Logo

জাতীয়

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

মোজাম্মেলও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:১৪

মোজাম্মেলও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

ছবি : সংগৃহীত

এটুআই প্রকল্পে কয়েকশ কোটি টাকা লোপাট
বাংলাদেশের খবরে লিড করা হয়েছে, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্পের আওতায় কয়েকশ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অর্থ লোপাটের নেপথ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের যোগসাজশ রয়েছে। সম্প্রতি এটুআই অফিসে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে অভিযান চালায় দুদক। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেয় দুদকের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। দুদকের সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ বলেন, সরেজমিন পরিদর্শনে এটুআই প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট ১৫০-এর বেশি টেন্ডার খতিয়ে দেখা হয়েছে। 

ডিসেম্বরেই নির্বাচন দিতে চায় সরকার
প্রথম আলো লিড করেছে, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। কোনো কারণে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে নির্বাচন বড়জোর মাসখানেক পেছানো হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকার এবং প্রধান উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র থেকে জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।

এই সূত্রগুলো বলছে, আগামী ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। তবে কোনো পরিস্থিতিগত কারণে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে ভোট হবে বলে মনে করছেন সরকার-সংশ্লিষ্ট অনেকেই। কারণ, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজান শুরু হবে। রমজান ও পবিত্র ঈদুল ফিতর মিলিয়ে দেড়-দুই মাস সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে না। এরপর কালবৈশাখী ও বর্ষা মৌসুম শুরু হবে। সাধারণত বর্ষায় জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হয় না। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে সম্ভব না হলে ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, অক্টোবরের দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমি যদি খুব ভুল না করে থাকি তাহলে অক্টোবরের দিকে তফসিল ঘোষণা, ডিসেম্বরে নির্বাচন এবং জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকার গঠন হতে পারে—এমন সংকেত পাচ্ছি।’জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব। এই নির্বাচনের দিনক্ষণ তারাই ঠিক করে। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নির্বাচন কবে হবে—তা মূলত নির্ভর করছে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর। ইসি সরকারের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে তারা আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন—এমনটা ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চলতি মাসে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ কিছু রাজনৈতিক দল আলাদাভাবে ইসির সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে দলগুলো নির্বাচন প্রশ্নে তাদের অবস্থানও তুলে ধরে। বিএনপি এবং বাম জোট এ বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তারা আগে স্থানীয় নির্বাচন করার বিপক্ষে মত দিয়েছে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য কোনো সময় বেঁধে দেয়নি। তারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে। জামায়াত চায় আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন।

স্থবিরতা কাটেনি অর্থনীতির
বাংলাদেশ প্রতিদিন লিড করেছে, গণঅভ্যুথানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও দেশের অর্থনীতিতে দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি। এমনকি কমবেশি স্থবিরতা বিরাজ করছে সব খাতেই। আস্থাহীনতায় ব্যবসায়ীরা। কমেনি মূল্যস্ফীতি। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়েনি। কমেছে বেসরকারি খাতের ঋণ। সংকট কাটেনি ব্যাংকে। এমন সব মতামত বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক অনিশ্চয়তাই মূল কারণ। অন্যান্য খাতের মতো এ খাত গুরুত্ব না পাওয়ায় গতি ফেরেনি দেশের অর্থনীতিতে।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগের শাসনামলের শুরুতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। ৮৪ টাকার  ডলারের দর ১১০ টাকার বেশি।

ঋণের নামে ব্যাংকের অর্থ লুটপাট ও পাচার হয়। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩৬ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়ার আগে দেশের অর্থনীতির চিত্র মোটামুটি এমনটাই ছিল। এ কারণে দেশের অর্থনীতিকে খাদের কিনারে ফেলার অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।

মোজাম্মেলও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা
যুগান্তর লিড করেছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের তিন মেয়াদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া সনদ বাণিজ্য’ করার অভিযোগ উঠেছে। কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এক থেকে দুই কোটি টাকার বিনিময়ে ভুয়া সনদ দিয়েছেন। এভাবে তিনি প্রায় ২৫ হাজার ভুয়া সনদ বিক্রি করে হাজার কোটি টাকা নিজের পকেটে ঢুকিয়েছেন-এমন অভিযোগ ’৭১-এর সম্মুখসারির একাধিক যোদ্ধার। তাদের মতে, শুধু ভুয়া সনদ বিক্রি করেই ক্ষান্ত হননি, মুক্তিযোদ্ধার তালিকা ‘টেম্পারিং’ করে সনদ নিয়েছেন নিজেও। এ ব্যাপারে প্রায় দেড় বছর আগে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন করা হয়। ইতোমধ্যেই প্রাথমিক শুনানি শেষ হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত শুনানি হবে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ করে এবং যুগান্তরের নিজস্ব অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক কোথায় প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং যুদ্ধ করেছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এ নিয়ে তিনি নিজেও খুব বেশি বর্ণনা করেননি। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক সিনিয়র মন্ত্রী হওয়ায় এতদিন কেউ মুখ খোলেননি। তবে বিতর্কটি শুরু হয় ১৯৯৬ সালে। তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট প্রকাশ করে।

সেখানে আ.ক.ম মোজাম্মেলের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয় খোদ জাতীয় সংসদেও। এ নিয়ে ২০২৩ সালে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)-এর সদস্য ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশনের মহাসচিব খ.ম. আমীর আলী। মামলা নং ১৫১৪২। রিট মামলায় মোট সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। 

তারা হলেন-তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান (সাবেক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক), মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেট এবং প্রত্যয়ন শাখার যুগ্মসচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব, ঢাকা জেলা প্রশাসক এবং মুক্তিযুদ্ধ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব। তবে তারা সবাই জবাব না দিয়ে সময় নিয়েছেন আইনজীবীর মাধ্যমে।

মডেল মসজিদ প্রকল্পে অঢেল দুর্নীতি
আমার দেশ লিড করেছে, সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পে কমপক্ষে ৪ হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মসজিদের জন্য জায়গা অধিগ্রহণ, অবকাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য কেনাকাটায় এসব দুর্নীতি হয়েছে।

মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এ বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাট করেছেন। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমার দেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতিটি মসজিদের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে গড়ে ১৭ কোটি টাকা। তবে এলাকাভেদে ১৫ কোটি টাকা থেকে শুরু করে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে। এসব মসজিদ নির্মাণে প্রকৃত ব্যয় অর্ধেকেরও কম। বাকি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। মডেল মসজিদের দুর্নীতি ও অনিয়ম খতিয়ে দেখতে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে।

তদন্তের বিষয়ে কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন, আমাদের তদন্ত ও অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বড় এ প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করার মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সৌদি আরব। ঢাকায় অবস্থিত সৌদি দূতাবাসের মাধ্যমে তথ্য নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির তথ্য পেয়ে দেশটি এ প্রকল্পে সহায়তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে।

তিনি বলেন, প্রকল্পে এখন পর্যন্ত যতটুকু অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য পেয়েছি, সেটাকে এককথায় পুকুর ‍চুরি নয়, সাগর চুরি বলতে হবে। সরকারের রাজস্ব খাতের বিপুল পরিমাণ টাকা মসজিদ প্রকল্পের নামে এভাবে লুট করা হবে, সেটা অভাবনীয় ও অকল্পনীয়।

দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত ও নির্মাণাধীন ৫০টি মসজিদ সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, কোনো কোনো মসজিদের জন্য জমি অধিগ্রহণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা পর্যন্ত। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কিংবা পলাতক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের ঘনিষ্ঠরা গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে ঠিকাদারি কাজ নিয়ে এগুলো নির্মাণ করেছেন। জমি বিক্রির টাকার লোভে কোনো কোনো মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে শহর এলাকা থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে নির্জন এলাকায়।

জুনের মধ্যে সম্ভব স্থানীয় নির্বাচন
সমকাল লিড করেছে, আগামী জুনের মধ্যে স্থানীয় সরকারের সব স্তরে নির্বাচন করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলা পরিষদের জন্য একটি এবং পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের জন্য আরেকটি অধ্যাদেশ জারি করা যেতে পারে। প্রস্তাবিত ‘স্থানীয় সরকার কমিশন’ এপ্রিলে বিস্তারিত কাজ করলে জুনে ভোট সম্ভব। 

গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সুপারিশ গতকাল শনিবার প্রকাশ করা হয়েছে। ড. তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী অকার্যকর হয়ে পড়া স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকরে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচন একসঙ্গে আয়োজনের সুপারিশ করেছে কমিশন। এতে নির্বাচন ব্যবস্থা সহজ এবং ব্যয়সাশ্রয়ী হবে।

কমিশন স্থানীয় সরকারে সংসদীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে। মত দিয়েছে, নির্বাচন নির্দলীয় পদ্ধতিতে আয়োজনের। ইউনিয়ন পরিষদে জনসংখ্যার অনুপাতে ওয়ার্ড সংখ্যা ৯ থেকে ৩০ করার সুপারিশ করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদে ওয়ার্ডের প্রস্তাব এসেছে। বিদ্যমান প্রতি ইউনিয়নকে তিনটি ওয়ার্ডে বিভক্ত করার কথা বলা হয়েছে। উপজেলায় ওয়ার্ড সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ৩৩। প্রতি উপজেলায় জেলা পরিষদের তিন থেকে পাঁচটি ওয়ার্ড থাকবে। পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনে ওয়ার্ড সংখ্যা হবে জনসংখ্যার অনুপাতে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের দায়িত্ব সরকারের হাত থেকে নির্বাচন কমিশনে নিতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনই নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করবে।

কেউ কারও কথা শুনছে না, ভোট হলে ভালো
মানবজমিন লিড করেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছয় মাস পার করেছে। আসছে ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে এমন আশ্বাস দেয়া হয়েছে সরকারের তরফে। একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথাও বলছে সরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সন্দেহ অবিশ্বাস। পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত সাধারণ মানুষ। কি হবে, কি হচ্ছে নানা জিজ্ঞাসা। বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন চাইছে। নির্বাচন নিয়ে দলগুলোর দাবি আর সরকারের অবস্থান নিয়ে কি ভাবছে সাধারণ মানুষ। মানবজমিন তা জানার চেষ্টা করেছে। চারটি জেলার, বিভিন্ন উপজেলা, গ্রাম এবং শহর সরজমিন ঘুরে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের নানামুখী প্রতিক্রিয়া মিলেছে। বেশির ভাগ মানুষের মত যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন হবে তত পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

আবার কেউ কেউ সময় নিয়ে সংস্কারের কথাও বলেছেন। রাজনৈতিক সরকার হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে এমনটা মনে করেছেন অনেকে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পুলিশ, প্রশাসনসহ সরকারি নানা খাতে বিশৃঙ্খলার কারণে মানুষের মাঝে হতাশার চিত্র দেখা গেছে। মানুষ বলছে, কোথাও কারও নিয়ন্ত্রণ আছে বলে মনে হচ্ছে না। কেউ কারও কথা শুনছে না। 

মানুষ মনে করে ছয় মাসে সরকার প্রত্যাশা পূরণে যথেষ্ট কিছু করতে পারেনি। এভাবে চললে সামনে পরিস্থিতির খারাপ হতে পারে। এজন্য যথা সম্ভব নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হলে তারা হয়তো ভালো করতে পারে। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমও কঠোর নজরে রেখেছে সাধারণ মানুষ। তারা দলগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন করেও মতামত দিয়েছেন। বলছেন, যে পরিবর্তনের দাবিতে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন তা অর্জন করতে হলে দলগুলোর পুরনো অভ্যাস বদলাতে হবে। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। গত ছয় মাসে দলগুলো বড় কোনো আশা তৈরি করতে পারেনি। 

স্বাধীনতার পর কোনো সরকারই ভূমি সংস্কারে হাত দেয়নি
বণিক বার্তা লিড করেছে, মেক্সিকোয় বিপ্লবের (১৯১০-১৯২০) পর দেশটিতে ব্যাপক মাত্রায় ভূমি সংস্কার করা হয়। দেশটির ওই বিপ্লব ও পাল্টা বিপ্লবের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল কৃষকদের ভূমি অধিকারের দাবি আদায়। দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে এ ভূমির অধিকার নিশ্চিত করেন সেখানকার বিপ্লবীরা।

বলশেকিভ বিপ্লবের পর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে ১৯১৭ সালেই বড় ধরনের ভূমি সংস্কারে হাত দেয়া হয়। এতে বৃহৎ ভূমি মালিকদের থেকে জমি উদ্ধার করে তা স্থানীয় কৃষক ও কমিউনের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। এতে কৃষি উৎপাদনে নয়া জাগরণ সৃষ্টি হয়। এ ভূমি বণ্টনকে রাশিয়াসহ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর সবচেয়ে বড় ঐতিহাসিক সংস্কার হিসেবে দেখা হয়। এ সংস্কার রুশ সমাজের ক্ষমতার কেন্দ্রেও ভারসাম্য নিয়ে আসে। সামাজিক এলিটদের সঙ্গে উৎপাদন শৃঙ্খলে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে যুক্ত হন ভূমিহীন কৃষকরা। ইতিহাস অনুযায়ী, রাশিয়া ও মেক্সিকোয় বিপ্লব দানা বাঁধার বড় অংশজুড়ে ছিল কৃষকের ভূমি মালিকানার দাবি, যা পরবর্তী সময়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছাড়িয়ে পড়ে।

একইভাবে চীনেও কমিউনিস্ট বিপ্লবের পর ১৯৪৯-৫০ সালে ব্যাপকভিত্তিক ভূমি সংস্কার করা হয়। জমিদারদের কাছ থেকে ভূমির মালিকানা বুঝিয়ে দেয়া হয় প্রান্তিক চাষীদের, যা দেশটির গ্রামীণ কৃষি ও অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কমিউনভিত্তিক কৃষির অভিজ্ঞতা দেখার জন্য সে সময় চীনে ভিড় বাড়তে থাকে।

একই সময়ে অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরপরই বড় ধরনের ভূমি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয় দক্ষিণ কোরিয়ায়ও। এক্ষেত্রে কৃষিকাজে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখা ভূস্বামীদের কাছ থেকে জমির মালিকানা নিয়ে তা বিতরণ করা হয় প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে কার্যকরভাবেই আধা-সামন্ততান্ত্রিক ভূমি মালিকানা ব্যবস্থার বিলোপ ঘটে। একই সঙ্গে গ্রামীণ এলাকাগুলোয় বৈষম্য কমে গড়ে ওঠে সমতাভিত্তিক সামাজিক কাঠামো। বাড়ে কৃষির উৎপাদনশীলতা, যা দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিল।

ছয় মাসে ১৬ দলের জন্ম
কালের কণ্ঠ লিড করেছে, প্রস্তুতি প্রায় শেষ। কয়েক দিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের নাম। এই দলের শীর্ষ ছয়টি পদে কারা আসছেন, তা অনেকটাই চূড়ান্ত হয়েছে। সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের একাংশের উদ্যোগে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তুতিও চলছে।

দলটি গঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল। এরই মধ্যে এই দলের সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সম্পাদক পদে রয়েছেন মেজর জেনারেল (অব.) ইবনে ফজল সায়েখুজ্জামান।

এই দুই সম্ভাব্য দলের বাইরেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে ছয় মাসে ১৬টি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে।

গত বছরই আত্মপ্রকাশ করে ১১টি দল। আর চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে পাঁচটি দল আত্মপ্রকাশ করেছে। তবে এসব দলের বেশির ভাগের লক্ষ্য অস্পষ্ট। কোনো কোনো দল এখনো রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রমই শুরু করতে পারেনি।

কোনো কোনো দল অল্প কয়েকজন সদস্য নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। নতুন আত্মপ্রকাশ করা বেশির ভাগ দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, তাঁরা এখনো জানেন না দলের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে। তবে মাঠে থাকার চেষ্টা করছেন।

এটিআর/

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর