলে আমলাদের বদলির ঘটনা স্বাভাবিক। তবে এই বার্নিকাটকে বদলির নেপথ্যে অনেক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞই একটি 'বার্তা' খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে হাসিনা সরকারের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। হাসিনা বারবার আমেরিকার দিকে আঙুল তুলেছিলেন। এদিকে হাসিনার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আর এই আবহে অনেকেরই ধারণা, বাংলাদেশে পালাবদলের নেপথ্যে হাত ছিল আমেরিকার। যদিও আমেরিকা সেই কথা স্বীকার করে না।

এর আগে মার্কিন নির্বাচনের কিছুদিন আগে দিপাবলি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ইস্যুতে সরব হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তিনি লিখেছিলেন, 'অশান্ত বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন। সেখানে লুঠপাট চলছে। আমি এর তীব্র ভাষায় নিন্দা জানাচ্ছি। আমি ক্ষমতায় থাকলে, এমন কখনও হতো না। 

এদিকে ড. ইউনূস 'ট্রাম্প বিরোধী' হিসেবেই পরিচিত। মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে তিনি অস্বস্তিতে আছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। এর আগে ২০১৬ সালে প্রথম দফায় ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে প্যারিসে এক অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস বলেছিলেন, 'ট্রাম্পের এই জয় সূর্য গ্রহণের মতো। কালো দিন আসছে। তা যেন আমাদের গ্রাস না করে, আত্মশক্তিকে দুর্বল না করে দেয়।'

এর পরে যখন বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিল, তখন ট্রাম্প বলেছিলেন, 'ঢাকার মাইক্রোফাইন্যান্সের সেই ব্যক্তি কোথায়? শুনেছি, তিনি আমাকে হারাতে চাঁদা দিয়েছিলেন।' 

মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের এই টানাপোড়েনের মাঝে বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি কি হয়, সেদিকে নজর রয়েছে সবার। এর মধ্যেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনার তাই গুরুত্বপূর্ণ অর্থবহন করছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

এসবি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর