বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০১৮

নেতৃত্বের ব্যর্থতায় আন্দোলন বিফল ব্নিএনপি


রেজাউল করিম লাবলু

আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য রাজধানীকেন্দ্রিক ইউনিট সব রাজনৈতিক দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকায় নেতাকর্মীরা মাঠে নামলে তার ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের আগে-পরে বিএনপি দুই দফা আন্দোলন করলেও ঢাকা মহানগর কমিটির ব্যর্থতায় তাতে সাফল্য পায়নি দলটি। এরপর ঢাকা মহানগরকে দুই ভাগ করে কমিটি দেওয়া হয় এক বছর হতে চলল। অথচ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা আজো পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেননি। নেতৃত্বের ব্যর্থতায় থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও মাঠে নামছেন না। কোনো কোনো নেতার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগও আছে। কোনো কোনো নেতা নাকি নিজ নিজ থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলেন।

মহানগর কমিটির ব্যর্থতা বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল বাংলাদেশের খবরকে বলেন, অতীতের কমিটি নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে বর্তমান কমিটির নেতারা কমিটেড। আগামী আন্দোলনে ঢাকা মহানগর বিএনপি সফল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। থানা-পুলিশকে ম্যানেজ করে চলার বিষয়টি অস্বীকার করেন সোহেল।

বিএনপি পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ঢাকা মহানগর কমিটি ঘোষণার সময় থানা কমিটিগুলোও ঘোষণার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু মহানগর নেতাদের আপত্তির কারণে তা সম্ভব হয়নি। এখন যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারাও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।

২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল হাবিব-উন নবী খান সোহেলকে সভাপতি ও কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭০ সদস্যের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের কমিটি এবং এমএ কাইয়ুমকে সভাপতি ও আহসান উল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৬ সদস্যের ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর দীর্ঘ এক বছর হতে চললেও তারা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি। শুধু তা-ই নয়, থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোও গঠন করা হয়নি। এতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চরম হতাশ। দলে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বাড়ছে কোন্দল। ঘটছে হাতাহাতি, মারামারির ঘটনা। চেইন অব কমান্ডও ভেঙে পড়ার দশা। এই দুই কমিটি দল এবং রাষ্ট্রীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। দলীয় কর্মসূচিও তারা পালন করছে বিচ্ছিন্নভাবে।

আন্দোলনে সফলতা না আসার কারণে সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর বিএনপির এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, যখনই যাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তখনই তিনি মনে করেছেন, তাকে কেউ সরাতে পারবে না। তিনি তার মতো করে আহ্বায়ক কমিটি করেছেন। যোগ্য ব্যক্তিকে দিয়ে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করতে পারেননি। সে কারণে ঢাকার কোনো আন্দোলন সফল হয়নি। তিনি আরো বলেন, রাজধানীতে যারা রাজনীতি করেন তাদের বেশিরভাগই সুবিধাবাদী। দায়িত্ব পেয়ে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পকেট কমিটি গঠন করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধানমন্ডি থানা বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি হালনাগাদ হয়নি  ২৫ বছরে। খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর, মতিঝিলসহ একাধিক থানা ও ওয়ার্ড কমিটির বয়স ১৫ পেরিয়েছে। দীর্ঘদিন কমিটি গঠন করতে না পারার বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মহানগর বিএনপির এক নেতা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, অতীতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা রক্ত দিয়েছেন। তার মাথা ফেটে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল। কিন্তু এরপর আর কোনো নেতা রাস্তায় সেভাবে ভূমিকা রাখতে না পারায় বিএনপি আন্দোলনে সফল হতে পারছে না।

তিনি বলেন, সাদেক হোসেন খোকা দায়িত্ব পাওয়ার পর মহানগরের একাধিক থানা ও ওয়ার্ডর কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ১০-১২ বছরের মধ্যে নতুন কমিটি হয়নি। পরে দায়িত্ব পাওয়া নেতারা কিছু থানায় আহ্বায়ক কমিটি করলেও সেগুলো পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি।

মহানগর বিএনপির এক নেতা অবশ্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ২০১১ সালের ১৪ মে সাদেক হোসেন খোকাকে আহ্বায়ক ও আবদুস সালামকে সদস্যসচিব করে ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৪ সালের ১৮ জুলাই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক ও হাবিব-উন নবী খান সোহেলকে সদস্যসচিব করে ৫২ সদস্যের ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই দুই কমিটির মেয়াদে দুটি আন্দোলন হলেও তারা সফল হননি।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১