আয়নাঘর পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা
ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন ভুক্তভোগীরা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:২৬

রাজধানীর উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত গোপন কারাগার ও নির্যাতন কেন্দ্র ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এই পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাগণ। আরও ছিলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক তাসনিম খলিলসহ ভুক্তভোগীরা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বুধবার (১২ দুপুরে তার পৃথক ফেসবুক পোস্টে এ বিষয়ে জানান। পোস্টগুলোতে তিনি আয়নাঘর পরিদর্শনকালের ছবি ও বিডিও সংযুক্ত করেছেন।
এই পরিদর্শনের সময় গুম ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম (আরমান), হুমাম কাদের চৌধুরী ও ব্রিগেডিয়ার আব্দুল্লাহ আজমি দেখান, কীভাবে তারা বছরের পর বছর ধরে শেখ হাসিনা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর গোপন কারাগার আয়নাঘরে বন্দি ছিলেন এবং কী ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ব্যারিস্টার মীর আহমদ বিন কাসেম আরমান জানান, তাকে আটকের পর দীর্ঘ আট বছর ধরে এই গোপন কারাগারে রাখা হয়েছিল। বুধবার আয়নাঘরের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি তার অভিজ্ঞতা শোনান প্রধান উপদেষ্টাকে।
এক ভুক্তভোগী নারী জানান, যখন তাকে ও তার মাকে প্রায় এক দশক আগে শেখ হাসিনা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী অপহরণ করেছিল, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। তাদের দুজনকে একটি আয়নাঘরে বন্দি রাখা হয়। পরে তিনি ছাড়া পেলেও তার মা আর কখনো ফিরে আসেননি।
২০১৭ সালে এই আয়নাঘরে ৪৪ দিন ধরে বন্দি ছিলেন গবেষক মোবাশ্বার হাসান। আজ আয়নাঘর পরিদর্শনকালে মানবাধিকারকর্মী তাসনিম খলিল বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানী দল এই গোপন বন্দিশালাগুলোর রহস্য উন্মোচনে কাজ করে যাচ্ছে।’
পরিদর্শন শেষে আয়নাঘরের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘গুম, গোপন আটক ও নির্যাতন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এই দেশের মাটিতে আর যেন কেউ গুম-নির্যাতনের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে এই গোপন কারাগারগুলোর মাধ্যমে শত শত মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছিল। সংস্থাটির দাবি, এসব গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ সরাসরি শেখ হাসিনা নিজেই দিয়েছেন।