Logo
Logo

ধর্ম

আমির খানকে যেভাবে দাওয়াত দেন মাওলানা তারিক জামিল

Icon

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:০৮

আমির খানকে যেভাবে দাওয়াত দেন মাওলানা তারিক জামিল

গ্রাফিক্স : বাংলাদেশের খবর

আমির খান বলিউডের শীর্ষ অভিনেতাদের একজন। আর মাওলানা তারিক জামিল পাকিস্তানের একজন বিশ্বখ্যাত ইসলাম প্রচারক, আলেম ও বিশিষ্ট দাঈ। একবার পবিত্র হজের সফরে দুই অঙ্গনের এই শীর্ষ দুই ব্যক্তির সাক্ষাৎ হয়। ওই সাক্ষাতের চুম্বুকাংশ একটি বয়ানে শ্রোতাদের শুনিয়েছিলেন মাওলানা তারিক জামিল। উর্দু ভাষার বয়ানের সেই অংশটুকু ভাষান্তর করেছেন বেলায়েত হুসাইন

মাওলানা তারিক জামিল বলেন, আমির খানের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। আমি (শুরুতে) দ্বীনের বিষয়ে তাকে কিছুই বলিনি। শুধু মুহাব্বত ছিল। এখনো তার ম্যাসেজ আসে- ‘আমি জীবনে কারো কাছ থেকে প্রভাবিত হইনি; তুমিই প্রথম ব্যক্তি, যে আমার ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে।’ লেখেন আমির খান। আমি কি কোনো জাদু করেছিলাম? ছিল শুধু মুহাব্বত। মানুষকে মুহাব্বত ও ভালোবাসা দাও এবং তার নিকটবর্তী হও।

পাকিস্তানি এ আলেম আরও বলেন, আমি যখন তার কাছে গেলাম। আসলে তার কাছে যাওয়ার কোনো রাস্তা ছিল না আমার কাছে। তিনি আমাকে চিনতেন না, আমিও তাকে চিনতাম না। এজন্য সাক্ষাতের কোনো সুযোগ তৈরি হচ্ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে আল্লাহ শহীদ আফ্রিদিকে পাঠালেন। আফ্রিদির সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল। আমি আফ্রিদিকে ফোনে বললাম- ইয়ার, আমির খানের সঙ্গে আমাকে সাক্ষাৎ করিয়ে দাও। তিনি সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে দিলেন এবং বললেন, সময় মাত্র আধা ঘণ্টা।’

বিশ্ববরেণ্য এই ইসলাম প্রচারক বলেন, আমি যখন আমির খানের কাছে প্রবেশ করি, তখন তার চেহারায় গম্ভীর ভাব। মনে হচ্ছে যেন তিনি ভাবছেন- ‘মাওলানা তো এসে পড়লেন, না জানি কী কী বলেন। তুমি এগুলো কী করছো; তুমি তো হারাম কাজ করছো। নাচছো, গাইছো, শিগগির তওবা করো। নইলে এখনই তোমার জন্য দোজখের ফায়সালা হয়ে যাবে।’ এককথায়- তিনি ভয় পাচ্ছিলেন।

মাওলানা তারিক জামিল বলেন, আমি আমির খানের সাথে বৈঠক-আলোচনা শুরুই করলাম সিনেমার হালচাল নিয়ে। কিছুক্ষণ পর আমি অনুভব করলাম- গত শতাব্দীর ৬০ থেকে ৭২ সাল পর্যন্ত সিনেমা অঙ্গনের খবরাখবর আমি যতটুকু জানতাম, তার জানাশোনা ছিল এর চেয়েও কম। সুতরাং তার অঙ্গনেরই খবর আমি বেশি জানি, তাই আমি তার থেকে ওপরে উঠে গেলাম। তিনি বিস্মিত হলেন।

তিনি বলেন, সেখানে দিলীপ কুমার, রাজ কাপুর, মাহবুব ও মদন মোহনের আলোচনা হচ্ছিল। নির্ধারিত আধা ঘণ্টা তো এদের আলোচনাতেই শেষ। এরপর আমি বললাম- আমার সময় তো শেষ। এই বলে আমি খাবার টেবিলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিলাম। এ সময় তিনি বললেন, ‘না, আরও কিছুক্ষণ বসুন।’ এভাবে ৪৫-৫০ মিনিট অতিবাহিত হয়ে গেল এবং ধীরে ধীরে তার মনের ভেতর থাকা শুরুর সেই ভয় দূর হয়ে গেল।

মাওলানা তারিক জামিল বলেন, তখন আমি বললাম- ভাই, আপনি তো হজ করতে এসেছেন। যদি অনুমতি দেন, তাহলে আপনাকে আপনার নবী (সা.)-এর হজ সম্পর্কে বলতে চাই! তিনি বললেন, ‘অবশ্যই বলবেন।’। এরপর আমি শোয়া এক ঘণ্টা আলাপ করেছি। এ সময় তিনি অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে আমার কথা শুনছিলেন, কোনো নড়াচড়া করেননি।

পাকিস্তানি এ আলেম বলেন, মানুষ মুহাব্বতের জন্য পিপাসার্ত। কিন্তু আমরা শুরুতেই ফতোয়া দিয়ে দেই। দুই ঘণ্টা আলোচনার পর যখন আমি বের হই, তখন আমির খান নিচ পর্যন্ত নামলেন আমাকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য। হজ পালনের পর তাকে বললাম, আরেকবার সাক্ষাৎ হোক! আমির খান বললেন, ‘অবশ্যই।’ পরে মদিনায় আমাদের আবার সাক্ষাৎ হলো। সেখানে আমার সঙ্গে জুনায়েদ জামশেদও ছিল। সেদিনও নির্ধারিত ২ ঘণ্টার বদলে আমাদের সাক্ষাৎ হয়েছিল বিরতিহীনভাবে ৬ ঘণ্টা। এ সময় একবারের জন্যও মনে হয়নি- তিনি বিরক্ত হচ্ছেন। আমরাই বরং মিটিং শেষ করে দেই।  

বিএইচ/

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর