আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০১৮
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বিএনপির কেউ জড়িত নয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য নেতাকর্মীদের জড়ানো হয়েছে। এমনকি ওয়ান-ইলেভেনে সাব জেলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বিএনপির কোনো নেতার বিরুদ্ধে বলেননি। বরং বলেছিলেন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) শহীদ নাজির উদ্দিন জেহাদের ২৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ফখরুল বলেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পরপরই বিএনপি সরকার সুষ্ঠু তদন্তের সব ব্যবস্থা নিয়েছিল এবং তৎকালীন সরকারই মুফতি হান্নানকে গ্রেফতার করেছিল। তদন্তের জন্য এফবিআই, ইন্টারপোলকে নিয়ে আসা হয়েছিল। তিনবার চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। তখন কিন্তু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি, তারেক রহমান কিংবা আবদুস সালাম পিন্টুকে জড়িয়ে কোনো কথা বলেননি। ওয়ান-ইলেভেনের পর যখন সাব জেলে ছিলেন তখনো মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে বিএনপির বিরুদ্ধে দোষারোপ করেননি, দোষারোপ করেছিলেন সেনাবাহিনীকে। ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার গতিপ্রকৃতি পাল্টে যায়’— এমন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কেয়ারটেকার সরকারের আমলেও চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। সেখানেও তারেক রহমানের নাম ছিল না। ৬১ জন সাক্ষ্য দেওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা বদল করে আবার নতুন করে তদন্ত করতে দেওয়া হলো। যাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো, তার চাকরি চলে গিয়েছিল। চাকরিতে ফিরিয়ে নিয়ে এসে তাকে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) করা হলো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুফতি হান্নানকে ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্মম অত্যাচার করা হয়। একসময় মুফতি হান্নান বলেছে রিমান্ডে তার নখগুলো তুলে ফেলা হয়েছে। অত্যাচার করে তার কাছ থেকে জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এরপর এই মামলায় তারেকের নাম নিয়ে আসা হয়। ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে’— এমন দাবি করে ফখরুল বলেন, এটা ভয়ঙ্কর একটা ঘটনা, যার একটা সুষ্ঠু তদন্ত হওয়ার দরকার ছিল। প্রকৃত আসামিদের বের করে নিয়ে এসে বিচারের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। তা না করে সরকার রাজনৈতিকভাবে পুরো বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে তারেক রহমান, আবদুস সালাম পিন্টুর মতো বিএনপি নেতাদের নাম জড়ায়। এর ফলে তারা একই রেকর্ড বাজাচ্ছে যে, এর সঙ্গে তারেক রহমান জড়িত, বিএনপি জড়িত। প্রতিটি মামলায় তারা এই কাজগুলো করেছে। তারা প্রকৃত আসামিকে না ধরে, সুষ্ঠু তদন্ত না করে মামলা ভিন্ন খাতে নিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে। এটা একটা চক্রান্ত, এই চক্রান্ত শুরু হয়েছে দীর্ঘদিন আগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে। ‘বিএনপির কেউ গ্রেনেড হামলায় জড়িত ছিল না’— এমন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেকোনো হত্যাকাণ্ডের একটা মোটিভ থাকে। সেই মোটিভটাতে লাভবান কে হয়েছে? আওয়ামী লীগ হয়েছে। এখন সেই ইস্যুকে মোটিভ করে তারা বিএনপিকে দোষারোপ করছে, বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে। সঠিকভাবে যদি তদন্ত করা হতো, তাহলে আসল সত্য বেরিয়ে আসত। এতে এটাই প্রমাণিত হয়, সরকার তারেক রহমানকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলায় জড়িয়েছে। জেহাদ স্মৃতি পরিষদের আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দীন আলম প্রমুখ।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১