চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের বিদায়

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২২

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো গত আসরের সেমিফাইনালে খেলা বাংলাদেশ ও স্বাগতিক পাকিস্তানের।
সোমবার ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৫ উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছিল টাইগাররা। ফলে ২ ম্যাচের দুটিতেই হেরে বিদায়ের ঘণ্টা বাজল বাংলাদেশের।
অন্যদিকে, ২ ম্যাচের দুটিতে হেরে যাওয়ায় বিদায় নিতে হলো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকেও। এই জয়ে গ্রুপ থেকে ভারতকে নিয়ে সেমিফাইনালে উঠল নিউজিল্যান্ড।
পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশকে ৮ ওভারে ৪৫ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও অধিনায়ক শান্ত। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৪ বলে ২৪ রানে নিউজিল্যান্ড স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েলের শিকার হন তানজিদ।
তিন নম্বরে নেমে ১টি করে চার-ছক্কা মেরে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেও বেশি দূর যেতে পারেনি মেহেদি হাসান মিরাজ। ১৪ বলে ১৩ রান করে নিউজিল্যান্ড পেসার উইল ও’রুকের বলে আউট হন মিরাজ।
উইকেটে সেট হবার লক্ষ্যে সাবধানে খেলতে শুরু করেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তাওহিদ হৃদয়। কিন্তু এবার আর বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। ২৪ বল খেলে মাত্র ৭ রান করে ব্রেসওয়েলের দ্বিতীয় শিকার হন হৃদয়।
৯৭ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে হৃদয় ফেরার পর জোড়া আঘাত সইতে হয় বাংলাদেশকে। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ২ ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৪ রানে ব্রেসওয়েলের শিকার হন। এতে ১১৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
চাপে পড়া বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরান শান্ত ও জাকের আলি। ষষ্ঠ উইকেটে জাকেরের সাথে ৬৭ বলে ৪৫ রান যোগ করেন শান্ত।
এক প্রান্ত আগলে ৭১ বলে ওয়ানডেতে দশম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন শান্ত। হাফ-সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করার চেষ্টা করে ৭৭ রানে আউট হন টাইগার দলপতি। ও’রুকের বলে মিড উইকেটে ব্রেসওয়েলকে ক্যাচ দেন ১১০ বল খেলে ৯টি চার মারা শান্ত।
দলীয় ১৬৩ রানে শান্ত ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন জাকের, রিশাদ হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। সপ্তম উইকেটে রিশাদের সাথে ৩৫ বলে ৩৩ এবং অষ্টম উইকেটে তাসকিনকে নিয়ে ৩০ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন জাকের।
রিশাদের ২৬ ও তাসকিনের ১০ এবং জাকেরের ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৫ বলে ৪৫ রানে ভর করে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
বল হাতে নিউজিল্যান্ডের ব্রেসওয়েল ১০ ওভারে ২৬ রানে ৪ উইকেট নেন। এটিই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ব্রেসওয়েলের। এছাড়া ও’রুর্ক ৪৮ রানে ২ উইকেট নেন।
২৩৭ রানের জবাবে প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। আগের ম্যাচেই পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা ওপেনার উইল ইয়ং আজ রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন। চতুর্থ ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন আরেক পেসার নাহিদ রানা। নিউজিল্যান্ডের সেরা ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকে ৫ রানে শিকার করেন রানা।
১৫ রানে ২ উইকেট পতনের পর নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা সচল রাখেন আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়েল ও রাচিন। ৬টি চারে ৩০ রান করে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের বলে বোল্ড হন কনওয়ে।
৭২ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে কনওয়ে ফেরার পর নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথ তৈরি করেন রাচিন ও টম লাথাম। চতুর্থ উইকেটে ১৩৬ বলে ১২৯ রান যোগ করে দু’জনে। এই জুটিতেই ৯৫ বলে ওয়ানডেতে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি করেন রাচিন। অবশ্য ব্যক্তিগত ৯৩ রানে রানার বলে মিরাজের হাতে জীবন পান রাচিন।
সেঞ্চুরির পর ব্যক্তিগত ১০৫ রানে আবারও ক্যাচ দিয়ে জীবন পান রাচিন। এবার বোলার ছিলেন মুস্তাফিজ, ফিল্ডার ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। দ্বিতীয়বার জীবন পেয়ে শেষ পর্যন্ত স্পিনার রিশাদের বলে ১১২ রানে আউট হন রাচিন। ১০৫ বলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি।
রাচিন ফেরার পর রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন ৩টি চারে ৫৫ রান করা লাথাম। এ সময় ৫০ বলে ২৩ রান দরকার ছিল নিউজিল্যান্ডের। ষষ্ঠ উইকেটে ২৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে কিউইদের জয় নিশ্চিত করেন ফিলিপস ও ব্রেসওয়েল। ফিলিপস ২১ ও ব্রেসওয়েল ১১ রানে অপরাজিত থকেন।
বাংলাদেশের তাসকিন, মুস্তাফিজ, রানা ও রিশাদ ১টি করে উইকেট নেন।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।