মেলেনি শতভাগ নতুন বই
কেউ হতাশ, কারও মুখে হাসি
তরিকুল ইসলাম সুমন
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:২২
পৌষের কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে নতুন বছরের প্রথম দিনেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বল্প পরিসরে বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণ কার্যক্রম হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এবার বিগত বছরগুলোর মতো বই উৎসব হচ্ছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎসবের আমেজ না থাকলেও নতুন বছরের শুরুতেই নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মেতে উঠেছে শিক্ষার্থীরা।
তবে নতুন বইয়ের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় শিক্ষার্থীরা শতভাগ নতুন বই পায়নি। মাধ্যমিকে এখন পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ বই পৌঁছায়নি। প্রাথমিকে ৪৫ শতাংশ বই পেলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সব বই প্রতিষ্ঠানগুলোয় যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল বছরের প্রথম দিনে অনেক শিক্ষার্থীই নতুন বই স্পর্শ করতে পারেনি। ১ জানুয়ারি থেকে এসব বই শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য শিক্ষা অফিস কাজ করলেও বই সংকটের কারণে বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাটা পড়েছে।
ঢাকা শহরের প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির সব বই এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সপ্তম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই পেয়েছে বিদ্যালয়গুলো। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দু-একটি ক্লাসের কিছু বই দেওয়া হলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থী ফিরেছে খালি হাতে। প্রয়োজনীয় বই ছাপা না হওয়ার কারণে এ বছর হয়নি বই উৎসবও। তবে কবে নাগাদ শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই পাবে তার নিশ্চয়তা বা প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বছরের প্রথম দিন সব শিক্ষার্থীর হাতে পাঠ্যবই পৌঁছাতে না পেরে দুঃখ প্রকাশও করেছেন তিনি।
গতকাল রাজধানী ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন ও মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলছেন, ‘১৫ জানুয়ারি’, আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলছেন, ‘৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই দেওয়া যাবে।’ আমি কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো কমিটমেন্ট দেব না। পাঠ্যবই কবে ছাপা শেষ হবে, তা নিয়ে আমি কিছু বলব না।
বই ছাপার প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে কিছু কথা বলব। আমি মনে করি, পাঠ্যবই ছাপার কাজটা এবার শেষ পর্যন্ত যুদ্ধের মতো হয়েছে। প্রথম সমস্যাটা হলো, আমরা বিদেশে বই ছাপাব না। তারপর শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে অনিবার্য কারণে, তাতে বইয়ের সংখ্যা বেড়েছে। যখন কাজ শুরু করা হয়েছিল, সেটা অনেক দেরিতে হয়েছে। অনেক বই পরিমার্জন করতে হয়েছে। রাজনীতিতে নিরপেক্ষ বলে কিছু থাকে না, দলীয় রাজনীতি নিরপেক্ষ সব কিছু যেন বইয়ে থাকে, সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে।
বই ছাপার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, শিশুদের কাছে বই যাবে, সেটা ভালো কাগজে ছাপা না হলে তো হয় না। সে জন্য উন্নতমানের ছাপা, উন্নতমানের কাগজ ও মলাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া এনসিটিবিতে আগে যারা কাজ করেছেন, তাদের অনেককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাদের বসানো হয়েছে, তারা অনভিজ্ঞ। কিন্তু মুদ্রণশিল্প সমিতির যে নেতা, তাদের সঙ্গে কীভাবে বোঝাপড়াটা করতে হয়, এটা তাদের অভিজ্ঞতায় নেই। সেটা করতে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমাকেও এর মধ্যে ঢুকতে হয়েছে। কাগজের মান ঠিক রাখা এবং আমাদের বই ছাপানোর কাজ বাদ দিয়ে যাতে নোটবই ছাপার কাজ না হয়, সে বিষয় তদারকির জন্য ঢাকার শিক্ষকদের পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার টিমের মাধ্যমেও নজরদারি চলছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, বই ছাপানোর কাজে পদে পদে ষড়যন্ত্র ছিল, যা অতিক্রম করা হয়েছে। আজও কোনো কোনো জেলায় ষড়যন্ত্র করে বই আটকে রাখা হয়েছিল। বই ছাপানোর কাজে অনেক প্রেসের মালিক, কাগজ উৎপাদনকারী সংস্থা বর্তমানের কম মূল্যে কাগজ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। এখনই সব বই ছাত্রছাত্রীর হাতে পৌঁছাতে না পেরে আমি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এবং তাদের অভিভাবকদের প্রতি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। সান্ত্বনা এতটুকুই, বইগুলো আগের চেয়ে সুন্দর হবে এবং বছরের মাঝখানে মলাট ছিঁড়ে যাবে না।
গল্পের একেবারে শেষে না গিয়ে যেমন ষড়যন্ত্রকারীকে বোঝা যায় না, এখানেও তেমন। সেটা সরকারের কেউ হোক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হোক, এনসিটিবির হোক, মজুতদার হোক, সিন্ডিকেট হোক; মানে যে কেউ হতে পারে। তবে এখনই আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামী দিনে আমরা একচেটিয়া ব্যবসা কমিয়ে আনব। এটা আমাদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে থাকবে।
নতুন যে শিক্ষাক্রম আওয়ামী লীগ সরকার করেছিল, তা বাস্তবায়নযোগ্য নয় জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেকে সমালোচনা করছেন, কেন পেছনের শিক্ষাক্রমে ফিরে গেলাম আমরা। আমি মনে করি, যে শিক্ষাক্রম করা হয়েছিল নতুন করে, সেটাতে থাকলে শিক্ষার্থীরা আরও পশ্চাৎপদে যাওয়া হতো। দুই বছর এ শিক্ষাক্রম চালিয়ে গেলে সেখান থেকে ফেরার উপায় ছিল না। সেটা সহজও হতো না। সেজন্য আমরা সাময়িকভাবে পেছনের শিক্ষাক্রমে গেছি। এটা আবার এগিয়ে নেওয়ার কাজ করা হবে। এবার কিছু পরিমার্জন হয়েছে। আগামীতে আরও পরিমার্জন করা হবে। যাতে শিক্ষাক্রমে ধারাবাহিকতার কোনো ঘাটতি না থাকে।
সরেজমিন রাজধানীর শাহজাহানপুর ও মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির সব বিষয়ের বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি বইও দেওয়া সম্ভব হয়নি। প্রাথমিকের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় এবং মাধ্যমিক স্তরের (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম) শুধু সপ্তম শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বই পাওয়া গেছে, সেগুলো দেওয়া হয়েছে।
আমাদের রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুর প্রতিনিধি জানান, এসব এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কিছু কিছু বই পেয়েছে। এক এক স্কুলে একেক ধরনের বই পেয়েছে। আমাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, স্কুলগুলোতে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সরবরাহ না থাকায় সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বই হাতে পাবেন ১০ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সব বই পেয়েছেন। চতুর্থ শ্রেণি ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সদর উপজেলার ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী সব বই পেয়েছেন বাকি উপজেলাগুলোতে পাননি। তবে এর মাঝেই তাদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে। আর ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পেয়েছেন চারটি বই। এর মাঝে আছে বাংলা প্রথম পত্র, দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি ও গণিত।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম জানান, আমাদের প্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সব বই পেয়েছে। এর মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির সদর উপজেলার ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী বই পেলেও বাকি উপজেলাগুলোতে আজ বই পায়নি।
রংপুর প্রতিনিধি জানান, নতুন বইয়ের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় শিক্ষার্থীরা শতভাগ নতুন বই পায়নি। মাধ্যমিকে এখন পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ বই আসেনি। প্রাথমিকে ৪৫ শতাংশ বই এলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির সব বই আসেনি। এবার অনেক শিক্ষার্থীই বছরের প্রথম দিনে নতুন বই স্পর্শ করতে পারেনি। ১ জানুয়ারি থেকে এসব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য শিক্ষা অফিস কাজ করলেও বই সংকটের কারণে বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাটা পড়েছে।
খরচ এড়াতে ‘বই উৎসব’ বাতিল, উদ্বোধন অনলাইনে
বিনামূল্যে বছরের শুরুতে বই দেওয়া শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। বিগত ১৫ বছর বছরের প্রথম দিনে সরকার ঘটা করে বই উৎসব করত। এটিকে আওয়ামী লীগ সরকার তাদের অর্জনগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবেও দাবি করত। প্রতি বছর ১ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় পৃথক দুটি স্কুলে বড় অনুষ্ঠান করত। এ ছাড়াও বিভাগীয় শহর, জেলা শহর, উপজেলা, পৌরসভা পর্যায়ে ঘটা করে বই বিতরণে অনুষ্ঠান করা হতো। বই উৎসব ঘিরে বড় অঙ্কের অর্থ বাজেট করত সরকার।
নতুন পাঠ্যবইয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-গল্পে পরিবর্তন
চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের নতুন পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস বিষয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার ঘোষণাসহ বেশ কিছু বিষয়ে সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের শহীদদের স্মরণ করে গল্প যুক্ত করা হয়েছে। আবার বেশ কিছু গদ্য, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা বাদ পড়েছে।
পাঠ্যবই পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পঞ্চম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ের নতুন বইয়ে ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক অধ্যায়ের প্রথম অংশে প্রথমে রয়েছে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ছবি। পাশে রয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। জাতীয় চার নেতার ছবিও রয়েছে। পুরনো বইয়ে একই স্থানে শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার ছবি ছিল। নতুন বইয়ে একই অধ্যায়ের ‘পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা’ শীর্ষক লেখায় বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এই আক্রমণের নাম দিয়েছিল অপারেশন সার্চলাইট। ওই রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৬ মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ২৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারও স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।
এদিকে চতুর্থ শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ পাঠ্যবইয়েও স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি রয়েছে। নতুন বইয়ে এ অধ্যায়ের ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক লেখায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ছবির পাশাপাশি মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার ছবি স্থান পেয়েছে। এখানে বিষয়বস্তু হিসেবে বলা হয়েছে, ‘এ রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২৬ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ২৭ মার্চ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে আবারও স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
পুরোনো বইয়ে এ সংক্রান্ত লেখায় শুধু বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ছবি ছিল। আর স্বাধীনতার ঘোষণা-সংক্রান্ত স্থানে লেখা ছিল, ‘এ কালরাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের আগে অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ওয়্যারলেস বার্তায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। এর ভিত্তিতে ২৬ মার্চ শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এ ছাড়া পাঠ্যবই থেকে ইতিহাসবিষয়ক আরও কিছু বিষয়বস্তু বাদ দেওয়া হয়েছে। এত দিন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও পতাকা নির্মাণের নিয়মাবলি এবং জাতীয় সংগীত বাংলা বইয়ের প্রচ্ছদের ঠিক পরের পৃষ্ঠায় ছিল। কিন্তু নতুন বাংলা বইয়ে তা পুনর্বিন্যাস করে বইয়ের শেষ প্রচ্ছদের আগের পৃষ্ঠায় নেওয়া হয়েছে।
তাছাড়া পঞ্চম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ে ছয়টি প্রবন্ধ, কবিতা বা ছড়া নতুন করে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ শীর্ষক প্রবন্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাঈদ ও মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ছবিসহ এ গণঅভ্যুত্থানে সব শহীদকে স্মরণ করে লেখা যুক্ত হয়েছে। এ প্রবন্ধে আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে শহীদ মীর নিসার আলী তিতুমীর থেকে শুরু করে এ বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে শহীদদের স্মরণ করা হয়েছে।
এটিআর/