Logo

অন্যান্য

বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে

দেশের সাংবিধানিক নাম ও মূলনীতি পরিবর্তনের সুপারিশ

Icon

ডিজিটাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩৭

চার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন 

দেশের সাংবিধানিক নাম ও মূলনীতি পরিবর্তনের সুপারিশ 

বাংলাদেশের খবরের প্রথম প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী সরকারের পতন হয়। সর্বস্তর থেকে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের দাবি উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১০টি ক্ষেত্র নির্বাচন করে সংস্কার কমিশন গঠন করে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গতকাল সংবিধান, দুদক, নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশ সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব তুলে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। 

রাষ্ট্রের তিন মূলনীতি বাদ দিয়ে নতুন করে মূলনীতি প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত কমিশন। এছাড়া দেশের সাংবিধানিক নামও পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে কমিশন। 

এক ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় 

প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম শিরোনাম বলা হয়েছে, ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানোসহ সংবিধানে আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং সংসদ নেতাও হতে পারবেন না। 

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সুপারিশের সারসংক্ষেপ পরে কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। 

সংবিধানের মূলনীতি ও সংসদের কাঠামোতে পরিবর্তন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাঠামো, মৌলিক অধিকারের পরিসর বাড়ানো, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলসহ সংবিধানের নানা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। 

ধলঘাট অর্থনৈতিক অঞ্চল 

হাসিনার লুটের অংশীদারের দখলে মহেশখালীর অর্ধেক দ্বীপ 

আমার দেশ পত্রিকার প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়ন। দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর, পূর্বদিকে কোহেলিয়া নদী, উত্তরের একাংশে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কৃত্রিম চ্যানেল তৈরি করা হয়েছে। অন্য অংশে লবণের মাঠ ও চিংড়িঘের। জোয়ারে পানিতে তলিয়ে যায় এলাকাটি। ভাটায় ডাঙা দেখা গেলেও চলাচলের উপযোগী থাকে না একেবারেই। 

তবে হালে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পেছন দিয়ে তিন চাকার অটো চলাচলের জন্য একটি মেঠোপথ তৈরি করে নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুষ্ক মৌসুমে এখন স্বল্প পরিসরে অটোরিকশা চলাচল করছে। তবে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে দ্বীপের বাসিন্দাদের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এখনও নৌপথ। প্রায় দেড়শ বছর আগে জেগে ওঠা এই দ্বীপটিতে বর্তমানে ১৭ হাজার মানুষের বাস, যা এতদিন অবহেলিতি এবং একরকম লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকলেও ২০১৪ সালের পাতানো নির্বাচনে ক্ষমতা দখলের পর এই দ্বীপটিতে নজর পড়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের। 

কয়লা বিদুৎকেন্দ্রের জন্য তৈরি করা চ্যানেলে গভীর সমুদ্রবন্দর করার পরিকল্পনা প্রকাশ হলে লুটেরা সিন্ডিকেটের কাছে দামি হয়ে ওঠে অবহেলিত দ্বীপটি। দেশজুড়ে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইকোনমিক জোন) তৈরির যে উদ্যোগ নেয় পতিত সরকার, তারই একটি ধলঘাট অর্থনৈতিক অঞ্চল।

সংস্কারে নতুন বাংলাদেশের চার্টার 

কালের কণ্ঠের প্রথম সংবাদে বলা হয়েছে, সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনা করা হবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ‘জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশন’-এর মাধ্যমে এই আলোচনা হবে। এরপর তৃতীয় ধাপে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইন ও নীতি প্রণয়নের কাজ শুরু হবে। চতুর্থ ধাপে হবে বাস্তবায়ন। 

এসব প্রক্রিয়ায় তৈরি হবে নতুন বাংলাদেশের চার্টার এবং সেই চার্টারের ভিত্তিতেই দেশে আগামী এবং পরের নির্বাচনগুলোও অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বুধবার চার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বক্তব্য থেকে এই তথ্য ও প্রত্যাশা মিলেছে। 

একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, দল ও সংসদের নেতা নয় 

বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাত বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিয়েছে। এগুলো হচ্ছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের জন আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র, ক্ষমতার প্রাতিষ্ঠানিক ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, প্রধানমন্ত্রী পদের একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাস, অন্তর্বর্তী সরকার কাঠামোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব, বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, শক্তিশালী স্থানীয় সরকার প্রবর্তন ও মৌলিক অধিকারের আওতা সম্প্রসারণ, সাংবিধানিক সুরক্ষা ও বলবৎযোগ্যতা নিশ্চিতকরণ।

কমিশন জানিয়েছে, সংবিধান সংস্কার কমিশন একটি কার্যকর গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার সুনিশ্চিতকরণ এবং জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ওই সাতটি প্রধান বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে। কমিশন সুপারিশ করেছে, সংবিধানের প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ এবং ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দ ব্যবহৃত হবে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রস্তুত করতে গিয়ে প্রায় ১ লাখ মানুষের মতামত নেওয়ার কথা জানান কমিশনপ্রধান ড. আলী রীয়াজ। কমিশনের সদস্যদের পাশাপাশি ৩২ জন গবেষক এতে কাজ করেছেন।

সংবিধান সংশোধনে লাগবে গণভোট 

সমকালের প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে কাটছাঁট রোধে সংবিধান সংশোধনে গণভোট বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে। বুধবার সংবিধান সংস্কার কমিশন প্রধান উপদেষ্টার কাছে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার প্রস্তাব করে বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের যেকোনো সংশোধনীর প্রস্তাব উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হলে তা গণভোটের জন্য উপস্থাপন করা হবে। গণভোটে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তথা ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেলে সংশোধনী প্রস্তাব পাস হবে।’ 

অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন কমিশন সুপারিশ করেছে, আইনসভার নিম্নকক্ষের নাম হবে জাতীয় সংসদ এবং উচ্চকক্ষ হবে সিনেট। জাতীয় সংসদের আসন হবে ৪০০। এর মধ্যে ১০০ জন নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত হবেন। বাকি ৩০০ জন বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর ১০ শতাংশ প্রার্থী হতে হবে তরুণ। নিম্নকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলই সরকার গঠন করবে। সরকার গঠনের উচ্চকক্ষের সদস্য সংখ্যা প্রভাব ফেলবে না। 

রাজনৈতিক দল প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে উচ্চকক্ষে ১০০ জন নির্বাচিত হবেন। পাঁচজন মনোনীত হবেন রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে। উভয় কক্ষের মেয়াদ হবে চার বছর। 

সংবিধান সংস্কার কমিশনের খসড়া সুপারিশ 

মূলনীতি পরিবর্তনের প্রস্তাব 

যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যমান সংবিধানের মূল নীতিতে আমূল পরিবর্তন আনার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতিতে পরিবর্তন এনে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ এতে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র’ প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ সুপারিশ করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসাবে বাঙালি’ কমিশন এই বিধানটি বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছে। তারা বর্তমান অনুচ্ছেদ ৬(২) সংশোধন করে ‘বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাংলাদেশি বলে পরিচিত হবেন’ শব্দটি প্রতিস্থাপনের জন্য বলেছে। প্রস্তাব করা হয়েছে-একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সর্বোচ্চ দুই বার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।

এছাড়াও সংবিধানের ৭(ক), ৭(খ), ৮, ৯, ১০, ১২, ১৪১(খ), ১৪১(গ) ও ১৫০(২) অনুচ্ছেদ বিলুপ্তি এবং এ সংশ্লিষ্ট পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফশিল সংবিধানে না রাখার সুপারিশ করেছে কমিশন। 

এসবি

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর