কোনো যুদ্ধাপরাধীকে ধানের শীষ প্রতীক দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জামায়াতেও মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু ঢাকাতেই বিএনপির ৫০-এর বেশি নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জামায়াতের প্রার্থীদের ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি কোনো যুদ্ধাপরাধীকে ধানের শীষ প্রতীক দেবে না। যদি কেউ যুদ্ধাপরাধ না করে থাকেন, তাহলে তাকে প্রতীক দিতে অসুবিধা কোথায়? জামায়াতে তো মুক্তিযোদ্ধা আছেন।
সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ একের পর এক ফাউল করছে। এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বরং ইসি সরকারের সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এভাবে চলতে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।
‘বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও হাবীব-উন-নবী খান সোহেলের মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, নির্বাচনে সবাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন না। কেউ কেউ থাকেন যারা নির্বাচন পরিচালনা, প্রার্থীদেরকে সহযোগিতা করার জন্য দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে পারছেন না। তিনি সব সময় সব নির্বাচনী এলাকায় যান ও প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও দেশের বাইরে। এখন তাদের কাজটা দলের নেতাকর্মীদেরই করতে হবে। সবাই প্রার্থী হলে কাজ করবেন কে? তাদের এই সরে যাওয়ার বিষয়টি নির্বাচনী কৌশল বলতে পারেন।
‘২০১৪ সালের মতো আরো একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে সরকার গ্রেফতার-বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে’- এমন অভিযোগ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে পদে পদে বাধার সৃষ্টি করছে সরকার। মনোনয়নপত্র দাখিল করার সময় সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া ভোলায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তার সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ফেরার পথে তাদের ওপর হামলা করেছে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ ২০-দলীয় জোট জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ছোট থেকে বড় সবাইকে মামলায় আসামি করা হচ্ছে। অনেকেই নিখোঁজ হচ্ছেন। এগুলো সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক বেলাল আহমেদ প্রমুখ।