তবে কবরের পাশে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু লেখা যাবে না | ছবি : সংগৃহীত
কবর পাকা করার রীতি রাসুল (সা.)-এর যুগ ও তাঁর পরে সাহাবায়ে কেরামের যুগেও ছিলো না। তবে কবর চিহ্নিত করার রীতি ছিল। নবী কারিম (সা.)-এর যুগে কবরের বুক বরাবর স্থানটি উটের কুজের মতো সামান্য উঁচু করে দেওয়া হতো। মাথার দিকে একটি পাথর রাখা হতো কবরটি চেনার জন্য।
এজন্য চিহ্নিত রাখার জন্য কবরের পাশে নাম এবং সংক্ষিপ্ত ঠিকানা সম্বলিত ফলক লাগানোর অবকাশ থাকলেও কবর পাকা করা যাবে না। কেননা নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবর পাকা করতে নিষেধ করেছেন। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) কবরে চুনকাম করতে, কবরের ওপর গৃহ নির্মাণ করতে এবং কবরের ওপর বসতে নিষেধ করেছেন।’ (মুসলিম ৯৭০)
আর কবরে নামফলক লাগানোর অবকাশের বিষয়টি এই হাদিসে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। হজরত উসমান ইবনে মাযউন (রা.) ইন্তেকালের পর তার দাফন শেষে রাসুল (সা.) একটি পাথর তার মাথার কাছে রাখেন এবং বলেন, ‘এর দ্বারা আমার (দুধ) ভাইয়ের কবর চিহ্নিত করে রাখলাম। পরবর্তীকালে আমার পরিবারের কেউ মারা গেলে— তাকে যেন তার কাছাকাছি দাফন করতে পারি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৩২০৬)
তবে কবরের পাশে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কিছু লেখা যাবে না। এছাড়াও কবর বা কবরের আশেপাশে পাকা করা কোনোভাবেই জায়েজ নেই। (কিতাবুন নাওয়াজিল : ৬/১৩৮; আহসানুল ফাতওয়া : ৪/২০৯)
এমনকি কোরআনের আয়াত ইত্যাদি লিখে রাখাও নিষেধ। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে— রাসুল (সা.) কবর পাকা করা, তার ওপর লেখা, কবরের উপর ঘর নির্মাণ করা এবং কবর পদদলিত করা থেকে নিষেধ করেছেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১০৫২)
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় মোল্লা আলি কারি (রহ.) বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে যতটুকু লেখা প্রয়োজন তার চাইতে বেশি লেখার ক্ষেত্রে এই হাদিস প্রযোজ্য।’ (মিরকাতুল মাফাতিহ : ৪/১৬৬)
বিএইচ/