বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
দিল্লির আশীর্বাদ পেতে যা দিয়েছে হাসিনা সরকার
ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৬
গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা আনা ও দুষ্টচক্র ভাঙার উদ্যোগ
সংস্কারে আসছে ব্যাপক পরিবর্তন
বাংলাদেশের খবরের প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের রাজনীতিকরণ ঘটেছে খুব দ্রুত। করপোরেট ক্লায়েন্টেলিজমের আধিপত্য তৈরি করেছে। রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে, গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ এবং পুরো গণমাধ্যম ব্যবস্থার স্বরূপের আমূল পরিবর্তন ঘটে। ফলে সংবাদপত্র প্রকাশ, সম্পাদকীয় নীতি এবং সাংবাদিক- কর্মচারীদের বেতন কাঠামোসহ কোনো কিছুই ঠিক থাকে না। তাই সংস্কারের মাধ্যমে দেশে স্বাধীন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায়, কাজ শুরু করে দিয়েছে সরকার।
এদিকে গণমাধ্যম সংস্কারে গত ১৮ নভেম্বর সাংবাদিক কামাল আহমেদকে প্রধান করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন' গঠন করেছে সরকার। এ কমিশন দেশের গণমাধ্যমে বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে।
বিএসএফের উসকানিতে সীমান্তে ভারতীয়দের তাণ্ডব
বাংলাদেশের খবরের দ্বিতীয় প্রধান শিরোনামে বলা হয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর সীমান্তে গাছের ডাল ও জমির গম কাটাকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশের গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বিএসএফের উসকানিতে ভারতীয়রা বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সীমান্তের চৌকা ও কিরণগঞ্জ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির মাঝামাঝি সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত উভয়পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় ভারতীয় নাগরিকদের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চৌকা সীমান্তের ওপারে ভারতের সুখদেবপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করেছিল। তখন চৌকা সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়েছিল। সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, গতকাল দুপুরে সীমান্তে শূন্যরেখার পাশে বাংলাদেশের ভেতরের জমিতে গম কাটতে গিয়েছিলেন তারা। তখন ভারতীয় নাগরিকরা এসে বাংলাদেশের ভেতরের কয়েকটি আমগাছ কেটে দেন। এ নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। ভারতীয় জনগণ ও বিএসএফ সদস্যরা সীমান্তে তাণ্ডব চালিয়েছে। ভারতীয় নাগরিকদের হাঁসুয়ার আঘাতে ও তাদের ছোড়া পাথরে কয়েকজন বাংলাদেশি আহত হন।
দেশে চারটি প্রদেশের কথা ভাবছে কমিশন
প্রথম আলোর প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, দেশের পুরোনো চারটি বিভাগকে চারটি প্রদেশ করার সুপারিশের কথা ভাবছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের ব্যবস্থাপনা প্রদেশের হাতে দেওয়ার পক্ষে এ কমিশন।
গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে সংবিধান, নির্বাচন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশনসংক্রান্ত সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা না দিলেও ওই অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা তাঁদের সম্ভাব্য কিছু সুপারিশের কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে চারটি প্রদেশ করার বিষয়টিও রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সম্ভাব্য সুপারিশগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে চারটি প্রদেশ করা। এই চার প্রদেশ হলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা।
দিল্লির আশীর্বাদ পেতে যা দিয়েছে হাসিনা সরকার
আমার দেশ পত্রিকার প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, ‘ভারতকে যা দিয়েছি, সেটি তারা সারাজীবন মনে রাখবে’ উক্তিটি শেখ হাসিনার। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে তিনি পালিয়ে আশ্রয় নেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। বর্তমানে তিনি দিল্লির সমর্থনে দেশবিরোধী নানা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তার হাতে লেগে আছে হাজারো ছাত্র-জনতার রক্ত।
স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার উপর্যুক্ত উক্তির প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক অঙ্গন, কূটনৈতিক মহল ও প্রশাসনসহ জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে-আশীর্বাদ পেতে শেখ হাসিনা ভারতকে কী কী দিয়েছেন?
দৈনিক আমার দেশের অনুসন্ধান বলছে, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকার ভারতের সঙ্গে অন্তত ২০টি চুক্তি ও ৬৬টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের অধিকাংশই একতরফাভাবে ভারতের স্বার্থরক্ষা করে সম্পাদিত হয়েছে। ফলে চুক্তিগুলো পর্যালোচনার দাবি করেছেন দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকরা।
বই সংকটে লেখাপড়া ব্যাহত
কালের কণ্ঠের প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন বছর শুরুর আগেই এক বছরের শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে এক বছরে কত দিন ক্লাস হবে, পরীক্ষা নেওয়া হবে কবে—এসবের উল্লেখ থাকে। যেসব স্কুল শিক্ষাপঞ্জির বাইরে আরো কিছু পরীক্ষা নেয়, তারাও বছরের শুরুতে সেটা ঠিক করে দেয়। কিন্তু ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও এবার এখনো বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পাঠ্যবই হাতে পায়নি।
বই নিয়ে চলছে রীতিমতো হাহাকার। এরই মধ্যে নতুন বছরের ১৮ দিন পার হলেও বই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখাও অনেকটা বন্ধ। শুরুতেই শিক্ষার্থীরা পাঠে এমন হোঁচট খাওয়ায় অভিভাবকরাও চিন্তিত।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আশা করছে, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষার্থীর হাতে সব বই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।
নির্বাচনের রোডম্যাপ কবে
বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, চারটি সংস্কার কমিটি ইতোমধ্যে সরকারের কাছে রিপোর্ট উপস্থাপন করেছে। বাকি সাতটি কমিটি এ মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে। সংস্কার নিয়ে নানা মহলে নানা আলোচনা হলেও সবার জিজ্ঞাসা নির্বাচনের রোডম্যাপ কবে। রাজনৈতিক দলগুলো সারা দেশে ইতোমধ্যে নির্বাচনি পরিবেশ তৈরিতে ব্যস্ত। সম্ভাব্য নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীরা যার যার আসনে জনসংযোগ করছেন। সরকারের ওপরও দেশি-বিদেশি চাপ দিনদিন বাড়ছে। সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে, সেই বিতর্ক ছাপিয়ে এখন আলোচনা হলো নির্বাচনের রোডম্যাপ কবে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য অন্তর্বর্তী সরকার দুই ধাপে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে চার কমিশন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বাকিগুলো এ মাসে জমা দেবে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে কোটি কোটি টাকা লুট আওয়ামী ঘনিষ্ঠদের
সমকালের প্রধান সংবাদে বলা হয়েছে, বেসরকারি অন্তত সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় দখলের পর ফোকলা করার অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের ক্ষমতা বলে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ড ভেঙে সেখানে বসানো হয় তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের। পেশিশক্তি দিয়ে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডে ঢুকে কয়েকশ কোটি টাকা লুটেছেন তারা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে লাপাত্তা দখলদাররা। এ সুযোগে কর্তৃত্ব বুঝে নিচ্ছেন পুরোনো মালিকরা। তবে বিপুল বেহাত অর্থ ফেরত নিয়ে সন্দিহান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের দায়িত্বে থাকা সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট কায়দায় বিশ্ববিদ্যালয় দখল হয়েছিল। আমরা চাই, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইন মেনে প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতাদের মাধ্যমে চলুক। ইতোমধ্যে কয়েকটির কর্তৃত্ব বুঝে পেয়েছেন মালিকরা।’ তহবিল তছরুপ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটি দুদকের তপশিলভুক্ত অপরাধ। আমাদের নজরে কিছু এলে তদন্তে তাদের কাছে পাঠাচ্ছি।’
শুধু আবাসন খাতেই ১৩৩৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ
যুক্তরাজ্যে বিশাল সাম্রাজ্য
যুগান্তরের প্রধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ-বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক মোহাম্মদ আদনান ইমাম। বিতর্কিত এনআরবিসি ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান তিনি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশে তার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক ব্যাংক থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। শেয়ারবাজারে কারসাজি করে সরিয়েছেন বিপুল অঙ্কের অর্থ। অভিযোগ আছে— শেয়ারবাজার লুট ও ব্যাংক ঋণের টাকার বড় অংশ পাচার করে যুক্তরাজ্যে গড়েছেন বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য। সেখানে বিভিন্ন খাতে কোম্পানি খুলে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। শুধু আবাসন খাতেই তার ১৩৩৯ কোটি টাকা বিনিয়োগের সরকারি তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এদিকে, তার এই অপকর্মের সঙ্গী সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি। যুক্তরাজ্যে আবাসন খাতে আদনানের স্ত্রী নাদিয়া মমিন ইমাম ও রনির স্ত্রী ইমরানা জামান চৌধুরীর যৌথ বিনিয়োগও রয়েছে। এমনকি যুক্তরাজ্যের আবাসন খাতে জাভেদের বিপুল বিনিয়োগের 'নাটের গুরু' আদনান ইমাম। যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামানের ৩৬০টি বাড়ি রয়েছে বলে বিভিন্ন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এসব বাড়ির বর্তমান বাজারমূল্য ৩ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা।
এসবি