আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০১৮
শওকত জামান, জামালপুর গ্রামের নাম বীর হাতিজা। গ্রামটির মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে জামালপুরের মেলান্দহ-ইসলামপুর উপজেলার সীমান্ত রেখা। নো-ম্যান্স ল্যান্ডে বাস করে ২৫০ পরিবারে সাত শতাধিক মানুষ। এ গ্রামের অধিকাংশই বংশ পরম্পরায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মাছ ধরার দারকি তৈরি পেশার সঙ্গে জড়িত। গ্রামটি দারকি গ্রাম নামে পরিচিতি পেয়েছে। গ্রামের প্রতিটি বাড়ি যেন দারকি তৈরির ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কারখানা। পরিবারের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সারাদিন দারকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটে তাদের। বাঁশের তৈরি এ পণ্যটি কোথাও বলে দারকি, কোথাও বাইর আবার কোনো স্থানে চাঁই। একেক এলাকায় মাছ ধরার দারকি একেক নামে পরিচিত। দারকি তৈরির নারী কারিগর মনোয়ারা বেগম (৫৫) বলেন, পুরো দারকি একজনে তৈরি করে না। একেকজন একেকটা তৈরি করে। প্রথমে বাঁশ কেটে কাঠি তৈরি, তারপর শলা, পা দিয়ে ডলা, গুনন, বুনন, গাঁথুনি, ফিটিং সবশেষে কর্নার বেঁধে দারকির পুর্ণ রূপ দেয় কারিগররা। প্রতিটি দারকি তৈরিতে খরচ হয় ১২০ টাকা, তা বাজারে বিক্রি করি ২শ’ টাকায়। অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও ফাল্গুন মাসে মাছ ধরার মৌসুমে পণ্যটির ব্যাপক চাহিদা। এখানকার তৈরি দারকি ঢাকার বিক্রমপুর, কালীগঞ্জ, টঙ্গী ও জয়দেবপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়ে থাকে। ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ ময়নাল হোসেন বলেন, প্রত্যেক পরিবারের প্রতিটি সদস্য দারকি কারিগর। জন্মের পর থেকে মা-বাবার দারকি তৈরি দেখে ৪-৫ বছর বয়সে দারকি কারিগর হয়ে ওঠে এখানকার শিশুরা। আমিও পাঁচ বছর বয়সে বাবা-মায়ের কাছে দারকি বানানো শিখেছি। ৬০ বছর ধরে দারকি তৈরি করে আসছি। খরচ বাদ দিয়ে যা লাভ হয় তা দিয়ে সংসার চলে না। কী করব, অন্য কিছু তো শিখিনি। শত অভাবের পরও বাপ-দাদার পেশাটি আঁকড়ে ধরে আছি। বাংলাদেশ কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত সহকারী ব্যবস্থাপক সম্রাট আকবর বাংলাদেশের খবরকে বলেন, পুঁজির অভাবে সঙ্কটের মুখে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দারকি তৈরির কারিগরদের সহজ শর্তে ঋণ প্রকল্পের প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। আশা করি, ঋণ প্রস্তাবনা পাস হলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পটি আরো সমৃদ্ধ হবে।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১