বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০১৮

ঋণের দায়ে গর্ভের অনাগত সন্তান বিক্রি

রক্ষা পেল ইউএনওর হস্তক্ষেপে 

ঋণের দায়ে গর্ভের অনাগত সন্তান বিক্রি করল মা প্রতীকী ছবি


জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় এনজিওর ঋণের চাপে গর্ভের অনাগত সন্তানকে বিক্রি করেছিলেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা দরিদ্র এক মা। অনাগত সন্তানের দাম বাবদ ৪০ হাজার টাকা চুক্তি করে নগদ ৫ হাজার টাকা অগ্রিমও নিয়েছিলেন তিনি। খবর পেয়ে দরিদ্র ওই মায়ের বাড়িতে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাকে নগদ ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং ঋণ পরিশোধসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

জানা যায়, উপজেলার পশ্চিমপাড়ার ৪ সন্তানের জননী হতদরিদ্র রাবেয়া (৩০) বর্তমানে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম দিনমজুর। অভাবের তাড়নায় স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংক ও এনজিও আশার কাছ থেকে রাবেয়া নিজ নামে সাপ্তাহিক কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নেন। কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পেরে চাপের মুখে স্ত্রী-সন্তান ফেলে জাহাঙ্গীর নিরুদ্দেশ হন। কোনো উপায় না পেয়ে রাবেয়া সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু অন্ধ প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ বাবার পক্ষে কন্যা ও তার ৪ সন্তানের ভরণপোষণ অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই সন্তানসহ অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটতে থাকে রাবেয়ার। একদিকে অভাব অন্যদিকে কিস্তির চাপে রাবেয়া দিশেহারা হয়ে পড়েন। তাই উপায়ান্তর না পেয়ে রাবেয়া নিজের গর্ভের অনাগত সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। সন্তানের ক্রেতার কাছ থেকে সংসার চালানোর জন্য ৫ হাজার টাকা অগ্রিম নেন। অবশিষ্ট ৩৫ হাজার টাকা সন্তান প্রসব ও হস্তান্তরের সময় দেওয়ার কথা।

বকশীগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি এম শাহীন আল আমীনের মাধ্যমে এ খবর পেয়ে ইউএনও দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাবেয়ার বাড়িতে ছুটে যান। বিস্তারিত জেনে এবং পারিবারিক অবস্থা দেখে তিনি রাবেয়ার হাতে নগদ ১৫ হাজার টাকা তুলে দেন। তাছাড়া রাবেয়ার সকল ঋণ পরিশোধ, সুচিকিৎসা এবং তার সন্তানদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।

একই সময় উপজেলা মহিলাবিষয়ক সুপারভাইজার রাবেয়াকে মাতৃত্ব ভাতা বাবদ ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেন।

এ ব্যাপারে রাবেয়া বেগম বলেন, ইউএনও স্যারের সহায়তার কারণে আমি আমার পেটের সন্তানকে রক্ষা করতে পেরেছি। একজন মায়ের পক্ষে এর চেয়ে খুশির খবর আর কী হতে পারে।

ইউএনও দেওয়ান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, অভাবের তাড়নায় অনাগত সন্তান বিক্রির ঘটনা মর্মান্তিক। তাই সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে মানবিক কারণে রাবেয়ার পাশে দাঁড়িয়েছি। নিজস্ব তহবিল থেকে ১৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেছি। পরবর্তী সময়ে ভিজিডিসহ অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। এ ছাড়া সমাজের বিত্তবানরা রাবেয়ার পাশে দাঁড়ালে রাবেয়ার বর্তমান অবস্থা পাল্টে যাবে।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১