বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
সেনা অফিসারদের রক্তের মধ্যে হাসিমুখে বসেছিলেন তারা

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৬

ছবি : সংগৃহীত
বেপরোয়া অপরাধীরা
বাংলাদেশের খবরে লিড করা হয়েছে, দিন দিন ভয়ংকর হয়ে উঠছে অপরাধীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে নিত্যনতুন কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে তারা। যদিও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে মানুষের মধ্যে বড় ধরনের আশা জেগেছিল। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার সাড়ে ছয় মাসেও মানুষের সেই আশা খুব একটা পূরণ হয়নি।
চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টের মধ্যেই দেশজুড়ে ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণের মতো অপরাধ বাড়ছে। ডেভিল হান্ট নামের অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনী। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত আটকের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়েছে।
এরপরও দমন করা যাচ্ছে না সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এর মধ্যে নতুন করে দখল-চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ কোনো কোনো এলাকার মানুষ। আর এতে মানুষের মধ্যে বাড়ছে আতঙ্ক। ফলে প্রশ্নবিদ্ধও হচ্ছে সরকারের সার্বিক শাসন ব্যবস্থা। এ অবস্থায় দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। দলমত নির্বিশেষে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা না গেলে পরিস্থিতির আরও অবনতির শঙ্কা তাদের।
রাজধানীর বনশ্রীতে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। আর মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের শিকার তিন নারী। আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে মধ্যরাতে মিছিলও করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। ঘটনা সূত্র জানায়, রাজধানীর রামপুরা থানার বনশ্রী এলাকায় আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা।
অপরাধীরা বেপরোয়া, আতঙ্কে মানুষ
প্রথম আলো লিড করেছে, দেশে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অপরাধীরা। তারা মানুষকে জিম্মি করে, অস্ত্র ঠেকিয়ে, গুলি করে অথবা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে। এতে মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে নিরাপত্তাহীনতাবোধ ও আতঙ্ক।
সর্বশেষ গত রোববার রাতে রাজধানীর বনশ্রীতে বাসায় ফেরার সময় এক সোনা ব্যবসায়ীকে গুলি ও কুপিয়ে জখম করে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনার ভিডিও চিত্র ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আতঙ্ক তৈরি হয়।
শুধু বনশ্রীর ঘটনা নয়, বিগত কয়েক মাসে একের পর এক অপরাধের ঘটনা সামনে এসেছে। পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক কালে ডাকাতি ও দস্যুতার (ছিনতাই) ঘটনায় মামলা বেড়েছে। গত জানুয়ারিতে দেশে ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনায় মামলা হয়েছে ২৪২টি, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ৯৯টি বেশি (৬৯ শতাংশ)। ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনায় গত ডিসেম্বরে মামলা হয়েছে ২৩০টি, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ৯৫টি (৭০ শতাংশ) বেশি।
সব মিলিয়ে গত আগস্ট থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসে ডাকাতি ও দস্যুতার ঘটনায় মামলা হয়েছে ১ হাজার ১৪৫টি, যা ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের তুলনায় ৩৮২টি বেশি (৫০ শতাংশ)।
অপরাধ বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডাকাতি ও দস্যুতার মামলা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র সব সময় বোঝা যায় না। পুলিশ যে ঘটনাগুলোতে তাদের কাছে অভিযোগ যায় কিংবা মামলা হয়, সেগুলোই নথিবদ্ধ করে। অনেক ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী পুলিশের কাছে যান না ঝামেলার ভয়ে। থানাগুলো কখনো কখনো চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা না নিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র বা টাকা হারানোর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নেয়। অবশ্য পুলিশ বলছে, তাঁরা এখন আর মামলা নিতে অনীহা দেখায় না। এ কারণে মামলার সংখ্যা বেশি হতে পারে।
অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক তৌহিদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, অপরাধ পরিস্থিতির উন্নতির অন্যতম নির্দেশক হলো, মানুষ ঘরে–বাইরে কিংবা চলাচলে নিরাপদ বোধ করছে কি না। মানুষ এখন নিরাপদ বোধ করছে না।
আইনশৃঙ্খলার কঠিন চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশ প্রতিদিন লিড করেছে, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। কোনোভাবেই লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি এবং খুনের মতো ভয়ংকর ঘটনার। গা শিউরে ওঠা এসব ঘটনা রীতিমতো দুর্বৃত্তদের প্রতিদিনের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভয়াবহ আতঙ্ক চেপে বসেছে সারা দেশের সাধারণ মানুষের ওপর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আগাম গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পরও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এই ব্যর্থতার দায় কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না। এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হতে বাধ্য। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গতরাত থেকেই কম্বাইন্ড অপারেশন শুরু করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান পরিস্থিতিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উচিত হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সহায়তা নেওয়া। স্থানীয় ভিত্তিতে বাড়ানো উচিত ছাত্র-জনতার সম্পৃক্ততা। প্রয়োজনে তাদের নিয়েই টহল-প্যাট্রোলে যাওয়া উচিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের। স্বচ্ছতার জন্য অপারেশনগুলো ক্যামেরাবন্দি করে রাখা যেতে পারে। অন্যথায় পরিস্থিতি আরও জটিলের দিকে টার্ন নিতে পারে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করীম মল্লিক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের প্রতিটি সদস্য তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে যাচ্ছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার লোকজন পরিকল্পনা করে একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছে।
জনগণের নিরাপত্তা কোথায়
যুগান্তর লিড করেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন কোনোভাবেই সরকার সামাল দিতে পারছে না। নানাভাবে চাঁদাবাজি ছাড়াও একের পর এক লোমহর্ষক ছিনতাই, ডাকাতি ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেই চলছে। উত্তরায় প্রকাশ্যে রিকশা আরোহীকে রামদা দিয়ে কোপানো ঘটনার রেশ না কাটতেই বাসের মধ্যে তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতি ও ধর্ষণের মতো পৈশাচিক ঘটনা ঘটে ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কে। এর একদিন পর রোববার রাজধানীবাসী এক বিভীষিকাময় রাত দেখল।
মাত্র দুঘণ্টার ব্যবধানে রাত ১১টায় বনশ্রীতে বাসার সামনে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি ও ছুরিকাঘাত, মোহাম্মদপুর ও আদাবরে দুই রিকশা আরোহীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুট এবং ধানমন্ডিতে ডাকাত আতঙ্কসহ নানান ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর বাইরেও নানা স্থানে ছিনতাইকারী চক্র হানা দিয়েছে।
এসব ঘটনায় রাতেই ফুঁসে ওঠে রাতের ঢাকা। প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাতেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়াসহ জনগণকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানাতে রাত ৩টায় জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সেনা অফিসারদের রক্তের মধ্যে হাসিমুখে বসেছিলেন তারা
আমার দেশ লিড করেছে, ঢাকার নিউমার্কেট-সংলগ্ন পিলখানা গেটে ৬০ সদস্যের সেনাদল নিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সকাল ১০টা ২০ মিনিটে প্রথম পৌঁছি। কিন্তু আমাদের ঢুকতে না দিয়ে থামিয়ে দেওয়া হয়। উপর থেকে নির্দেশ আসে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে। ফায়ার ওপেন করা যাবে না। ২৫ ফেব্রুয়ারি পুরো দিন ও রাত এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি দিনশেষে গভীর রাতে আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়। অন্ধকার পিলখানায় ঢুকে দেখতে পাই এক নারকীয় দৃশ্য।
৩৯ জন শহীদ সেনা অফিসারের ডেডবডি পাই ৮ ফুট বাই ৬ ফুট গর্তে। গুলিতে এবং বেয়নেট চার্জে হত্যা ছাড়াও কয়েকজনকে গাড়ির চাকায় পিষ্ট করে মারা হয়েছে। তাদের জিহ্বা বের হয়ে আছে। ডিজি মেজর জেনারেল শাকিলের ডেডবডিতে দেখলাম পাঁচটি গুলির চিহ্ন, বেয়নেট চার্জে পেটের এক পাশের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আছে। স্যারের পরনে শুধু গেঞ্জি ও আন্ডার ওয়্যার, রক্তে লাল হয়ে আছে। ফজরের আজান হচ্ছে। ডিজির বাসভবনের সামনে গিয়ে আঁতকে উঠলাম। নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
ছিনতাই খুন লুটে ভয়ার্ত মানুষ
সমকাল লিড করেছে, মহাসড়কে বাসের ভেতরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ধর্ষণ। মধ্যরাতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে সোনাদানা ছিনতাই। দিনদুপুরে খোদ রাজধানীতে চলন্ত বাসে অস্ত্র ঠেকিয়ে লুটতরাজ। প্রান্তিক জনপদে ট্রিপল মার্ডার। বীরদর্পে দাপিয়ে বেড়ানো কিশোর গ্যাং। ‘ডেভিল হান্ট’ নামে বিশেষ অভিযানের মধ্যেও খুনোখুনি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, মব ভায়োলেন্স– এমন কোনো অপরাধ নেই, যা ঘটছে না। অপরাধের নানা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নিরাপত্তা নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে ভীতি। অভিযানের মধ্যেও অপরাধীরা যখন এমন বেপরোয়া, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে উঠেছে নানামুখী প্রশ্ন।
অপরাধ বিশ্লেষকরা বলেছেন, ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বেশি পরিচালিত হচ্ছে বলে দৃশ্যমান। অভিযানে এরই মধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল যারা, অধরা তাদের ধরা। সংঘবদ্ধ অপরাধে যারা জড়িত, তাদের মধ্যে ধারণা জন্মেছে– তারা অভিযানের ফোকাসে নেই। এ কারণে অভিযানের পূর্ণ ফল আসেনি। প্রতিদিন ঘর থেকে বেরিয়ে আবার নিরাপদে ফিরতে পারবে কিনা, অনেকের মধ্যে এমন শঙ্কা ভর করেছে। আবার ঘরে ফিরে সেখানেও ডাকাত-চোর আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে।
আতঙ্কের এক রাত
মানবজমিন লিড করেছে, রোববার রাত সাড়ে ১০টা। অন্যান্য দিনের মতো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে হেঁটে বাসায় ফিরছিলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন (৪৩)। রামপুরার বনশ্রী ডি-ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়িতে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। বনশ্রীর সি-ব্লকের ৫ নম্বর সড়কের ‘অলংকার জুয়েলার্স’- নামের প্রতিষ্ঠান থেকে রওনা দিয়ে বাসার গেটে আসার পর তাকে ঘিরে ধরে তিনটি মোটরসাইকেলে আসা সাতজন দুর্বৃত্ত। এ সময় তার সঙ্গে থাকা ১৬০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার জন্য দৃর্বৃত্তরা টানাটানি ও ধস্তাধস্তি শুরু করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুর্র্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গুলি করে তার সঙ্গে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ ও নগদ টাকা নিয়ে চলে যায়। অন্তত চারটি গুলি ও শরীরের ৬ স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত পেয়ে মারাত্মকভাবে তিনি আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বনশ্রীর ফরায়েজী হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আনোয়ারের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ঢাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় একই সময়ে এমন আরও কয়েকটি ঘটনা ঘটে রাজধানীতে।
যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। উদ্বেগ-আতঙ্কের মধ্যে মধ্যরাতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে হল থেকে বেরিয়ে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা এ দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভের পর প্রায় শেষরাতে ‘জরুরি’ সংবাদ সম্মেলনে আসেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. অব. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। যদিও এ সংবাদ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বক্তব্য ছিল না। গভীর রাতে উপদেষ্টার এই সংবাদ সম্মেলনও আতঙ্ক তৈরি করে অনেকের মধ্যে।
জানুয়ারিতে ভারত থেকে বাংলাদেশের আমদানি বেড়েছে ১৭%
বণিক বার্তা লিড করেছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয় ৮ আগস্ট। ওই সময় থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অনেকের বক্তব্যেই ভারতবিরোধিতা ও এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা উঠে এসেছে। নাগরিক পর্যায়েও ভারতীয় পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমানোর ডাক দিয়েছেন অনেকেই। যদিও দুই দেশের বাণিজ্য পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রকৃতপক্ষে পণ্য আমদানিতে ভারতের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা আরো বেড়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে ভারত থেকে আমদানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।
ভারতে অর্থবছরের হিসাব শুরু হয় এপ্রিল থেকে। দেশটির শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ ভারতীয় অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (এপ্রিল-জানুয়ারি) বিশ্বব্যাপী ভারতের পণ্য রফতানির প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যদিও এ সময় বাংলাদেশে ভারতের পণ্য রফতানি বা ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি বেড়েছে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। আর গত জানুয়ারিতে বিশ্বব্যাপী ভারতের পণ্য রফতানি সংকুচিত হয়েছে ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। যদিও একই সময়ে দেশটি থেকে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।
যদিও গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর বাংলাদেশে ভারত থেকে পণ্য আমদানি নিম্নমুখী হয়ে উঠেছিল। জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির প্রভাব পড়ে দুই দেশের বাণিজ্যে। টানা তিনদিন বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ ছিল। আগস্টে ভারত থেকে আমদানি কমেছিল ১৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া, আতঙ্কে মানুষ
কালের কণ্ঠ লিড করেছে, দেশজুড়ে একের পর এক নানা অপরাধ ঘটে চলেছে। ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি থেকে খুন, ধর্ষণও হচ্ছে অবলীলায়। সারা দেশে চলমান ‘ডেভিল হান্ট’ কর্মসূচির মধ্যেও থেমে নেই অপরাধচক্রের এসব অপকর্ম। প্রকাশ্যে, জনারণ্যেও এসব ফৌজদারি অপরাধ ঘটছে।
অপরাধীরা কাউকেই তোয়াক্কা করছে না; বরং দিনে দিনে তারাও আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অব্যাহত এমন কর্মকাণ্ডে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। অবিলম্বে তাদের জোরদার টহল ও নজরদারি শুরু হচ্ছে।
বিশেষ করে রাতের বেলা রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতেও টহল দেবে যৌথ বাহিনী। এ ছাড়া রাজধানীর প্রতিটি প্রধান সড়কে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী চেকপোস্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রয়োজনে বিজিবিকেও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। গত রবিবার রাতে রাজধানীর বনশ্রীতে গুলি করে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর ২০০ ভরি স্বর্ণ ও এক লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
এটিআর/