বিএনপি নতুনভাবে আর কী করে দেখাবে : চরমোনাই পীর
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:২৩
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, রাজনীতির উদ্দেশ্য হলো দেশ, জাতি ও মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা। কিন্তু স্বাধীনতার পর সরকারগুলো জনগণের সে আশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এদেরকে নতুন করে দেখার আর কিছু নেই। ৫ আগস্টের পর একটি দল ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে উঠছে। বিএনপি নতুন করে আর কী দেখাবে। তারা যা করবে তা আমরা এখন তো দেখছি। ছাত্র-জনতার স্বতস্ফূর্ত অভ্যুত্থানের পর মানুষ আশার আলো দেখছে। নীতি ও আদর্শের নাম ইসলাম। যাদের কথা ও কাজে মিল আছে তাদেরকে ক্ষমতায় পাঠাতে হবে। নতুন করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেওয়া হবে না।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কাওরানবাজারস্থ ওয়াসা ভবন সংলগ্ন সড়কে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের ‘নগর সম্মেলন-২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দুইটি ইসলামী দলের সৌজন্য সাক্ষাতে অনেকের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। ৫৩ বছরে যারা দেশকে ফ্যাসিবাদ ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। তাদেরকে নতুন করে দেখার কিছু নেই। ৫ আগস্টের পর মানুষ নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। তারা ইসলামের পক্ষে একটি বাক্স চায়। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। দেশের ইসলামী ও সমমনা দলগুলোকে কীভাবে কাছে এনে একটি বৃহত্তর সমঝোতা গড়ে তোলা যায় এবং নির্বাচনে একটি বাক্স দেওয়া যায় সেটা জনগণের চাহিদা।
নগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেন, জালেম স্বৈরাচার হাসিনা সরকার দেশ ধ্বংস করেছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর দখল, বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদার হাত বদল হয়েছে। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে দুর্নীতিতে দেশ পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ভালো নীতি ও নেতার দ্বারা দেশ চালালে দেশ ভালো চলবে। পীর সাহেব চরমোনাইয়ের নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হলে মানুষ ইসলামের সুফল ভোগ করবে। মানুষ ইসলামের বিজয় চায়।
যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত জাতীয় সরকার গঠন সম্ভব। সমমনা ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি, ইসলামের আলোকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করে ইসলামের সৌন্দর্য জাতির সামনে তুল ধরতে হবে। নতুন করে ফ্যাসিবাদ তৈরির সুযোগ বন্ধ করতে হবে। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁবাদবাজী বন্ধ করে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বায়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, দেশ ও জাতিকে বিভক্তের রাজনীতি আর ফিরে আসতে দেওয়া হবে না। যারা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনের মাধ্যমে পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করছে তাদেরকেও আওয়ামী লীগের পথে হটানো হবে।
সভাপতির বক্তব্যে প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পীর সাহেব চরমোনাই নেতৃত্বে হাত পাখা প্রতীককে বিজয় করে বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের ভাত, কাপড়, বাসস্থান, চিকিৎসার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সরাসরি জড়িত থেকে কাজ করেছে। জাতিকে বিভক্ত করার চক্রান্ত করলে দেশবাসী তা রুখে দেবে।
অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, মুফতী দেলোয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা মকবুল হোসাইন, আলহাজ আনোয়ার হোসেন, মাওলানা নূরুল ইসলাম নাঈম, এম হাসমত আলী, ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, মুফতী মো. মাছউদুর রহমান, ডা. মুজিবুর রহমান, মুফতী নিজাম উদ্দীন, শরীফুল ইসলাম আরিফ, ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দীন পরশ, অ্যাডভোকেট শওকত আলী হাওলাদার, মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার অব. আমিনুল হক তালুকদার, এড. মোস্তফা মামুন মনির, মুফতী সিরাজুল ইসলাম, মুহাম্মাদ নাজমুল হাসান প্রমুখ।
সমসম্মেলন শেষে প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদকে সভাপতি ও মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলামকে সেক্রেটারি করে ২০২৫-২৬ সেশনের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ডিআর/বিএইচ