মাইন্ড রিডিং হেডফোন। নাম শুনেই মনে হয় যেন কোনো সায়েন্স ফিকশন ছবির গল্প। একেবারে কল্পনার বাইরে মনে হলেও, প্রযুক্তির এই অগ্রগতি আমাদের চোখে এনে দিচ্ছে অবিশ্বাস্য এক বাস্তবতার ঝলক।
মনে মনে ভাবলেন আর তাই ঘটে গেল। এমন আশ্চর্যজনক ঘটনা বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। এটি কোনো সিনেমার কল্পকাহিনী নয়। মনের ভাব বুঝতে সাহায্য করবে এই হেডফোন। বোস্টন-ভিত্তিক স্টার্টআপ কোম্পানি নিউরেবল এই হেডফোন গত ৯ বছর ধরে তৈরি করার চেষ্টা করছে।
এমডব্লিউ৭৫ নিউরো নামের এই হেডফোন এমন একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যা মানুষের মস্তিষ্কের তরঙ্গ বা নিউরাল সিগন্যাল বিশ্লেষণ করে তাদের চিন্তা বুঝতে সাহায্য করে। এটি সাধারণত ইইজি সেন্সর ব্যবহার করে মস্তিষ্কের তরঙ্গ রেকর্ড করে ও সেগুলোকে একটি অ্যালগরিদমের মাধ্যমে প্রসেস করে।
শুধুমাত্র চিন্তা করেই এই ডিভাইসটি ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন, আপনি কোনো গান পরিবর্তন করতে চাইছেন, মাইন্ড রিডিং হেডফোন ব্যবহার করে কোনো কিছু স্পর্শ না করেই শুধু চিন্তার মাধ্যমে আপনি গান পরিবর্তন করতে পারবেন। তাছাড়াও গেম খেলা, কল রিসিভ এমনকি স্মার্ট ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করতেও এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
যেহেতু মনের সংকেতের মাধ্যমে আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন তাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য এটি অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শারীরিকভাবে অক্ষমরা এটি ব্যবহার করে তাদের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারবেন।
গেম খেলার জন্য এখন আর বসে বসে কি-বোর্ড অথবা ফোন চাপতে হবে না। যেভাবে চিন্তা করবেন ঐ ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তাছাড়া অফিস বা অন্যান্য কাজ মস্তিষ্কের সিগন্যালের মাধ্যমে খুব সহজেই করতে পারবেন।
কোম্পানির সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা রামসেস আলকাইদ বলেছেন, ইইজি ব্যবহার করা হয় চিকিৎসার কাজে। যেমন- এপিলেপ্সি, স্ট্রোক বা ব্রেনের কোনো সমস্যা শনাক্ত করতে। তবে নিউরেবলের মূল লক্ষ্য মানুষ যেন কাজে মনযোগ দিতে পারে কিংবা কাজের চাপ কমাতে ও ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে।
মূলত এই স্মার্ট হেডফোনগুলো হলো- আপনার মনের ফিটবিট, যা আপনার চিন্তাভাবনা বা মনের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে পারবে। আপনার নিউরো ডিজেনারেটিভ রোগের প্রথম লক্ষণ ধরতে সাহায্য করে। এটি হতে পারে নতুন ধরনের ব্রেন-রিডিং ব্যবহারযোগ্য একটি যন্ত্র।
আলকাইদের মতে, হেডফোনে ইইজি প্রযুক্তিকে ছোট করতে ১০ বছরের গবেষণা ও ৭ হাজার মানুষের তথ্য প্রয়োজন হয়েছিল।
টিএ/ওএফ