অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য প্রয়াত উপদেষ্টা
হাসান আরিফের বর্ণাঢ্য জীবন
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:২২
অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য প্রয়াত উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ ১৯৪১ সালের ১০ জুলাই ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার বিখ্যাত সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে শুরু হয় তার শিক্ষাজীবন। সেখানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার পরিবারের আইনের প্রতি অনুরাগ তাকে এই পেশায় উৎসাহিত করে।
পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালে হাসান আরিফ কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তার পেশাগত জীবন শুরু করেন। এর কয়েক বছর পর ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকায় ফিরে তৎকালীন পাকিস্তান হাইকোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে প্র্যাকটিস শুরু করেন।
তার কর্মজীবনে বিশেষ একটি অধ্যায় ছিল ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন। এ সময়ে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক মামলা পরিচালনা করেন এবং রাষ্ট্রের আইনি পরামর্শদাতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে তার নিয়োগ তাকে একটি নতুন পর্যায়ে নিয়ে যায়। তিনি এই সময়ে আইন সংস্কারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
এ. এফ. হাসান আরিফ অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্বপালনকালে দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি তার পেশাগত দক্ষতা এবং নিরপেক্ষতায় এক উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলায় তার উপস্থাপনা এবং যুক্তি তাকে একটি প্রথিতযশা আইনজীবী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে।
২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আইন, বিচার, সংসদ, ভূমি এবং ধর্ম বিষয়ক দপ্তরের দায়িত্ব নিয়ে তিনি প্রশাসনের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তার সময়ে বিভিন্ন আইনি সংস্কার এবং প্রশাসনিক নীতিমালা তৈরিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ. এফ. হাসান আরিফ মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে দেশ হারিয়েছে একজন বিশিষ্ট আইনজীবী, দক্ষ প্রশাসক এবং সৎ মানুষকে। তার কর্মময় জীবন এবং অবদান আইন পেশায় অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
এআরএস/এমএইচএস