আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ বাপ্পি কাতরাচ্ছেন বিছানায়
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:১২
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গাজীপুরের শ্রীপুরে মাওনা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে গুলিবিদ্ধ হন স্কুল পড়ুয়া নবম শ্রেণির ছাত্র মো. বাপ্পি (১৬)। পিঠে গুলি লাগার পর তাকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সবশেষ রাজধানীর উত্তরার ১১নং সেক্টরের লেকভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে ১৮ দিন আইসিইউতে থাকার পর অপারেশন শেষে পেটের ভেতর থেকে গুলি বের করা হয়। বর্তমানে গুলিবিদ্ধ স্থানে ও পায়ুপথে পচন ধরেছে। উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলে জানান চিকিৎসারা। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেননি। কিনতে পারছেন না প্রয়োজনীয় ওষুধ। ভাড়া বাড়ির বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি।
গুলিবিদ্ধ বাপ্পি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার তলুলী গ্রামের মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের ছেলে। তার বাবা ব্যবসা সূত্রে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় ১৮ বছর আগে আসেন। বর্তমানে তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর দক্ষিণ পাশে শতদল প্রি-ক্যাডেট স্কুল সংলগ্ন বিএনপির নেতা জহিরুল ইসলাম প্রিন্সের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
বাপ্পির মা মেঘনা কান্নাভেজা কণ্ঠে জানান, স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য আমার ছেলে প্রতিটি আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। আমি তাকে বলছি যাইছ না। কিন্তু সে লুকিয়ে লুকিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, আগস্টের ৩ তারিখ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাওনা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটি গুলি এসে তার মেরুদণ্ডে ঢুকে। গুলিটি মেরুদণ্ড দিয়ে ঢুকে পেটের ভেতরে আটকে ছিল। এখন তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে পরিবারের সদস্যরা ব্যর্থ হয়ে পড়েছে।
বাপ্পির বাবা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক জানান, চিকিৎসার জন্য অনেক চেষ্টা করা সত্ত্বেও টাকার অভাবে তার ছেলে সুস্থ হতে পারছে না। তিনি সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানাচ্ছেন।
গুলিবিদ্ধ বাপ্পি বলেন, আমি দেশের স্বার্থে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম। আমি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। এখন আমি চিকিৎসার জন্য সাহায্য চাই।
বাড়ির মালিক জহিরুল ইসলাম প্রিন্স জানান, বাপ্পি স্থানীয় সামা মডেল স্কুলের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এখন তিনি বিছানায় পড়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। টাকার জন্য চিকিৎসা করাতে পারছেন না। খবর পেয়ে আজ দুপুরে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। তাছাড়া ঘরভাড়ার বকেয়া ৭০ হাজার টাকা মাফ করে দিয়েছি।
সোহেল/এমবি