ছবি : সংগৃহীত
রজব আরবি সনের সপ্তম মাস। ইসলামে চারটি পবিত্র মাসের একটি হিসেবে একে গণ্য করা হয়। এ মাস আসলেই নবিজি (সা.) রমজানকে স্বাগত জানিয়ে বেশি বেশি দোয়া করতেন।
হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘যখন রজব মাস আসত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর আমলের আধিক্যতা দেখেই আমরা তা বুঝতে পারতাম।’ মহিমান্বিত এ মাসে মুমিনরাও তাদের আমল বাড়িয়ে দেন। রমজানের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনেন।
কিন্তু রজব মাসকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে কিছু কুসংস্কার প্রচলিত আছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে বড় কুসংস্কার হলো ‘শবে ইস্তেফতা’— অর্থাৎ রজব মাসের ১৫ তারিখ দিবাগত রাতে একটা বিশেষ পদ্ধতির নামাজ পড়া এবং এই রাতকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করে কিছু ইবাদত বিশেষ পদ্ধতিতে করা।
শরিয়তে এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামি স্কলার মুফতি রেজাউল করীম আবরার। শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘শবে ইস্তেফতা একটি প্রচলিত কুসংস্কার। শরিয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই। প্রখ্যাত আলেম আব্দুল হাই লখনৌ (রহ.) তার কিতাব আল আসারুল মরফুআ ফিল আখবারিল মওজুআ-তে উল্লেখ করেছেন, রজব মাসের ১৫ তারিখকে বিশেষভাবে সম্মান করা, নামাজ পড়া, রোজা রাখা— আমাদের সমাজে যেটা প্রসিদ্ধ হয়েছে, তার পক্ষে-বিপক্ষে কিছুই পাইনি। এরপর আমি তাহকিক ( রিসার্চ) করে দেখেছি, এগুলো এমন বিষয় যা কেবল কিছু সুফিদের মাঝে প্রসিদ্ধ হয়েছে। শরিয়তে এগুলোর কোনো ভিত্তি নেই।’
আবরার বলেন, ‘এ বিষয়ে ইবনু হাজার আসকালানি রাহি. (তাবয়িনুল আজব বিমা ওরাদা ফি শাহরি রজব) এবং ইমাম ইবনে রজব হাম্বলি (রাহি.) তাদের কিতাবে একইভাবে আলোচনা করেছেন। কাজেই শবে ইস্তেফতা এবং আরও যত দিন আছে, এগুলোকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করে বিশেষ কোনো আমাল করতে হলে অবশ্যই দলিল লাগবে।’
কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকতে হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে বিভিন্ন সুফিকেন্দ্রিক কিছু আমল আছে, এগুলোর কোনো ভিত্তি শরিয়তে নাই। এগুলো থেকে সকলকে বেঁচে থাকতে হবে।’
এটিআর/