ফুটবল মাঠে বজ্রাঘাত
১১ জনের মৃত্যু হলেও কিছুই হয়নি বিপক্ষ দলের, নেপথ্যে কী?
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪০
ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং স্থানীয় লোকগাথার মিশেলে অদ্ভুত ঘটনার গল্প শোনা যায়। তবে ১৯৯৮ সালের অক্টোবর মাসে মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর কাসাই প্রদেশে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ ঘটনা আজও মানুষের মনে রয়ে গেছে।
এক ফুটবল ম্যাচ চলাকালীন বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয় এক দলের ১১ জন ফুটবলারের। ঘটনাটি ঘটে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী দল বেনা শাদি এবং বসঙ্গা-এর মধ্যে খেলার সময়। খেলাটি ছিল হাড্ডাহাড্ডি। উভয় দলই একটি করে গোল করেছিল এবং ম্যাচের ফলাফল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে ছিল। খেলার মাঝেই হঠাৎ করেই মাঠে প্রবল বজ্রপাত হয়। এতে বেনা শাদি দলের ১১ জন খেলোয়াড় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। আহত হন গ্যালারিতে বসে থাকা প্রায় ৩০ জন দর্শক। তবে অবাক করার বিষয় ছিল, প্রতিপক্ষ বসঙ্গা দলের কোনও খেলোয়াড় বা কর্মকর্তার কোনো ক্ষতি হয়নি।
কালা জাদুর অভিযোগ
এই ঘটনার পর কঙ্গোর বিভিন্ন মহলে নানারকম গুঞ্জন শুরু হয়। স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বিশ্বাস জন্মায়, প্রতিপক্ষ দলের কেউ হয়তো কালা জাদু ব্যবহার করেছিলেন। অভিযোগ ছিল, খেলায় হেরে যাওয়ার ভয়ে বসঙ্গা দলের কোনো সদস্য জাদুবিদ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন। কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসার প্রভাবশালী সংবাদপত্র ‘ল অ্যাভনির’ এই ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ১১ জন যুবক বজ্রাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন। তবে বজ্রপাতের সঠিক কারণ নিয়ে মতভেদ রয়েছে।’
জাদুবিদ্যা নিষিদ্ধ
কঙ্গো এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশগুলিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য অনেক সময় জাদুবিদ্যাকে দায়ী করা হয়। ১৯৯৮ সালের ঘটনাটিও তার ব্যতিক্রম ছিল না।তবে বিজ্ঞানমহল এই ঘটনাকে কাকতালীয় বজ্রপাত হিসেবে ব্যাখ্যা দিয়েছে। এই ঘটনা এবং এর পরবর্তী সময়ে আরও কিছু ঘটনার পর আফ্রিকার ফুটবল প্রশাসন মাঠে যেকোনো ধরনের জাদুবিদ্যা বা আচার-অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করে। খেলার সময় কোনো খেলোয়াড়কে সন্দেহজনক কিছু করতে দেখা গেলে, তাকে তাৎক্ষণিকভাবে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
লোকবিশ্বাস এখনো অটুট
কঙ্গোতে ফুটবল এবং জাদুবিদ্যা নিয়ে বিশ্বাস এখনও অটুট। ১৯৯৮ সালের ঘটনার পর আরও কয়েকবার ফুটবল ম্যাচে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই মনে করেন, এই ধরনের ঘটনাগুলি সাধারণ কাকতালীয় নয় বরং কোনো না কোনো ভাবে কালা জাদুর সঙ্গে যুক্ত।
এটিআর/