উপসচিব পদে পদোন্নতি
বৈষম্যের প্রতিবাদে বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৪
উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের কোটার কারণে মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ কর্মকর্তারা সুযোগ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তারা এই অভিযোগ তোলেন।
আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের মুখ্য সমন্বয়ক মফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, প্রশাসন ক্যাডারের কোটার কারণে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডারের মতো প্রফেশনাল ক্যাডারগুলো নীতিনির্ধারণী পদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ৩২ হাজার কর্মকর্তা থাকলেও গ্রেড-১ বা গ্রেড-২ পদে তাদের কেউ নেই। অন্যদিকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা নিজেরাই পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেন।
পরীক্ষাভিত্তিক পদোন্নতির দাবি
আলোচনা সভায় পরিষদের নেতারা প্রশাসন ক্যাডারে কোটার পরিবর্তে মেধা ও পরীক্ষার ভিত্তিতে উপসচিব পদে পদোন্নতির দাবি জানান।
তারা বলেন, যদি প্রশাসন ক্যাডার এত মেধাবী হয়, তবে পরীক্ষা দিতে ভয় কিসের?
সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও বিরোধ
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী গত ডিসেম্বর মাসে উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের কোটার হার ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার সুপারিশ করেন। পাশাপাশি পরীক্ষা নিয়ে পদোন্নতির প্রস্তাব দেন।
তবে এ সুপারিশের প্রতিবাদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন এবং শতভাগ কোটার দাবি তোলেন।
কর্মসূচির ঘোষণা
আলোচনা সভায় পরিষদের নেতারা আগামী এক মাস দেশের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ও জনতার সঙ্গে মতবিনিময়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। পরিষদের আহ্বায়ক আরিফ হোসেন বলেন, ‘যদি এই বৈষম্য অব্যাহত থাকে, তাহলে বৃহৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
পরিস্থিতি উত্তপ্ত
সভায় কর ক্যাডারের অতিরিক্ত কর কমিশনার মহিদুল ইসলাম বলেন, পৃথিবী যখন প্রফেশনালদের দিয়ে চলছে, বাংলাদেশ কেন ‘সবজান্তা সমশের’ দিয়ে চলবে?
তিনি কর ক্যাডারের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বলেন, আমরা রাজস্ব সংগ্রহ করি, অথচ আমাদের অনেকেই ভাড়া অফিসে কাজ করেন। অন্যদিকে সুবিধা নেয় প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
মেধার ভিত্তিতে প্রশাসন গড়ার আহ্বান
পরিষদের নেতারা মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সিভিল সার্ভিসের কাঠামো ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানান। তারা সরকারের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্য দূর না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
এনএমএম/এইচকে/ওএফ