আপডেট : ০৮ অক্টোবর ২০১৮
তেঁতুলের নাম নিলেই অনেকের জিভে জল চলে আসে। তবে এ লেখাটি একটি তেঁতুলগাছকে নিয়ে। অত্যন্ত সুস্বাদু ও টক জাতের যে তেঁতুলগাছটি ডালপালা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বেশ খানিকটা জমি দখল করে রেখেছে। গাছটি আনুমানিক ২৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে রাজত্ব করছে। গাছটিকে এক পলক দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন ছুটে আসে বহু মানুষ। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ফুলদী গ্রামের বেলাই বিলপাড়ে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এই তেঁতুল গাছটি। স্থানীয়ভাবে এই গাছটিকে নিয়ে রয়েছে নানা মুখরোচক গল্প। প্রাচীন এই গাছটির নিচে প্রতিদিন নানা বয়সী মানুষ শীতল হাওয়ায় প্রাণ জুড়ায়। এর পাশেই রয়েছে ঈদগাহ, ফুলদী গাউসিয়া সুন্নিয়া মাদরাসা, ফুলদী হাফিজিয়া মাদরাসা ও ফুলদী জামে মসজিদ। দূর থেকে গাছটি দেখে কখনো মনে হতে পারে, এটি একটি বটগাছ। আবার কখনো মনে হতে পারে এটি একটি বিশাল তেঁতুল বাগান। তবে কাছে যেতেই এসব ধারণার বিপরীত চিত্র দেখা যাবে। মূলত তেঁতুল গাছ থেকেই বের হওয়া ডালগুলো চারদিকে ছড়িয়ে বিশাল আকার ধারণ করেছে। সরেজমিন দেখা গেছে, বিশাল তেঁতুল গাছটির মোটা ডালগুলো আশপাশের জমিতে ছড়িয়ে আছে। প্রতিবছর গাছটিতে তেঁতুল হয় প্রচুর পরিমাণে। তামান সরকার নামে এক সৌদি প্রবাসীর অর্থায়নে স্থানীদের সুবিধার্থে গাছটির চারপাশে ইট-বালু-সিমেন্ট দিয়ে পাকাকরণ করা হয়েছে। গরমে এই তেঁতুল গাছের নিচে বসে স্থানীয়রা বিশ্রাম নিতে পারেন অনায়াসে। পাশের ঈদগাহ মাঠে শিশু-কিশোর-তরুণরা ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত থাকে। এক দল ফিল্ডিং করলে অন্য দল ওই গাছের নিচে বিশ্রাম নেয়। ফুলদী গাউসিয়া সুন্নিয়া মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপার মাওলানা মো. বাহাউদ্দিন (৫৮) বলেন, প্রতিদিনই পুরনো ওই গাছটিকে দেখতে হেঁটে, রিকশা ও মোটরসাইকেলে করে অনেক মানুষ আসে। তবে মূল সড়ক থেকে স্পটটি একটু ভেতরে হওয়ায় এখানে কোনো দোকানপাট গড়ে ওঠেনি। তিনি জানান, ২০ বছর আগে তার চাচা শাহাজউদ্দিন সরকার ১১৫ বছর বয়সে মারা যান। আর গাছ সম্পর্কে তিনি তার ওই চাচার কাছ থেকেই শুনেছেন। তার চাচা আবার তার দাদার কাছ থেকে। এভাবেই আনুমানিক ২৫০ বছরেরও বেশি সময়কালের সাক্ষী হয়ে আছে ফুলদীর ওই তেঁতুল গাছ। তবে তিনি দাবি করেন, গাছের বয়স এর চেয়ে বেশি ছাড়া কম হবে না। গাছটির বর্তমান মালিকানা স্থানীয় ঈদগাহ কর্তৃপক্ষ। তবে গাছটি কে বা কারা রোপণ করেছেন সে সম্পর্কে কিছু বলতে না পারলেও তিনি বলেন, এক সময় পুরো এলাকাটি জঙ্গল ছিল বলে শুনেছি। তাই ধারণা করা যায়, এটি এমনিতেই জন্মেছে। তিনি আরো বলেন, ওই গাছটি নিয়ে অনেক গল্প শোনা যায়। যেমন ছোটবেলায় শুনতাম মুরুব্বিরা বলতেন, ‘সাদা পোশাক পরিহিত হয়ে দিনের বেলায় বিলের পানির ওপর দিয়ে হেঁটে গাছটির পশ্চিম পার্শ্বে কে বা কারা নামাজ আদায় করত। আর তখন সমস্ত এলাকায় ফুলের সুবাস ছড়াত।’
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১