নিজস্ব প্রতিবেদক:
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম এ বিষয়ে দুটি আবেদন করেন। একটি আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এ ছাড়া অপর আবেদনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেওয়া হয়।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন আমলের সব হত্যা, গণহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, পিলখানা হত্যার বর্ণনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর।
গত ১৫ অক্টোবর নিয়োগের পর প্রথম কর্মদিবসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী এদিন ট্রাইব্যুনালে আসেন।
এ সময় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ও অন্য কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান।
গত ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনাসহ পলাতক অন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। সেই ট্রাইব্যুনাল জামায়াত-বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করা হয় এবং তা কার্যকরও হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন ঠেকাতে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায় শেখ হাসিনা সরকার। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। শেখ হাসিনার পতনের পর সরকারের দায়িত্বে আসে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দায়িত্ব গ্রহণের পরই জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত হয়।
ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েক শ মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কয়েক ডজন মানুষের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এরই মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে।