ফ্যাক্টচেক
বিএনপি নেতার গরু লুটের দায় পড়ল জামায়াত নেতার ওপর
ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩২
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি একটি ভুয়া ফটোকার্ড ভাইরাল হয়েছে। মূলধারার গণমাধ্যম যুগান্তরের ওই ফটোকার্ডে বলা হয়েছে, ঘুষের টাকা না দেওয়ায় জামায়াত নেতার নেতৃত্বে গরু লুট হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ‘ঘুষের টাকা না দেওয়ায় জামায়াত নেতার নেতৃত্বে গরু লুট’ শীর্ষক দাবিতে যুগান্তর কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং যুগান্তর প্রকাশিত ভিন্ন শিরোনামের একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া, গণমাধ্যমে জামায়াত নেতার নেতৃত্বে কৃষকের গরু লুট হওয়ার কোনো সংবাদ গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে রিউমর স্ক্যানার টিম। পর্যবেক্ষণে ফটোকার্ডটিতে যুগান্তরের লোগো খুঁজে পাওয়া যায়। তবে সেখানে ফটোকার্ডটি প্রকাশের কোনো তারিখ উল্লেখ করা হয়নি।
পরবর্তীতে আলোচিত ফটোকার্ডটির বিষয়ে অনুসন্ধানে যুগান্তরের লোগোর সূত্র ধরে গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত ফটোকার্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে ‘ঘুষের টাকা না দেওয়ায় জামাত নেতার নেতৃত্বে গরু লুট’ শীর্ষক শিরোনাম সম্বলিত কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, যুগান্তরের ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে উক্ত দাবির পক্ষে কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে গত ৪ জানুয়ারি গণমাধ্যমটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘ঘু*সের টাকা না দেওয়ায় বিএনপি নেতার নেতৃত্বে গরু লু*ট’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়।
উক্ত ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ডটির সাথে এই ফটোকার্ডটির ডিজাইনের মিল রয়েছে। তবে, আলোচিত ফটোকার্ডের শিরোনাম ও শিরোনামে ব্যবহৃত ফন্টের সাথে যুগান্তর এর ফটোকার্ডের ফন্টের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। উভয় ফটোকার্ডের ফন্টের কিছুটা মিল থাকলেও শিরোনামে ‘জামাত’ এর স্থলে ‘বিএনপি’ শীর্ষক লেখা দেখা যায়।
ফটোকার্ডটির মন্তব্য ঘর থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৩ জানুয়ারি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার টাংগাব গ্রামে শুক্রবার শামছুল ইসলাম নামে এক কৃষকের ৪টি গরু লুট হয়। সালিশ-দরবারের ঘুষের টাকা না পেয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা ইসলাম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এ গরু লুটের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
অর্থাৎ, যুগান্তরের এই ফটোকার্ডটি ডিজিটার প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনার মাধ্যমে ‘বিএনপি’ এর স্থলে ‘জামাত’ শীর্ষক শব্দটি বসিয়ে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে।
পাশাপাশি, অন্যকোনো গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্রে সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের কোনো নেতার দ্বারা কোনো স্থানে গরু লুটের বিষয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইনডিপেনডেন্ট টিভি’র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার একটি মাছের ঘেরে জাল দিয়ে মাছ লুট করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় জামায়াত নেতা আশরাজ্জমান টিপুর বিরুদ্ধে।
সুতরাং, ঘুষের টাকা না দেওয়ায় জামাত নেতার নেতৃত্বে গরু লুট শীর্ষক প্রচারিত ফটোকার্ডটি এডিটেড বা সম্পাদিত।
ওএফ