প্রকৃতির প্রতিটি ঋতু সৃষ্টির জন্য নেয়ামত। প্রত্যেক ঋতুতে সৃষ্টির জন্য কিছু সুবিধা ও অসুবিধা পরীলক্ষিত হয়। এর মাঝে অন্যতম শীতকাল। এ ঋতুতে যেমন অসংখ্য স্বস্তি ও আরামের আভাস রয়েছে, তেমনি রয়েছে হিমশীতল পরিবেশ, যা অনেকের জন্যই কষ্টদায়ক।
আর ইসলাম হচ্ছে মানুষের স্বভাব ধর্ম। এ ধর্মে কারও ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘আল্লাহ কোনো ব্যক্তির ওপর তার সাধ্যাতীত বোঝা চাপান না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৮৬) বরং ইসলামের সকল হুকুম ও বিধান মানুষের সাধ্যানুযায়ীই আরোপ করা হয়েছে। এজন্য শীতকালেও কিছু বিধি-বিধানে শিথিলতা প্রদান করেছে ইসলাম। এমনই কিছু বিধান তুলে ধরা হলো-
গরম পানির ব্যবহার
শীতকালে ঠান্ডা পানি অনেককে অসুস্থ করে তুলতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ইসলামে ঠান্ডা পানি ব্যবহারে বাধ্য করা হয়নি; বরং এক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। তবু যদি গরম পানি পাওয়া না যায় এবং ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হয়, তাতেও অনেক সওয়াব ও ফজিলতের কথা উল্লেখ আছে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, শীতকালে অজুর অঙ্গ ভালোভাবে ধৌত করা এবং পূর্ণাঙ্গ ও সুন্দরভাবে অজু সম্পন্ন করা পাপ মোচনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। (সহিহ মুসলিম)
তায়াম্মুম করা
তীব্র শীতের সময় যদি ঠান্ডা পানি ব্যবহারে রোগ বৃদ্ধি বা প্রাণনাশের আশঙ্কা থাকে এবং গরম পানি পাওয়া না যায়, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জনের সুযোগ রয়েছে। ঐতিহাসিক জাতুস সালাসিলের যুদ্ধে তীব্র শীতে সাহাবি আমর ইবনে আস (রা.) শরিয়তের এই শৈথিল্যের ওপর আমল করেন এবং তায়াম্মুমের মাধ্যমে ইমামতি করেন। (আবি দাউদ)
মোজার ওপর মাসাহ করা
শীতের দিনে অথবা সাধারণ পরিস্থিতিতেও যদি কেউ পা সরাসরি না ধুয়ে মোজার ওপর মাসাহ করতে চায়, তাহলে তা বৈধ। তবে ফকিহ আলেমগণ মোজার ওপর মাসাহ করার জন্য কয়েকটি শর্ত নির্ধারণ করেছেন। এসব শর্ত যথাযথভাবে পালন করা হলে মোজার ওপর মাসাহ করা সম্পূর্ণ বৈধ ও জায়েজ। (মুসান্নাফে আবি শাইবা)
ঘরে নামাজ আদায় করা
জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। একই সঙ্গে জামাত ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে হাদিসে কঠোর সতর্কবাণীও এসেছে। তবে ফকিহ আলেমগণ কয়েকটি বিশেষ পরিস্থিতিতে ঘরে নামাজ পড়ার অনুমতি দিয়েছেন। সেগুলোর একটি হলো- যদি শীত তীব্র হয়। প্রচণ্ড শীতে যদি ঘর থেকে বের হলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তাহলে ঘরে নামাজ পড়ার সুযোগ রয়েছে। (সহিহ বুখারি)
বিএইচ/