ছবি : বাংলাদেশের খবর
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকদের (ইবতেদায়ি) চলমান আন্দোলন আরও তীব্র হচ্ছে।
তারা বলছেন, গতকালের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই লাঠিচার্জ করেছে। জলকামান, টিয়ারশেল এবং সাউন্ডগ্রেনেডও নিক্ষেপ করেছে। ‘এটা রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, বছরের পর বছর ধরে শিক্ষক সমাজের সঙ্গে বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন।’
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষরাও।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর শাহবাগ থানার সামনে ফের অবস্থান নিয়েছেন ইবতেদায়ি শিক্ষকরা। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তজার্তিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রুহুল আমিনও আসেন।
তিনি বলেন, ‘এখানে আমাদের শিক্ষকরা রয়েছেন। তাদের ওপর কোনো কারণ ছাড়াই কেন লাঠিচার্জ করা হলো? বর্তমান অন্তবর্তী সরকার নিরপেক্ষ সরকার। নিরপেক্ষতার মধ্যেই কেন পুলিশ আগ্রাসী মানসিকতা পোষণ করল? জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা আব্দুল হান্নান হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘রোববার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা বলেছেন, আজকের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয় একটি সিদ্ধান্ত আসবে। আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করছি। যদি আজকের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি সুরাহা না করা হয়, তাহলে সামনে আরও বড় আন্দোলনের ডাক আসতে পারে।’
আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ আল-আমিন বলেন, ‘১৯৮৪ সালে ৭৮ অর্ডিনেন্স ১৭-এর ২ ধারা মোতাবেক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে মাদ্রাসা বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করে। ওই সময় থেকে শুরু করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এনসিটিবি কর্তৃক পাঠ্যপুস্তকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকদের যোগ্যতা সমমান। ১৯৯৪ সালে একই পরিপত্রে ৫শ টাকা ভাতা প্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৩ সালে ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে ১ হাজার ৫১৯টি অনুদানভুক্ত মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ৩ হাজার ৫০০ টাকা ও সহকারী শিক্ষক ৩ হাজার ৩০০ টাকা অনুদান পায়। ৪০ বছর অনুদানভুক্ত ও অনুদানবিহীন মাদ্রাসার শিক্ষকরা বিনা বেতনে শিক্ষকতা পেশায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।’
ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় জাতীয়করণের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
এমএম/ এটিআর/এএইচএস