বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০১৮

জীবিকার টানে মেলায় মেলায়

জীবন-জীবিকার তাগিদেই মেলায় ছবি : বাংলাদেশের খবর


বাঁশি, বল, বন্দুক, পুতুল, লেইস ফিতা, চুড়ি, চেইন, আংটি, ক্লিপসহ মাটির তৈরি বিভিন্ন প্রকার পণ্য নিয়ে বিরামহীন এক মেলা থেকে আরেক মেলায় ছুটে চলেছেন বহু নারী-পুরুষ। মূলত জীবন-জীবিকার তাগিদেই এক জেলা থেকে অন্য জেলায় তাদের এভাবে ছুটে চলা। আজ এই গ্রামে তো কাল ওই গ্রামে। মেলাকে কেন্দ্র করেই যে ঘুরছে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর ভাগ্যের চাকা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়াসহ একাধিক উপজেলায় অন্তত অর্ধশত পরিবার এই পেশায় যুক্ত বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এর মধ্যে শুধু আখাউড়ায়ই রয়েছে অন্তত ১৫টি পরিবার। তারা বহু বছর ধরে এ ব্যবসা করে আসছেন। স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দিন দিন যাতায়াত খরচ, মেলার দোকান ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের অংশ অনেক কমে গেছে। তারা জানান, বছরের বেশিরভাগ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের থাকতে হয়। মেলায় ব্যবসার মাধ্যমেই তাদের সময় চলে যায়। অন্য কাজ না থাকায় বহু বছর ধরে এ ব্যবসা ধরে রেখেছেন তারা। তাদের পরিবারগুলো অনেকটা এই ব্যবসার ওপরই নির্ভরশীল।

আখাউড়া পৌর শহরের বিভিন্ন মাজারকেন্দ্রিক বার্ষিক ওরস, বাংলা ও ইংরেজি সনের বিশেষ মাস উপলক্ষে মেলার আয়োজন হয়ে থাকে। সেসব মেলা ও আয়োজনে ছুটে যান এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। স্থানীয় লোকজনই ওইসব আয়োজনের নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দোকান তৈরি ও মালামাল সাজাতে অন্তত ৩-৪ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। প্রতিটি দোকানে ২-৪ জন লোক থাকতে হয়। কোনো কোনো স্থানে ১ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত মেলা চলে। তাই প্রতিদিনই ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। খাওয়াদাওয়া আর ঘুম ওই ছোট দোকানেই সারতে হয়। আখাউড়া পৌর শহরের খড়মপুরে সদ্য সমাপ্ত হওয়া মেলায় কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের আলেয়া বেগম, নুরজাহান বেগম, ভাদুঘরের জামশেদ, রাকিব ফকির ও আখাউড়া পৌর শহরের খড়মপুরের মর্জিনা আক্তারের সঙ্গে। তারা জানান, দেশের যেখানেই মেলা হচ্ছে সেখানেই ছুটে যান তারা। রকমারি সাজনিসহ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে তারা মেলায় দোকান নিয়ে বসেন। মেলায় দোকান মোটামুটি ভালোই চলে বলে জানান।

আলেয়া বেগম জানান, স্বামী-স্ত্রী মিলে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে মেলায় দোকান চালিয়ে আসছেন। মেলায় ব্যবসা করা কষ্ট হলেও পরিবেশ ভালো থাকলে ৩০-৩৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়। যাতায়াত, খাওয়াসহ যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে মেলায় প্রতিদিন ৩-৪ হাজার টাকা আয় হয়।

মো. জামশেদ বলেন, আজ থেকে ১৫ বছর আগে মাত্র ৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রথম মেলা ব্যবসা শুরু হয়। বর্তমানে ২ লাখ টাকার ওপর মাল রয়েছে। মেলার আয় দিয়ে এক মেয়েকে এসএসসি পাস করিয়ে বিয়ে দিয়েছি। এক ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। সালেহা খাতুন জানান, দুই মেয়ে ও মাসহ ৬ জনের সংসার। স্বল্প পুঁজি হওয়ায় মেলায় বেশি পরিমাণে মালামাল কিনতে পারি না। ব্যবসার সামান্য আয় দিয়ে সংসার চলা খুবই কষ্টকর।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১