জাতীয় পার্টির (জাপা) বনানী কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত এক নেতার কর্মী-সমর্থকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ এ ঘটনা ঘটে। এরপর অফিসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এক পর্যায়ে কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়। তবে পরবর্তীতে আবার তালা খুলে দেওয়া হয়। এদিকে মনোনয়ন না পেয়ে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন গাইবান্ধা জেলা জাপার সভাপতি আবদুর রশিদ। তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।
বনানীতে জাপা কার্যালয়ের ভেতরে হলরুমে গিয়ে দেখা যায়, মহানগর উত্তরের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা মনোনয়নবঞ্চিত নেতা শফিকুল ইসলাম সেন্টুর পক্ষে স্লোগান এবং চিৎকার করে বোতল ছুড়তে ছুড়তে অফিস ত্যাগ করেন। এ সময় পদত্যাগের ঘোষণা দেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টু। তিনি দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যও।
শফিকুল ইসলাম সেন্টু ঢাকা-১৩ আসনের মনোনয়ন না পেয়ে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জাপা থেকে প্রার্থী হতে না পেরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। সেন্টু সাংবাদিকদের বলেন, মনোনয়নের চিঠি না পেয়ে তিনি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দুই-এক দিনের মধ্যেই পদত্যাগের চিঠি দেবেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ফয়সাল চিশতী বলেন, সেন্টু কেন পদত্যাগ করবেন? আমরা দেখছি তার দাবির বিষয়ে কী করা যায়।
এদিকে ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে অফিসে তালা লাগিয়ে যার যার মতো চলে যান অফিসের কর্মীরা। এরপরই অফিসের নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করায় যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
পদত্যাগ করা আবদুর রশিদ গাইবান্ধা-২ আসনে জাপার মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। আর শফিকুল ইসলাম সেন্টু ঢাকা-১৩ আসনে জাপার মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন।
আবদুর রশিদ বলেন, গাইবান্ধা-২ আসন থেকে মনোনয়ন না পেয়ে আমি জাপা থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছি। বিএনপি থেকে মনোনয়নের চিঠিও পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমি বার বার প্রতারিত হয়েছি। আমারও তো ভবিষ্যৎ আছে। রাজনীতি করতে গিয়ে বার বার প্রতারণার শিকার না হতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এর আগে ফেনী জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও পার্টি চেয়ারম্যানের যুব-বিষয়ক উপদেষ্টা রিন্টু আনোয়ার দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।
প্রসঙ্গত, সংসদ নির্বাচনে কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশীর কাছ থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা দিয়ে মনোনয়ন না পাওয়ায় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে হাতাশা এবং তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।