
সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে, বাংলাদেশে এই প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলছিল বিতর্ক। এমন পটভূমিতে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে।
তবে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কারের ব্যাপারে একমত সবপক্ষ। এই ন্যূনতম সংস্কার করার ক্ষেত্রেও সময় দরকার। প্রশ্ন হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন কতটুকু প্রস্তুত? তারা প্রস্তুতির জন্য সময়ইবা পাচ্ছে কতটা?
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে এরই মধ্যে প্রাথমিক কিছু প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে ভোট আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশনকে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ ও নির্বাচনি আইনগুলোও সংস্কার করতে হবে।
কিন্তু সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব চূড়ান্ত না হওয়ায় সীমানা নির্ধারণ, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন কিংবা নির্বাচনি আইন ও বিধানগুলো পরিবর্তনের কাজ শুরু করতে পারছে না ইসি। যে কারণে ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন আয়োজন করতেও এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে।
যদিও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, আগের আইনকে সামনে রেখেই তারা নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো সেরে রাখছেন।
বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজে এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ূর রহমান বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আগামী নির্বাচন আয়োজন করতে অনেক প্রস্তুতির দরকার। নতুন নির্বাচন কমিশনের পরামর্শে এখনই ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করার কাজগুলো এগিয়ে রেখেছি আমরা।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের মুখে পড়ে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা। যে কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর যে সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটি নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিতর্কমুক্ত রাখতে অনেকগুলো সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে সরকারের কাছে।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, আগের আইন ধরে প্রস্তুতি নেয়ার পর যদি সংস্কারের মাধ্যমে আইন ও বিধান নতুন করে ঢেলে সাজানো হয় তাহলে অনেক কিছুই নতুন করে শুরু করতে হবে।
সেক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে আগামী নির্বাচন আয়োজন করতে তাদের বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে।
এদিকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন করার বিষয়ও ভাবছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, যদি ডিসেম্বরকে সামনে রাখি তাহলে আমাদের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করতে হবে এবং সেইভাবেই আমরা এগোচ্ছি।
কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আগামী নির্বাচন প্রস্তুতি শুরু করলেও কিছু কিছু বিষয়ে এখনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। তথ্যসূত্র বিবিসি
ডিআর/এমবি