Logo

জীবনানন্দ

নিবন্ধ

শ্রমের মর্যাদা

Icon

নাবিল ওয়ালিদ

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:১৪

শ্রমের মর্যাদা

মানুষ তার পরিশ্রম ও কর্মের মাধ্যমে অন্যদের কাছে সম্মানিত হয়। একজন দায়িত্বশীল মানুষের কারণে একটি পরিবার টিকে থাকে। সৌন্দর্য ও রূপ দিয়ে বেশি দূর যাওয়া সম্ভব নয়। সৌন্দর্যের মোহ কেটে গেলেই মানুষের মৌলিক কাজ ও কঠোর পরিশ্রমের ফল বিচ্ছুরিত হতে থাকে।  

পরিশ্রম যত বেশি, প্রাপ্তিও ততখানি। আর আলস্যে, অকর্মণ্যতায় যেকোনো সম্ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে। মানুষ অনেক সময় অন্যদের অযথা বিলাসিতা ও অযোগ্যতাকে তিরস্কার করে। সূর্য ওঠার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কত খাটুনি খাটতে হয় পরিশ্রমীদের।  

একটি গ্রামীণ পরিবারের কর্তা ও কর্ত্রীকে এত কাজ করতে দেখে আমি হতভম্ব হলাম। ছোট একটা উঠোনে একটি পেয়ারা গাছ, বড়ই গাছ, আর এক কোণে মুরগির ঘর। মানুষ যখন কর্মঠ হয়, তখন কাজের শেষ থাকে না। আমি আমার এক খালামনিকে এত কাজ করতে দেখে বলি, ‘খালামনি, কাজ খোঁজে না, বরং কাজ খালামনিকে খোঁজে তা করার জন্য।’  

সেই লোকটি প্রথমে ছাদ ঝাড়ল, গাছে পানি দিল, আগাছা কেটে পরিষ্কার করল। দা নিয়ে টুকটাক কাটাকাটি শেষে মুরগির ঘরে হাত দিল। ঘরটি রীতিমতো দুর্গন্ধময় ছিল। মুরগিগুলোকে ওপরে শিফট করল। তাই ওপরের ঘর ঠিক করে ওদের সেখানে নিয়ে গেল এবং নিচে ছোট ছানাগুলো রেখে দিল। ছানাগুলো সারাদিন কিচির কিচির করে, সামনে গেলে জড়ো হয়ে কাছে আসে। রোদের আলো পাতার ফাঁক দিয়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ে। লাউয়ের জাংলা থেকে কচি লাউটা বিশেষ যত্নে বেড়ে ওঠে।  

নানান কাজ— বাইরে দৌড়াদৌড়ি, ব্যবসার মালামাল কেনা, মার্কেটে ঘোরা ইত্যাদি কাজেই লোকটির দিন পার হয়ে যায়। এতকিছুর পর আল্লাহ তায়ালা তাকে তাবলীগের কাজে যুক্ত রেখেছেন। সেখানেও সময় দিচ্ছেন।  

মানুষের এসব বিষয় আমার চোখ খুলে দেয়। আমাকে ভাবায়, আসলে জীবনের গতি কী? কোথায় গিয়ে থামতে হয়; কখন বিশ্রাম করতে হয়? মাত্র তো জীবন শুরু হলো। যাদের অর্ধেক সময় পার হয়ে গেছে, তাদের সফলতা বা ব্যর্থতার দুটি ঝলক আমি দেখি। কেউ তার শ্রমে-ঘামে নিজের লক্ষ্যপূরণে পৌঁছেছে, আর কেউ হয়ত এখনো জীবনে গুছিয়ে উঠতে পারেনি। শুরুর দিনের মতো ক্লান্ত হয়ে আছে।  

কাজের ধরন অনেক! যারা শহরে আছেন, তাদের জীবন এক, গ্রামীণ জীবন আরেক। কিন্তু পরিশ্রম সবারই এক। আর কর্ম ও শ্রমের ফল মিষ্টিই।  

নাবিল ওয়ালিদ : শিক্ষক উইজডোম একাডেমি  

  • বাংলাদেশের খবরের জীবনানন্দ (সাহিত্য) বিভাগে লেখা পাঠান এই মেইলে- [email protected] 

এমএইচএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর