ক্লার্কের নজরে
শতাব্দীর সেরা ভারত-অস্ট্রেলিয়া যৌথ টেস্ট স্কোয়াড
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:০৮
ছবি : সংগৃহীত
শতাব্দীর সেরা ভারত-অস্ট্রেলিয়া যৌথ টেস্ট একাদশে জায়গা পাবেন কারা? সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে কাদের নিয়ে তৈরি হবে সেরা দল? বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির ম্যাচ চলাকালীন এবার সেই কাল্পনিক টিম বেছে নিলেন বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অজি ক্রিকেটার মাইকেল ক্লার্ক।
সম্প্রতি ‘ট্যাব’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের অনুষ্ঠানে যোগ দেন ক্লার্ক। সেখানে ভারত ও অজি ক্রিকেটারদের সম্মিলিত টেস্ট দলের ক্রিকেটারদের বেছে নেন তিনি। ২০০০ সাল থেকে মাঠে থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে এই টিম তৈরি করেছেন সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।
কাল্পনিক দল গঠন নিয়ে মুখ খুলে ক্লার্ক বলেছেন, এ ব্যাপারে কাউকে দুঃখ দিতে চান না তিনি। কাদের পক্ষে বা বিপক্ষে খেলতে তিনি পছন্দ করবেন, সেই বিচারে দল তৈরি করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরের কোনো ক্রিকেটারের প্রতিভা নিয়ে প্রশ্ন তোলার ধৃষ্টতা করছেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন সাবেক ক্যাঙারু ক্যাপ্টেন।
ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দলের ওপেনিংয়ে ডান ও বাঁ-হাতি কম্বিনেশন রাখার পক্ষপাতী ক্লার্ক। আর তাই ম্যাথু হেডেন ও বীরেন্দ্র শেবাগকে বেছে নিয়েছেন তিনি। দুই মারকুটে ব্যাটার বিশ্বের যেকোনো পিচে বড় রান করতে সক্ষম। ‘এই দুই ওপেনারের ওপর ভর করেই বড় রান করতে পারবে টিম। তাছাড়া রান তাড়া করতে নেমেও সুবিধা হবে দলের।’ অনুষ্ঠানে বলেছেন ক্লার্ক।
মিডল অর্ডারে তিন কিংবদন্তিকে রেখেছেন ক্লার্ক। তারা হলেন- রিকি পন্টিং, শচিন টেন্ডুলকার ও বিরাট কোহলি। সাবেক ক্যাঙারু ক্রিকেটারের কথায়, ‘তাদের ব্যাটিং অর্ডার হবে তিন, চার ও পাঁচ। প্রয়োজনে কোহলিকে তিনে খেলানো যেতে পারে।’
ক্লার্কের দলে ছয় নম্বর জায়গাটি পাচ্ছেন স্টিভ স্মিথ। দলে দুজন উইকেটরক্ষক রেখেছেন তিনি। তারা হলেন, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ক্লার্ক বলেছেন, ‘ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ায় হলে আমি গিলিকে উইকেটের পেছনে রাখব। আর ভারতের কোনো স্টেডিয়ামে খেলা হলে টিমে অবশ্যই থাকবেন মাহি। তার মতো ফিনিশার আমি দেখিনি।’
মাত্র একজন স্পিনারকে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার এই যৌথ টেস্ট টিমে জায়গা দিয়েছেন ক্লার্ক। টেস্টে ৭০৮টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। গড় ২৫.৪১। মোট ৩৭ বার পাঁচ উইকেট পাওয়ার রেকর্ড রয়েছে তার। সাবেক অজি ক্রিকেটারের পছন্দের সেই ঘূর্ণি বোলার হলেন শেন ওয়ার্ন। টেস্টে তার এক ইনিংসে সেরা পারফরম্যান্স হল ৭১ রানে আট উইকেট।
এছাড়া এই টিমে তিনজন পেসার জায়গা পেয়েছেন। ক্লার্কের পছন্দের সিমাররা হলেন, গ্লেন ম্যাকগ্রা, জশপ্রীত বুমরা এবং রায়ান হ্যারিস। তাদের মধ্যে রায়ান হ্যারিস মাত্র ২৭ টেস্ট খেলেছেন, নিয়েছেন মাত্র ১১৩ উইকেট। দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে দুজনকে বেছে নিয়েছেন সাবেক ক্যাঙারু অধিনায়ক। সেই তালিকায় জায়গা পেয়েছেন মিচেল জনসন এবং জহির খান।
ক্লার্ক বলেছেন, ম্যাচ কোথায় হচ্ছে তা বুঝে দ্বাদশ ব্যক্তির নাম ঠিক করা হবে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খুবই বুদ্ধি করে বল করতেন জহির। তবে অনেক সময়ে ম্যাচ জেতার জন্য অতিরিক্ত গতির প্রয়োজন হয়। আর সেই কারণে জনসনকে দলে রাখতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ক্লার্কের এই টিমের একগুচ্ছ ক্রিকেটার আইসিসি একদিনের আন্তর্জাতিক বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন। তারা হলেন- শেবাগ, হেইডেন, পন্টিং, শচিন, ধোনি, কোহলি, গিলক্রিস্ট ও ওয়ার্ন। তাদের মধ্যে আবার কোহলি, শেবাগ এবং ধোনি টি-২০ বিশ্বকাপও জিতেছেন। অধিনায়ক হিসেবে ওই ট্রফি হাতে নেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে ধোনি ও পন্টিংয়ের।
১৯৮১ সালের ২ এপ্রিল নিউ সাউথ ওয়েলসের লিভারপুলে ক্লার্কের জন্ম হয়। ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিক–দুটি ফর্ম্যাটেই জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত অজিদের টি-২০ দলের ক্যাপ্টেনও ছিলেন ক্লার্ক।
মিডল অর্ডারের ডানহাতি ব্যাটার ক্লার্ককে মাঝে মধ্যে হাত ঘোরাতেও দেখা যেত। বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনার ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালের অ্যাসেজ সিরিজের পর সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিদায় নেন তিনি। টেস্টে জাতীয় দলের জার্সিতে সাধারণত স্লিপে ফিল্ডিং করতে দেখা যেত তাকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে খেলতেন তিনি।
খেলোয়াড় জীবনে দুটি একদিনের আন্তর্জাতিক বিশ্বকাপ জেতেন ক্লার্ক। ২০০৭ এবং ২০১৫ সালে। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ২০০৬ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি। সূত্র : আনন্দবাজার