বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার এলাকাকে ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ বা অপরাধমুক্ত হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার দৌলতপুর সীমান্তের বিপরীতে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁও সীমান্তে এ অঞ্চলের উদ্বোধন করা হয়।
৬৪ বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) ব্যাটালিয়নের কালিয়ানি বিওপি-এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, বিএসএফের মহাপরিচালক শ্রী কে কে শর্মা, যশোর জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনসহ স্থানীয় জনপ্রনিধি, সাংবাদিক এবং বিজিবি ও বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
উদ্বোধন শেষে বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক যৌথভাবে বিবৃতি দেন। তারা বলেন, ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’-এর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ যেমন- চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার, মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচার এবং অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকা- যেন সংঘটিত না হয় সে লক্ষ্যে বিজিবি ও বিএসএফ পারস্পরিক সহযোগিতা-সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি বজায় রাখবে। অপরাধ দমনে ফোর্স মাল্টিপ্লায়ার (Force Multiplier) অর্থাৎ একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে। জনগণের সহযোগিতায় সীমান্ত অপরাধে জড়িতদের এ ধরনের কর্মকা- থেকে ফিরিয়ে এনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তারা।
সীমান্তে অপরাধ দমনে ড্রোন ব্যবহার করার কথাও জানান উভয় মহাপরিচালক। এছাড়া যৌথভাবে সীমান্তে স্পিড বোট, সিসিটিভি ক্যামেরা ও বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করে অপরাধ দমন করা হবে। প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যকার সীমান্তের পুরো ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার এলাকাকেই ক্রাইম ফ্রি জোনের আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
মহাপরিচালকরা জানান, ২০১৭ সালের অক্টোবরে ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত দুই সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধের কৌশল হিসেবে ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ ঘোষণার প্রস্তাব দেন। বিএসএফ মহাপরিচালক প্রস্তাবের প্রশংসা করেন এবং এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের বেনাপোল সীমান্তের পুটখালী ও দৌলতপুর বিওপি এবং ভারতের কালিয়ানি ও ঘোনারমাঠ বিওপি-এর সীমান্ত এলাকার (বর্ডার পিলার নম্বর ১৭/১৪৩-আর থেকে ১৭/১৮১-আর পর্যন্ত) এই অঞ্চলকে পরীক্ষামূলকভাবে ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ ঘোষণা করা হল।