বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০১৮

খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন কামাল রব ও মান্নারা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি : সংরক্ষিত


বিডিআর হত্যাকাণ্ডেও বিএনপি জড়িত বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়া পরিবার খুনি পরিবার; তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়া জড়িত ছিল, খালেদা-তারেক বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত। তাদের সহযোগিতায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হয়। সেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দশ ট্রাক অস্ত্র আমদানির মামলা যার নামে সেই তারেক রহমানকে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানিয়েছে এবং তাকে নিয়ে ড. কামাল হোসেনরা জাতীয় ঐক্য বানিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন রাজনৈতিক জোট ‘জাতীয় যুক্তফ্রন্ট’ নিয়ে বলেন, বিএনপি খুনিদের দল, এরা পারে না এমন কোনো কাজ নেই; এসব খুনির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন ড. কামাল হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না এবং আ স ম আবদুর রব। গতকাল রোববার পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি দেখা ও একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ঘাটে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

গত শনিবার ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি এবং নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করে নতুন জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’। সেই জোট নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি সুযোগ পেলেই মানুষকে খুন করে। অগ্নিসন্ত্রাসে তারা কত মানুষ হত্যা করেছে। তাদের খোঁজখবর কে রাখে? আর কামাল হোসেন গং তার সঙ্গে কিছু খুচরা আধুলি মিলে ঐক্য করেছে। আমি কামাল হোসেনকে বলতে চাই, ঐক্য করেছেন কার সঙ্গে? সারাজীবন নীতির কথা বলেছেন, মানবিকতার কথা বলেছেন! আর এখন নেতা মেনেছেন কাকে?

সমাবেশে বিএনপির নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারে বন্দি। এই সময়ে কি নেতা করার জন্য বিএনপিতে আর কেউ ছিল না? সেই মানিলন্ডারিংয়ে অভিযুক্ত, চাঁদাবাজ, শাস্তিপ্রাপ্ত আসামিকেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করতে হলো। আর তাকেই নেতা মেনেছেন কামাল হোসেন গং।

বাংলাদেশের উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজ বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। সারাবিশ্ব আজ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল মনে করে। তাদের কাছে উন্নয়ন মানে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মানিলন্ডারিংয়ের উন্নয়ন। আমি কামাল হোসেনকে সাবাস জানাই, তারা নৌকা থেকে নেমে ধানের শীষের মুঠো ধরেছেন। যেখানে চিটা ছাড়া কিছু মেলে না। আসলে— রতনে রতন চেনে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং করতে গিয়ে তারেক, কোকো ধরা খেয়েছে। এমনকি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে খালেদা-তারেক জড়িত। কেননা, যে খালেদা জিয়া দুপুর ১২টার আগে ঘুম থেকে ওঠেন না তিনি সেদিন তারেকের পরামর্শে (খালেদা জিয়া) সকাল ৭টার মধ্যে আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে যান। ক্যান্টনমেন্টের বাসা থেকে পালিয়ে কোথায় গিয়েছিলেন তিনি? বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও বিএনপি-জামায়াত জড়িত।

শেখ হাসিনা বলেন, আড়িয়াল খাঁর ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিয়েছি। পদ্মার ভাঙনরোধে নদী খনন করে, নদীশাসন করে যাতে করে স্থায়ীভাবে নদী ভাঙনরোধ করা যায়, সেজন্য আমরা ডেল্টা প্ল্যান করেছি। ডিজিটাল ব্যবস্থায় লার্নিং অ্যান্ড আর্নিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে আয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষের সেবা করাই আমাদের লক্ষ্য। ২০২১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিদ্যুৎ খাতের এত উন্নয়ন করেছে, যা আগের কোনো সরকার করতে পারেনি। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশে কোনো ঘর অন্ধকারে থাকবে না। আপনারা দেখেছেন, আওয়ামী লীগই দেশের উন্নয়ন করেছে, আওয়ামী লীগই পারে দেশের উন্নয়ন করতে; আর সেটা আওয়ামী লীগই করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমরা কৃষির উন্নয়নে কৃষকদের বিনা জামানতে কৃষি ঋণ দিচ্ছি। কৃষকরা এখন ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে পারছেন। সবজি চাষে প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। দেশের মানুষ এখন ১২ মাস লাউ খান, শিম খান, সব ধরনের শাক-সবজি খান। এগুলো এমনি এমনি হয়নি। আমরা গবেষণা করে উন্নয়ন করেছি। যুব সমাজের উন্নয়নে কর্মসংস্থার ব্যাংকের মাধ্যমে বিনা জামানতে ঋণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, যাতে করে তারা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে। আমাদের লক্ষ্য, দেশের প্রতিটি মানুষের চাহিদা আমরা পূরণ করব। দেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না, কোনো মানুষ ক্ষুধার্ত থাকবে না।

মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর জোগান দেওয়ায় তার সরকার সম্ভাব্য সব কিছুই করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই মানুষ বাংলায় কথা বলার অধিকার পেয়েছে। স্বাধীনতা অর্জন করেছে, এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ। দেশের মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিল বলেই আজকে বিশাল সমুদ্রসীমা আমরা অর্জন করেছি, স্থল সীমানা চুক্তির বাস্তবায়ন হয়েছে।

তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘নৌকাই হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির পথ।’ প্রধানমন্ত্রী জনগণকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামীর নির্বাচনেও নৌকা মার্কার প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় আগামীর নির্বাচনে নৌকায় ভোট চেয়ে জনগণের ওয়াদা প্রত্যাশা করলে জনগণ তীব্র স্বরে চিৎকার করে এবং দুহাত ওপরে তুলে সমর্থন ব্যক্ত করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি ইনশা আল্লাহ আগামীতে সরকারে আসতে পারলে এই কাজ আমরা সম্পন্ন করতে পারব। সেই সঙ্গে রেল সেতুও তার সরকার করে দেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেললাইন চলে যাবে একেবারে বরিশাল হয়ে সেই পায়রাবন্দর পর্যন্ত। দক্ষিণাঞ্চলেও রেললাইন যোগ হবে, দক্ষিণাঞ্চলেরও উন্নয়ন হবে। সেই ওয়াদাও করেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কদের, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী প্রমুখ।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১