বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০১৮

ঢামেকে নিবিড় পরিচর্যায় রাজীব

প্রয়োজন হতে পারে জরুরি অস্ত্রোপচার 


দুই বাসের চাপাচাপিতে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাকে। রাজীবের জ্ঞান আছে, কোনো কথা বলছেন না।

রাজীবের মেজো খালা জাহানারা বেগম এবং মামা জাহিদুল ইসলাম হাসপাতালের বারান্দায় সময় কাটাচ্ছেন গভীর উৎকণ্ঠায়। রাজীবের চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে।  বোর্ডের  প্রধান  হাসপাতালের অর্থোপেডিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ‘রাজীবকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। সে নিজে শ্বাস নিতে পারছে। অক্সিজেন লাগানো রয়েছে। সিটি স্ক্যান পরীক্ষায় তার মাথায় আঘাত, চোখের পেছনে মস্তিষ্কে পানি ও রক্ত জমা হয়ে থাকা ধরা পড়েছে। ওষুধে এই সমস্যাগুলো দূর না হলে সে ক্ষেত্রে জরুরি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে। তার সার্বিক শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে।’

রাজীবের মেজো খালা জাহানারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাংলাদেশের খবরকে জানান, ‘আমরা চাই রাজীব বেঁচে থাকুক। যা যা করার প্রয়োজন তা জরুরিভাবে করা হোক। করা দরকার বা করতে হবে এমন কথা আমরা শুনতে চাই না। মাহারা ছেলেটা সংসারের হাল ধরবে এই ছিল সবার আশা। এমন সময় আমাদের সব স্বপ্ন শেষ করে দিল বাসচালকরা।’

জাহানারা বেগম আরো বলেন, রাজীবের মাথার পেছনে দুই জায়গায় মারাত্মক আঘাত আছে বলে চিকিৎসকরা বলেছেন। তাতে মাথার ভেতরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে শুনেছি। আমরা চাই তার দ্রুত চিকিৎসা হোক। প্রয়োজনে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হোক।

তিনি বলেন, শমরিতার চিকিৎসা ব্যয় আমরা চালাতে পারছিলাম না। এক দিনে তারা দেড় লাখ টাকা বিল করেছে। আমি ও রাজীবের ছোট খালা লিপি মানুষের কাছ থেকে ধার করে ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছি এবং ওষুধের জন্য আরো ১৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ‘বাকি টাকা পরিশোধ করব’  আমাদের কাছ থেকে এমন  লিখিত তারা  রেখেছেন। তা না হলে রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনতে  দিচ্ছিল না। বাধ্য হয়েই আমরা সরকারি হাসপাতালে এসেছি। পরিবারে মেহেদি নামের রাজীবের ১২ বছর বয়সের এক ভাই  এবং আবদুল্লাহ নামের ১১ বছর বয়সের এক ভাই রয়েছে। তারা সপ্তম শ্রেণি ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। উচ্চ রক্তচাপে  রাজীবের মা আকলিমা মারা যান।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাজীবকে দেখতে যান। মন্ত্রী জানান, ‘সরকারের পক্ষ থেকে রাজীবের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হবে এবং সুস্থ হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে তাকে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।’

পুলিশ হেফাজতে থাকা স্বজন পরিবহনের চালক ওয়াহিদ ও বিআরটিসির চালক খোরশেদের দুই দিনের রিমান্ড আজ শেষ হচ্ছে। শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল হাসান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স সঠিক ছিল না। আমরা বেশকিছু তথ্য অনুসদ্ধান করছি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই আফতাব আলী বলেন, এখন পর্যন্ত বলার মতো কিছু নেই। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি।

বিআরটিসির একটি বাসে গত মঙ্গলবার রাজীব তিতুমীর কলেজে ক্লাসে যাচ্ছিলেন। বাংলামোটর পার হয়ে সার্ক ফোয়ারার কাছাকাছি গেলে স্বাধীন পরিবহনের একটি বাস বেপরোয়া গতিতে পেছন থেকে ফাঁক দিয়ে সামনে যাওয়ার সময়  দুই বাসের চাপে রাজীবের ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১